Advertisement
E-Paper

সিপিএমের মুখে সন্ত্রাস, একই নালিশ তৃণমূলে

কিছু দিন আগে প্রচারে গিয়ে তৃণমূলের সন্ত্রাসের অভিযোগ শুনছিলেন সিপিএম প্রার্থী সাইদুল হক। ওই এলাকাতেই এ বার সিপিএমের সন্ত্রাসের পাল্টা অভিযোগ শুনতে হল তৃণমূল প্রার্থী মমতাজ সঙ্ঘমিতাকে। শনিবার বড়শূলে প্রচারে গিয়েছিলেন মমতাজ সঙ্ঘমিতা। তাঁর হুড খোলা জিপ থামতেই স্থানীয় মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা শেখ মহম্মদ মিরাজ ও আরও কয়েকজন এসে বললেন, “আমরা দীর্ঘদিন ঘর ছাড়া ছিলাম। আবার সিপিএম এলাকায় যেভাবে মাথা চাড়া দিচ্ছে, সশস্ত্র হয়ে ঘোরাফেরা করছে, তাতে ভয় হচ্ছে ফের আক্রান্ত হব। ভোটটা দিতে পারব তো?”

রানা সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৪ ০২:০৩
প্রার্থীকে ঘিরে অভিযোগ।—নিজস্ব চিত্র।

প্রার্থীকে ঘিরে অভিযোগ।—নিজস্ব চিত্র।

কিছু দিন আগে প্রচারে গিয়ে তৃণমূলের সন্ত্রাসের অভিযোগ শুনছিলেন সিপিএম প্রার্থী সাইদুল হক। ওই এলাকাতেই এ বার সিপিএমের সন্ত্রাসের পাল্টা অভিযোগ শুনতে হল তৃণমূল প্রার্থী মমতাজ সঙ্ঘমিতাকে।

শনিবার বড়শূলে প্রচারে গিয়েছিলেন মমতাজ সঙ্ঘমিতা। তাঁর হুড খোলা জিপ থামতেই স্থানীয় মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা শেখ মহম্মদ মিরাজ ও আরও কয়েকজন এসে বললেন, “আমরা দীর্ঘদিন ঘর ছাড়া ছিলাম। আবার সিপিএম এলাকায় যেভাবে মাথা চাড়া দিচ্ছে, সশস্ত্র হয়ে ঘোরাফেরা করছে, তাতে ভয় হচ্ছে ফের আক্রান্ত হব। ভোটটা দিতে পারব তো?”

কিছু দিন আগে সাইদুল হকের কাছেও প্রায় একই অভিযোগ এনেছিলেন এলাকার সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, তৃণমূলের তাণ্ডবে তাঁরা পঞ্চায়েতে ভোটের সময় ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। পঞ্চায়েতে ভোটও দিতে পারেননি। এ বার লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু হতেই তৃণমূলের লোকেরা ফের শাসাচ্ছে। বলছে, ভোটর দিন বুথমুখো হলেই আর এলাকায় বসবাস করা যাবে না।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকেই বড়শূল ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূল আর সিপিএমের মধ্যে এলাকা দখল নিয়ে রেষারেষি দেখা দেয়। গত জুনের গোড়ার দিকে স্থানীয় শক্তিগড় বাজারের কাছে অবস্থিত তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। তাতে বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী আহত হন। কার্যালয় ছেড়ে পালানোয় জেলা তৃণমূলের সাধারন সম্পাদক গোলাম জার্জিস কোনওমতে প্রাণে বাঁচেন বলেও তৃণমূলের দাবি।

এই ঘটনার পরেই পুলিশ বর্ধমান বড়শূল রোডের একটি পরিত্যক্ত চালকলে থেকে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে। গ্রেফতার করা হয় সিপিএমের স্থানীয় নেতা আবেদ আলি মল্লিক-সহ সাতজনকে। সিপিএম অবশ্য ওই ঘটনাকে তৃণমূল ও পুলিশের যৌথ চক্রান্ত বলে দাবি করে। সিপিএমের বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক অমল হালদার অভিযোগ তোলেন, “আমাদের দলের নেতা ও কর্মীদের নানা ধরনের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করছে পুলিশ। তৃণমূলের ভোট লুঠের চক্রান্তে পুলিশও সামিল হয়েছে।”

তবে এ দিন বড়শূলে তৃণমূল প্রার্থী মমতাজের প্রচারে গিয়ে উল্টো ছবিই উঠে এল। এলাকায় সিপিএমের ফের মাথা চাড়া দেওয়ার অভিযোগ করলেন তৃণমূলের অনেক কর্মী সমর্থকই। তাঁদের দাবি, সিপিএম এলাকায় যেভাবে সশস্ত্র হয়ে ঘোরাফেরা করছে, তাতে ভয় হচ্ছে আমরা ফের আক্রান্ত হব। শক্তিগড় বাজারের বাসিন্দা ছবি দাসের অভিযোগ, “পঞ্চায়েত ভোটের আগে আমাদের বাড়িতে সিপিএমের লোকেরা হামলা চালাত। তবে সে বার পুলিশ এলাকায় টহল দিতে শুরু করায় বড় ধরনের গোলমাল ওরা করতে পারেনি। এ বার পুলিশ একই ভূমিকা নেবে তো?” বড়শূল ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান লতিফা বেগমও বলেন, “আমাদের উপর কম অত্যাচার করেনি সিপিএম। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ওরা এলাকায় যা সন্ত্রাস চালিয়েছে, তাতে আমাদেরই কোনঠাসা অবস্থা হয়েছিল।”

দলের কর্মী-সমর্থকদের মুখে সিপিএমের এমন সন্ত্রাসের কথা শুনে মমতাজ বলেন, “এই ঘটনার কথা তো জানতাম না। এই অভিযোগের কথা প্রশাসনকে জানাব। তাছাড়া আপনাদের এখানে তো আমাদের নেতা গোলাম জার্জিস রয়েছেন। তেমন কিছু ঘটলে গোলামভাইকে জানান। উনি আমাকে জানিয়ে দেবেন। কোনমতেই সিপিএমের সন্ত্রাস, জুলুমবাজি সহ্য করব না আমরা।”

সিপিএমের বর্ধমান সদর জোনাল কমিটির সম্পাদক মহবুব আলমের অবশ্য দাবি, “এত হাজার-হাজার মানুষ পথে বেরিয়েছেন দেখে তৃণমূলের লোকেরাই বুঝতে পারছে, লোকসভা ভোটে ওদের সন্ত্রাস আর চলবে না। তাতেই ওরা ভয় পেয়ে গিয়েছে। আসলে পঞ্চায়েত ভোটে তো ওরা লুঠপাট চালিয়ে জিতেছিল। এ বার তা হবে না। মানুষ দল বেঁধে ভোট দেবেন। তাই নিজেদের মুখরক্ষা করতেই সিপিএমের নামে সন্ত্রাসের মিথ্যা অভিযোগ করছে তৃণমূল।”

জেলা পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, বড়শূলের দিকে নজর রাখা হয়েছে। সিপিএম বা তৃণমূল, যেই হোক না কেন, কোনও গোলমাল বাধালেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় শক্তিগড় ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা এক অফিসারের কথায়, “এই এলাকায় যাতে গোলমাল না হয়, তার জন্য বিশেষ সতর্ক রয়েছি আমরা।”

shaktigarh election campaign cpm-tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy