স্থগিত হয়ে গেল বেসরকারি বাস ধর্মঘট। পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর হস্তক্ষেপে বুধবার ধর্মঘট স্থগিত করার কথা ঘোষণা করে বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠনগুলি। আগামী ২২, ২৩ এবং ২৪ মে রাজ্যে তিন দিনের বেসরকারি বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল পরিবহণ বাঁচাও কমিটি। এই ধর্মঘটে অংশ নেওয়ার কথা ছিল পাঁচটি বাসমালিক সংগঠনের। সেগুলি হল জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট (পশ্চিমবঙ্গ), বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট, ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন,মিনিবাস অপারেটার্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি, ইন্টার অ্যান্ড ইন্ট্রা রিজিয়ন বাস অ্যাসোসিয়েশন। পাঁচ দফা দাবি রয়েছে তাদের। ১৫ বছরের পুরনো বাস বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং অন্যান্য সমস্যার সমাধানের দাবি তার অন্তর্ভুক্ত। আবার পুলিশি হয়রানি এবং ইচ্ছামতো টোল ট্যাক্স আদায়ের অভিযোগও রয়েছে।
সোমবার সকালে পরিবহণ দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বাস মালিকদের বৈঠক হয় কসবার দফতরে। ওই বৈঠকে ফলপ্রসূ না হলে বিকেলে বেসরকারি বাস মালিকদের নিয়ে ফের পরিবহণ দফতরে বৈঠকে বসেন পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহন। কিন্তু সেই বৈঠক নিস্ফলা হলে, মঙ্গলবার ফের ভার্চুয়াল বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু মঙ্গলবারের বৈঠকেও কোনও ফল না হলে, বুধবার মন্ত্রী-সহ কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ বর্মা-সহ ট্রাফিক পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকেরা ফের বসেন। সেই বৈঠকে বাস মালিকদের দাবিদাওয়া খতিয়ে দেখার আশ্বাসে শেষ পর্যন্ত ধর্মঘট স্থগিত করতে সম্মত হন তাঁরা। যদিও বেসরকারি বাস মালিকদের দাবি, যদি আগামী দিনে তাঁদের দাবিদাওয়া পূরণ না হয় তারা ফের ধর্মঘটের পথে হাঁটবেন। জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আপাতত আমরা রাজ্য সরকারের আশ্বাসে ধর্মঘট স্থগিত করে দিচ্ছি। সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত যদি সরকারি আশ্বাসের বাস্তবায়ন না হয়, তা হলে আমরা আবার ধর্মঘট করার বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করতে বাধ্য হব।’’
আরও পড়ুন:
ধর্মঘট না হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা। বৈঠক শেষে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস বলেন, ‘‘আমরা খুশি যে বাসমালিকেরা আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে ধর্মঘট করবেন না বলে জানিয়েছেন। তাঁদের বেশকিছু প্রস্তাব আমাদের দিয়েছেন, আমরা সেইসব দাবিদাওয়া খতিয়ে দেখে তা পূরণের চেষ্টা করব। আমরা চাই বেসরকারি বাস সচল থেকে জনজীবন স্বাভাবিক থাকুক। সমস্ত বিষয় আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা যেতেই পারে। বৈঠকে যেমন আমরা বাসমালিকদের কথা শুনেছি, তেমনই কলকাতা পুলিশের কমিশনার এবং ট্রাফিক পুলিশও তাদের কথা শুনেছে। তাই আমি মনে করি সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।’’ এমন কিছু বাসমালিক সংগঠন রয়েছে যারা এই ধর্মঘটে শামিল ছিল না। তেমনই একটি সংগঠন সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসেসের নেতা টিটু সাহা বলেন, ‘‘আমরা ধর্মঘটে শামিল ছিলাম না। তবে পরিবহণ দফতরের ডাকা সব বৈঠকে উপস্থিত থেকে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছি। আমরা মনে করি ধর্মঘটের বদলে আলাপ আলোচনা করেই সব সমস্যার সমাধান করতে হবে।’’