Advertisement
E-Paper

মারমুখী তৃণমূলকে লাঠিপেটা পুলিশের

পুলিশই রুদ্রমূর্তি ধারণ করে এ বার পিটিয়ে দিল শাসক দলের বেয়াড়া কর্মীদের। সঙ্গী কমব্যাট ফোর্স। শনিবার দুপুরে মিনিট পনেরোর সেই ঝোড়ো ‘অপারেশন’-এর সাক্ষী রইল কল্যাণী মহকুমাশাসকের দফতর।

মনিরুল শেখ

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪৬
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

এত দিন মারটা জুটছিল বিরোধীদের ভাগ্যে। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব শুরু হওয়া ইস্তক ‘দলদাস’ তকমাটা কার্যত চেপে বসছিল রাজ্য পুলিশের উর্দিতে।

সেই পুলিশই রুদ্রমূর্তি ধারণ করে এ বার পিটিয়ে দিল শাসক দলের বেয়াড়া কর্মীদের। সঙ্গী কমব্যাট ফোর্স। শনিবার দুপুরে মিনিট পনেরোর সেই ঝোড়ো ‘অপারেশন’-এর সাক্ষী রইল কল্যাণী মহকুমাশাসকের দফতর।

পুলিশকে এ ভাবে হঠাৎ খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে দেখে কার্যত হতভম্ব হয়ে যায় তৃণমূলের লোকজন। হরিণঘাটার কাষ্ঠডাঙা ২ পঞ্চায়েতের তৃণমূল কর্মী শুভদীপ সাহার মতো অনেককেই আক্ষেপ করতে শোনা যায়, ‘‘আগে সিপিএমের আমলে মার খেয়েছি। এখন দল ক্ষমতায়। এখনও মার খেলাম!’’

রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে মনোনয়ন জমার শেষ দু’দিন, শনি ও সোমবার ব্লক অফিসের পাশাপাশি মহকুমাশাসকের দফতরেও পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থীরা নথি জমা করতে পারছেন। আগে শুধু জেলা পরিষদের প্রার্থীদের মনোনয়ন সেখানে নেওয়া হত।

বিরোধীরা এই সুযোগটা কাজে লাগাবে, প্রত্যাশিতই ছিল।
কেননা তুলনায় প্রান্তিক ব্লক অফিসের চেয়ে মহকুমাশাসকের দফতরে গন্ডগোল পাকানোটা শক্ত। শনিবার তৃণমূলের লোকজন গুছিয়ে মাঠে নামার আগেই বিজেপি চাকদহ ব্লকের ৬৫টি এবং হরিণঘাটার ৮৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মনোনয়ন জমা করে দেয়।

এর পরেই টনক নড়ে তৃণমূলের। বিভিন্ন এলাকা থেকে দলের কর্মীরা এসে ভিড় জমান। কল্যাণী শহরে ঢোকার বিভিন্ন রাস্তাতেও বিরোধীদের বাধা দেওয়া হতে থাকে। দুপুর ১টা নাগাদ শিল্পাঞ্চল রেলস্টেশনের কাছে এক বিজেপি সমর্থককে রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়।

মহকুমাশাসকের দফতরের বাইরে থেকেও বিরোধী প্রার্থীদের হুমকি দেওয়া হতে থাকে— ‘পুলিশ কতক্ষণ আগলে রাখবে? বাইরে বেরোলেই মারব!’ দুপুর সওয়া ৩টে নাগাদ বেশ কিছু বহিরাগত যুবক ভিতরে ঢুকে পড়ে। বাইরে ভিড়ের মধ্যে থেকে কিছু যুবক পুলিশের উদ্দেশে গালিগালাজ করতে থাকে।

এর পরেই পুলিশের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে। হঠাৎই ফাইবার আর বাঁশের লাঠি উঁচিয়ে রে-রে করে তেড়ে আসে কল্যাণী থানার পুলিশ এবং কমব্যাট ফোর্স। ভিড় ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পিছু ধাওয়া করে পুলিশ। হরিণঘাটা ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক চিত্ত দাসের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে তিনি অনেক দূরে ছিলেন। তবে পুলিশ একটু ‘বাড়াবাড়িই’ করেছে বলে জেলা তৃণমূলের এক নেতা মনে করছেন।

নদিয়ার পুলিশ সুপার সন্তোষ পান্ডে বলেন, ‘‘আমার তো নির্দেশই রয়েছে, ঝামেলা হলেই পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’’ আর, জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের বক্তব্য, ‘‘আমাদের কর্মীদের মারধরের প্রতিবাদ করছি। কিন্তু পুলিশ যে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করছে, সেটাই প্রমাণ হয়ে গেল!’’

West Bengal Panchayat Elections 2018 Panchayat Poll Violence TMC Clash
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy