উত্তরবঙ্গে পাহাড়ে ধস এবং বৃষ্টির মধ্যে পর্যটকদের একাংশ দার্জিলিং থেকে ফিরতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়ছেন। আবহাওয়া খারাপ হওয়ার আশঙ্কায় কলকাতা থেকে যাওয়া যাত্রীদের অনেকেই বেড়ানো কাটছাঁট করে পাহাড় থেকে শিলিগুড়িতে নেমে এসেছেন রবিবার দুপুরের পরে। কিন্তু ট্রেনে টিকিট না পেয়ে বাড়ি ফিরতে তাঁদের অনেককেই চড়া ভাড়ায় বেসরকারি সংস্থার বাসের টিকিট কাটতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। সরকারি বাসে ভাড়ার হার নির্দিষ্ট থাকলেও আকস্মিক বিপর্যয়ের সময়ে পাহাড় থেকে ফেরার বেসরকারি বাসের ভাড়া এক লাফে বেড়ে গিয়েছে প্রায় দ্বিগুণ! ফলে বিপাকে পড়ছেন পর্যটকেরা। আটকে পড়া যাত্রীদের ফেরার ক্ষেত্রে সুরাহা ছাড়াও যাত্রী-সংখ্যার চাপ কমাতে উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগম বাড়তি বাস চালালেও কলকাতামুখী বেসরকারি ভলভো এবং অন্যান্য বাসের ভাড়া খুব একটা কমেনি।
তবে রবিবার পাহাড় থেকে সমতলে নেমে আসা যাত্রীদের ঘরে ফেরাতে উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগম তাদের নিয়মিত পরিষেবার বাইরে তিনটি অতিরিক্ত বাস চালিয়েছে বলে খবর। এ দিন বিকেল সাড়ে ৫টা, সন্ধ্যা ৬টা এবং ৭টায় পর্যায়ক্রমে ওই বাস চালানো হয়।
ধর্মতলা থেকে দূরপাল্লার যে সব বাস ছোটে, তার কর্মী সংগঠনের নেতা শাহিল ওয়ারসি জানান, পুজোর সময়ে পাহাড়মুখী যাত্রীদের চাপ সামলাতে বাড়তি যত বাস চালানো হয়েছিল, তার বেশির ভাগই শিলিগুড়িতে রয়েছে। আজ, সোমবার ভোর থেকে দুপুরের মধ্যে সেগুলির বেশির ভাগ ফিরবে। অন্যান্য সময়ে আসা-যাওয়া মিলে গড়ে ১৪ থেকে ১৫টি বাস চললেও এ দিন ওই সংখ্যা ছিল ৩০টির কাছাকাছি। তবে, বাসের বর্ধিত ভাড়া নিয়ে শাহিল কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বাসমালিক সংগঠন সূত্রের খবর, ওই সব বাসের ক্ষেত্রে বিমান এবং রেলের ধাঁচে ডায়নামিক ফেয়ার চালু রয়েছে। ফলে, চাহিদা বাড়লে বাসের ভাড়াও পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে।
পাহাড়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কায় ট্রেনের টিকিট বাতিল করে বাসে শনিবারই কলকাতায় ফিরে এসেছেন গড়িয়ার নির্মাল্য চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার রাতে বাসের ভাড়া আয়ত্তের বাইরে না গেলেও শনিবার থেকে তা লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে। রবিবার কলকাতামুখী বাসের এক যাত্রী অরুণ মুস্তাফি জানান, মাথাপিছু প্রায় ২৭০০ টাকা দিয়ে তাঁদের ভলভো বাসের টিকিট কাটতে হয়েছে। বাতানুকূল নয়, এমন বাসের ক্ষেত্রে ওই ভাড়া ১৩০০ টাকার কাছাকাছি পর্যন্ত উঠেছে। আর ভলভো বাসের ক্ষেত্রে ভাড়া ২৩০০-৩০০০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে বলে খবর।
তবে, পাহাড়ে বিপত্তির কারণে মঙ্গল বা বুধবারের ট্রেনযাত্রায় খুব বেশি প্রভাব এখনও পড়েনি বলেই জানাচ্ছেন পূর্ব রেলের আধিকারিকেরা। স্বাভাবিক সীমার মধ্যেই টিকিট বাতিলের হার রয়েছে। যাত্রীদের অনেকেই আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে এখনও টিকিট বাতিল করেননি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)