E-Paper

লক্ষ্য লোকসভা ভোট, অগ্রাধিকারের কেন্দ্রেও বুথ কমিটি দুর্বল, কোথাও নেই, উদ্বেগে বিজেপি

গত লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্য থেকে বিজেপি ১৮টি আসন জিতেছিল। ঘরোয়া আলোচনায় বিজেপি নেতারা দাবি করেন, ওই নির্বাচনে রাজ্যের ৫৪% বুথেই তাঁরা এজেন্ট দিতে পারেননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৪:৩৭
Representational image of BJP.

বিজেপি নেতাদের আশা, লোকসভা নির্বাচনের আগে ‘মোদী হাওয়া’তেই’ সরে যাবে দুশ্চিন্তার মেঘ। প্রতীকী ছবি।

লক্ষ্য ’২৪-এ ২৪। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা রাজ্যে এসে রাজ্য বিজেপিকে এই লক্ষ্য বেঁধে দিয়ে গিয়েছেন। ইতিমধ্যে সেই কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কাজ করতে নেমেই বিপত্তি। দেখা যাচ্ছে, অগ্রাধিকারে থাকা আসনগুলিতেও বুথ কমিটি দুর্বল। কোথাও কমিটি শুধুই খাতায়-কলমে। কোথাও নেই। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় তো অবস্থা আরও কাহিল। যদিও বিজেপি নেতাদের আশা, লোকসভা নির্বাচনের আগে ‘মোদী হাওয়া’তেই’ সরে যাবে দুশ্চিন্তার মেঘ।

গত লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্য থেকে বিজেপি ১৮টি আসন জিতেছিল। ঘরোয়া আলোচনায় বিজেপি নেতারা দাবি করেন, ওই নির্বাচনে রাজ্যের ৫৪% বুথেই তাঁরা এজেন্ট দিতে পারেননি। লোকসভা নির্বাচনে কিছুটা ‘আশাতীত’ সাফল্য পেয়ে বিধানসভা নির্বাচনে ২০০ আসনের লক্ষ্যে ঝাঁপিয়েছিল বঙ্গ বিজেপি। কিন্তু সেই লক্ষ্যপূরণ তো দূরের কথা, আসন সংখ্যায় তিন অঙ্কেও পৌঁছতে পারেনি তারা। এর পর থেকেই নিচু তলায় সংগঠন ক্রমে দুর্বল হতে থাকে। ফলে, বাংলা থেকে ২৪টি লোকসভা আসন জেতার আশা কতটা বাস্তবসম্মত, তা নিয়ে গেরুয়া শিবিরের অন্দরেই প্রশ্ন রয়েছে।

সূত্রের দাবি, বিজেপি গত নির্বাচনের জেতা আসনগুলি ছাড়াও কৃষ্ণনগর, মথুরাপুর, কলকাতা উত্তর, কাঁথি, তমলুক, হাওড়া—এই ৬টি আসনে বিশেষ নজর দিচ্ছে। সেই সঙ্গে অগ্রাধিকারে রয়েছে মালদহ দক্ষিণ ও মুর্শিদাবাদ আসন দু’টি। এর মধ্যে কাঁথি এবং তমলুক আসন দু’টি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘খাসতালুক’ হওয়ায় সেখানে বিজেপির আশা আরও বেশি। বিরোধী দলনেতা নিজেও বলেছেন, তিনি কাঁথি লোকসভা আসনটি দু’লক্ষ ভোটে জিতিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে চান।

তবে পুরোনো আসনগুলি সব ধরে রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে বিজেপির অন্দরেও প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষ করে ব্যারাকপুর, হুগলি, ঝাড়গ্রাম আসন নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। এমনকি, আসানসোল ও পুরুলিয়া আসন দু’টিও ৫০-৫০ বলে মনে করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যে ২৪টি বিশেষ অগ্রাধিকার প্রাপ্ত আসনে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। বিস্তারকেরা সেখানে ঘুরে সাংগঠনিক অবস্থা ঠাওর করার চেষ্টা করছেন। রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারা ২১-২২ ফেব্রুয়ারি বিস্তারকদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছিলেন। সূত্রের খবর, সেখানে বিস্তারকেরা জানিয়েছেন, অধিকাংশ জায়গায় বুথ কমিটি অসম্পূর্ণ কিংবা দুর্বল। বসে যাওয়া দলের পুরনো কর্মীদের ফেরানোর জন্য এখনও কোনও তৎপরতা হয়নি। বেশির ভাগ জায়গায় সংগঠকেরা ইচ্ছে মতো কাজ করছেন। অনেকেই কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন না। ‘পছন্দের লোক’ ছাড়া বাকিদের কাছে খবর পৌঁছচ্ছে না। এমনকি বৈঠকে উঠে এসেছে, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় এখনও দলের পতাকা লাগানোর লোক নেই। ফলে, বুথ কমিটি গঠনের জায়গাতেই পৌঁছনো যায়নি।

দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘বুথ দিয়ে সব হয় না। লোকসভা নির্বাচন এলে লোকে মোদী সরকারের কাজ দেখে ভোট দেবেন। মোদী হওয়ায় ভোট হবে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘১০ থেকে ১৫ শতাংশ বুথ বাদ দিলে বাকি জায়গায় কমিটি গড়া হয়েছে। বুথে লোক আছে। ধীরে ধীরে সক্রিয় হচ্ছে। বিডিও অফিস অভিযান করা হয়েছিল। সেখানে ভাল সংখ্যক মানুষ বেরিয়েছেন।’’ যদিও তিনি মেনে নিয়েছেন, সংখ্যালঘু এলাকায় এখনও বুথ কমিটি গড়ার ক্ষেত্রে দল অনেকটা পিছিয়ে আছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP West Bengal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy