সর্বদল বৈঠক বয়কট বিজেপি ও আইএসএফের। —নিজস্ব চিত্র
বিধানসভায় বাদল অধিবেশনের আগে সর্বদল বৈঠকে যোগ দিলেন না বিজেপি এবং আইএসএফের বিধায়কেরা। শুধু শাসক তৃণমূলের বিধায়কদের নিয়েই হল বৈঠক। বৈঠকে যোগ না দেওয়ার ব্যাপারে আইএসএফের তরফে কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি। তবে বিজেপি সূত্রের দাবি, বিধানসভার ‘রীতি-নীতি’ ভঙ্গ করছে শাসকদল। বিরোধী দলকে ‘যোগ্য সম্মান’ না দেওয়ার প্রতিবাদেই তারা এই ধরনের বৈঠক বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সম্মতি না মেলায় প্রস্তাবিত সময়ে বিধানসভার বাদল অধিবেশন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। যদিও শেষ মুহূর্তে সম্মতি মেলে রাজভবন থেকে। এর পর শনিবার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ২৪ জুলাই অর্থাৎ সোমবার দুপুর ১২টা থেকেই বাদল অধিবেশন শুরু হবে। তার আগে বেলা ১১টা নাগাদ হবে সর্বদল বৈঠক। সেই বৈঠকে যোগ দিলেন না কোনও বিজেপি বিধায়ক। একমাত্র আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিও যোগ দেননি সর্বদলে। বৈঠকের পর নির্ধারিত সময়েই অধিবেশন শুরু হয়। প্রথামাফিক পাঠ করা হয় শোকপ্রস্তাবও। এর পরেই অধিবেশন মুলতবি করে দেন স্পিকার।
নওশাদ কেন সর্বদল বৈঠকে যোগ দেননি, তা নিয়ে আইএসএফের তরফে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি। অন্য দিকে, বৈঠকে যোগ না দেওয়ার ব্যাপারে বিজেপি সূত্রের ব্যাখ্যা, বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি)-সহ বিভিন্ন কমিটির মাথায় যেখানে বিরোধী দলকে ‘গুরুত্ব’ দেওয়াই দস্তুর, সেখানে ‘দলবদলু’দের চেয়ারম্যান করে দেওয়া হচ্ছে। বিধানসভার ‘রীতি’ ভঙ্গের প্রতিবাদ জানাতেই সর্বদল বৈঠকে না থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজেপি সূত্র।
প্রসঙ্গত, পিএসি ঘিরে নানা সময়ে সংঘাতে জড়িয়েছে শাসক এবং বিরোধী শিবির। প্রথমে বিরোধ শুরু হয় মুকুল রায়কে নিয়ে। তিনি পিএসি-র চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দিলে আর এক ‘দলবদলু’ বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীকে পিএসি-র চেয়ারম্যান করা হয়। রায়গঞ্জ থেকে বিজেপির প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছিলেন কৃষ্ণ। পরে তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। সেই কারণে দলত্যাগ-বিরোধী আইনে তাঁর বিধায়ক-পদ খারিজ করার জন্য স্পিকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিল বিজেপির পরিষদীয় দল। তা সত্ত্বেও কেন তাঁকে পিএসির শীর্ষ পদে বসানো হল, তা নিয়ে প্রবল আপত্তি তোলে বিজেপি। এ নিয়ে একাধিক বার সুর চড়িয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বক্তব্য, বিরোধী দলের তরফে পিএসি-র জন্য যে ৬ জনকে মনোনীত করা হয়েছিল, তার মধ্যে মুকুল বা কৃষ্ণ কেউ ছিলেন না। বিধায়ক-পদ খারিজের আবেদন যাঁদের বিরুদ্ধে জমা পড়ে রয়েছে, তাঁদের মধ্যে থেকেই বারবার পিএসি-র চেয়ারম্যান বেছে নেওয়ার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন। পাল্টা স্পিকারের বক্তব্য, নিয়ম মেনেই পিএসি-র চেয়ারম্যান করা হয়েছে রায়গঞ্জের বিধায়ককে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy