Advertisement
E-Paper

টেক্কা দিতে পারল না গেরুয়া

লড়াইটা আসলে ছিল লাল বনাম গেরুয়ার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনকে অমান্যের আন্দোলনে প্রথম রাউন্ডে জিত বামেদেরই। সাধারণের বিচারে ফল আপাতত সিপিএম— ১, বিজেপি— ০।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৭ ০৪:১৬

লড়াইটা আসলে ছিল লাল বনাম গেরুয়ার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনকে অমান্যের আন্দোলনে প্রথম রাউন্ডে জিত বামেদেরই। সাধারণের বিচারে ফল আপাতত সিপিএম— ১, বিজেপি— ০।

যদিও, একটি মাত্র আন্দোলনের চেহারা দেখে রাজ্যের বিরোধী বৃত্তের সামগ্রিক চিত্র আঁকা যায় না— রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ এ কথাও বলছেন। বিশেষ করে কোচবিহার লোকসভা, দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভার উপনির্বাচন থেকে সাম্প্রতিক পুর নির্বাচনেও দেখা গিয়েছে বামদের ভোট চলে যাচ্ছে পদ্মের বাক্সে। সেই কারণেই ‘চলো নবান্ন’ আর ‘লালবাজার অভিযান’ কর্মসূচিও প্রতিযোগিতার প্রিজমে দেখা শুরু করেছিলেন অনেকে। তাতে অবশ্য ধারে-ভারে এগিয়ে থাকল লাল পার্টিরা।

তবে এ দিনও বিজেপির আন্দোলনকারীদের হটাতে পুলিশকে লাঠি, গ্যাস, জলকামান সবই ব্যবহার করতে হয়েছে। বার বার লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যেতে হয়েছে লালবাজারের আশপাশের ২০-২২টি গলিতে। সকাল থেকেই দুর্গে পরিণত হয়েছিল পুলিশের সদর দফতর। কিন্তু তার পরেও সারা দিনে তিন বার ছোট ছোট দলে বিজেপি কর্মীরা পৌঁছে যায় লালবাজারের গেটে। পুলিশের দাবি, ব্র্যাবোর্ন রোডের মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ করে পেট্রোল বোমা পর্যন্ত ছোঁড়া হয়েছে। বউবাজারে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে ওসি-র গাড়ি। ভাঙা হয়েছে আরও কয়েকটি সরকারি গাড়িও। বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে বোমাও ফেটেছে। সে সবই তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। শহরের বিভিন্ন স্থানে গোলমাল পাকানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ১৪১ জন বিজেপি কর্মীকে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিংহ, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়রা। বাংলায় সংগঠনের এই সক্রিয়তা দেখে খুশি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ রাজ্য নেতাদের অভিনন্দন জানান।

আরও পড়ুন: চোখ এড়িয়ে সটান হানা লালবাজারে

যদিও আম জনতার মতে, সোমবারের আইন অমান্যে বামেদের অনেক আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল। লোকবল তো বহুগুণ বেশি ছিলই, প্রতিটি স্থানেই কোনও না কোনও বাম নেতা সামনে থেকে প্রতিরোধ করে গিয়েছেন। এমনকী বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রেরাও লাঠি খেয়েছেন। এ দিন তিনটি জায়গায় বিজেপি নেতারা যেন গ্রেফতার হতেই গিয়েছিলেন। প্রতিরোধ তো দূরের কথা, পুলিশের সঙ্গে বাগ‌্‌বিতণ্ডাটুকুও করেননি তাঁরা। বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘‘সারা দেশে বহু আইন অমান্য করেছি। কিন্তু কলকাতায় তো আইনকে অমান্য করার আগেই ভ্যানে তুলে নিল পুলিশ!’’

গ্রেফতারির আগে বামেদের কর্মসূচিতে বার বার পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধ হয়েছিল। পুলিশকে পাল্টা তেড়েও গিয়েছিল সিপিএম কর্মীরা। কোথাও মার দিতে গিয়ে পাল্টা মারও খেয়েছিল বেপরোয়া পুলিশ। পুলিশ এ দিন খেদিয়ে দেওয়ার পর আর বিজেপি কর্মীরা ফিরে আসেনি। জনতার তেমন প্রতিরোধের মেজাজও ছিল না। ফলে বিজেপি কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে বেগ পেতে হয়নি। তবে বিজেপির রাজ্য দফতরে বা সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনের ভিতরে ঢুকে পুলিশ যে ভাবে পিটিয়েছে, তার নিন্দা হয়েছে লালবাজারেও। অনেকেই বলেছেন, আসলে পুলিশ যে পুলিশই, তার প্রমাণ ওরা এ দিনও রেখে গিয়েছে। পুলিশ কর্তাদের কেউ কেউ বলছেন, সাম্প্রতিক কালে কোনও রাজনৈতিক দলের মিছিল থেকে বোমা ছোড়া, গাড়ি জ্বালানোর ঘটনাও বেনজির।

যা শুনে বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘আমাদের মিছিল থেকে বোমা ছোঁড়া হয়নি। আশপাশের বাড়ি থেকে এসেছে।’’ কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেছেন, ‘‘পুলিশ কমিশনার আসলে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী। এ দিন তৃণমূলের ক্যাডারের ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। ওঁকে সুপ্রিম কোর্ট অবধি টেনে নিয়ে যাব।’’ এই কেন্দ্রীয় নেতার দাবি— ‘‘বিজেপির বদনাম করার জন্য তৃণমূলই বোমা ছুড়েছে এবং গাড়িতে আগুন দিয়েছে।’’

Left Front Temperament BJP Rally
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy