পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দলের ‘সন্ত্রাস’ মোকাবিলায় বাইক বাহিনী তৈরি রাখার পরামর্শ উঠে এল বিজেপির পঞ্চায়েত প্রস্তুতি বৈঠকে। যা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
দলের হেস্টিংস দফতরে রবিবার বৈঠকে বসেন বিজেপি নেতৃত্ব। ছিলেন ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল, পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষেরা। তবে ছিলেন না রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সূত্রের খবর, বৈঠকে নেতৃত্বের তরফে বলা হয়, যে হেতু রাজ্য পুলিশ দিয়েই পঞ্চায়েত নির্বাচন হওয়ার সম্ভবনা বেশি, তাই তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’ করার সুযোগও বেশি। সেই ‘সন্ত্রাস’ প্রতিহত করতে না পারলে কোনও ভাবেই দাঁত ফোটানো যাবে না। তাই প্রয়োজনে বাইক বাহিনী প্রস্তুত রাখতে হবে। খবর এলেই যাতে তারা এলাকায় পৌঁছে যেতে পারে। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের মন্তব্য, ‘‘বাইক না হয় কেনা হল। চালাবে কে? ওদের তো এত লোকই নেই! হার নিশ্চিত বুঝে এ সব কথা বলছে।’’
সূত্রের দাবি, বৈঠকে বনসল অঙ্ক কষে দলকে এগোতে বলেছেন। যত দ্রুত সম্ভব বুথ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন। যতগুলি বুথে কমিটি গড়া যাবে, সেই অনুপাতেই প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে। এই অঙ্ক মাথায় রেখেই যত বেশি সম্ভব বুথে বুথ কমিটি গঠনে জোর দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া, প্রার্থী নির্বাচনে স্বচ্ছতায় জোর দেওয়া হবে বলে নেতৃত্বের তরফে বার্তা দেওয়া হয়েছে। এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা আছে, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে, এমন লোককেই প্রার্থী করা হবে। নেতৃত্বের দাবি, দুর্নীতির অভিযোগে শাসক দল কিছুটা বেকায়দায় রয়েছে। এই পরিস্থিতির ফায়দা তুলতে হলে নিজেদের প্রথমে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী হতে হবে। রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন পঞ্চায়েত কমিটির ভূমিকায় খুব একটা সন্তুষ্ট নন বনসলেরা। ওই কমিটির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে এ দিনের বৈঠকে। কার্যত সেই কমিটির ভূমিকা খর্ব করে ৪২টি সাংগঠনিক জেলায় এক জন করে পঞ্চায়েত কো-অর্ডিনেটর নিয়োগ করা হয়েছে। এ ছাড়া, ১৫ নভেম্বরের মধ্যে পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরের কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।।
সূত্রের খবর, বৈঠকে রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সিএএ চালু করার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে বেশ কিছু সীমান্তবর্তী জেলা আছে। সিএএ চালু হলে, সেই প্রচারের জোরে সেই জেলাগুলিতে বিজেপি ভাল ফল করতে পারে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা কী ভাবে মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে অথচ রাজ্য সরকার নিজের কৃতিত্ব নিচ্ছে, তা নিয়েও প্রচার করতে বিজেপি নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছেন। বৈঠক প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কমিটি গঠন করা হল। কত দূর কাজ এগিয়েছে নেতৃত্ব খোঁজ নিয়েছেন।’’