Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

৩০শে প্রকাশ্যে আসছেন না গুরুঙ্গ

শনিবার দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির মাধ্যমে তিনি জানিয়ে দিলেন, ৩০ তারিখ জনসমক্ষে আসার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২৫
Share: Save:

দু’সপ্তাহ আগে ঘটা করে অডিও-বার্তা দিয়ে জানিয়েছিলেন, ৩০ অক্টোবর দার্জিলিং পাহাড়ে আত্মপ্রকাশ করবেন তিনি। কিন্তু ঘরে-বাইরে প্রবল চাপ ও জনসমর্থন তলানিতে ঠেকার আশঙ্কা করে এই মুহূর্তে আর সেই পথে পা বাড়াচ্ছেন না ফেরার মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। শনিবার দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির মাধ্যমে তিনি জানিয়ে দিলেন, ৩০ তারিখ জনসমক্ষে আসার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন তিনি।

এক বিবৃতিতে রোশনের দাবি, ‘‘আমাদের কাছে খবর আছে, শীঘ্রই কেন্দ্র পাহাড় নিয়ে আলোচনার দিন ঘোষণা করবে। এখন দলের সভাপতি পাহাড়ে গেলে আলোচনার পরিবেশ বিপর্যস্ত হতে পারে।’’ কী ভাবে? ফেরার রোশনের দাবি, গুরুঙ্গ প্রকাশ্যে এলে আসন্ন আলোচনা বেলাইন করে দেওয়ার সুযোগ পেয়ে যাবে রাজ্য। তাই গুরুঙ্গকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এখনই আত্মপ্রকাশ না করার। কিন্তু কে পরামর্শ দিয়েছে, এই নিয়ে কিছু বলেননি রোশন। তাঁর কথার সূত্র ধরে মোর্চার কট্টরপন্থীরা জানাচ্ছেন, গুরুঙ্গ প্রকাশ্যে এলে রাজ্য তাঁকে গ্রেফতারের চেষ্টা করবে। আর তিনি গ্রেফতার হয়ে গেলে কট্টরপন্থীদের তরফে সওয়াল করার কোনও জায়গাই থাকবে না।

কিন্তু সেটাই কি একমাত্র কারণ? প্রশাসনিক কর্তাদের বক্তব্য, দীর্ঘ বন্‌ধ, হিংসাত্মক কাজকর্মের পরে জনজীবন স্বাভাবিক হয়েছে। বিনয় তামাঙ্গদের কেয়ারটেকার বোর্ডও জোরকদমে কাজে নেমেছে। এই অবস্থায় যদি গুরুঙ্গ বা কট্টরপন্থীরা ফের পাহাড়কে অশান্ত করার চেষ্টা করলে মানুষই তা মেনে নেবে না। রাজ্য সরকারের এক শীর্ষ কর্তা জানান, ফের পাহাড়ে ফিরে অশান্তির চেষ্টা করলে জনরোষের মুখে পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে গুরুঙ্গ-শিবির। বরুণ ভুজেলের মৃত্যুকে অস্ত্র করে সম্প্রতি বন্‌ধের ডাক দিয়েছিলেন গুরুঙ্গ। তাতে সাড়া না মেলাতেই সম্ভবত টনক নড়েছে।

বিনয় শিবিরের বক্তব্য, যে বরুণ ভুজেলের মৃত্যুকে অস্ত্র করতে চাইছিলেন গুরুঙ্গ, তিনি কালিম্পঙের কাউন্সিলর ছিলেন। সেখানেও অল্পবিস্তর দোকানপাট বন্ধ থাকলেও বড় কোনও প্রভাব পড়েনি। বরং, তাঁর একান্ত অনুগত যুব মোর্চা নেতা অমৃত ইয়নজন সদলবল বিনয় শিবিরে সামিল হয়েছেন। উপরন্তু, নানা মামলায় অভিযুক্ত গুরুঙ্গ ও তাঁর কয়েক জন সঙ্গীকে ২৩ নভেম্বরের মধ্যে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ফলে পুলিশ তল্লাশি জোরদার করেছে। সব মিলিয়েই এখন বিপুল চাপের মধ্যে রয়েছেন গুরুঙ্গ।

এ দিন প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বরুণের স্ত্রী সবিতা অভিযোগ করেছেন, পুলিশি অভিযানের ফলেই তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের কাছেও তদন্তের আর্জি জানান তিনি। রাজ্য মানবাধিকার কমিশন তদন্তে নেমেছে। কালিম্পং পুলিশ-প্রশাসনের কাছে রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE