Advertisement
E-Paper

অপহরণের পর গাড়িতে খুন ব্যবসায়ী

রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে চলন্ত গাড়িতেই এক ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগ উঠল। খুনের পর গাড়ি থেকে নেমে ছয় অভিযুক্ত পালিয়ে গেলেও এক অভিযুক্তকে সঙ্গে নিয়ে থানায় আত্মসমর্পণ করেন চালক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৫ ২০:০৮
ছবি-মনোজ মুখোপাধ্যায়।

ছবি-মনোজ মুখোপাধ্যায়।

রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে চলন্ত গাড়িতেই এক ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগ উঠল। খুনের পর গাড়ি থেকে নেমে ছয় অভিযুক্ত পালিয়ে গেলেও এক অভিযুক্তকে সঙ্গে নিয়ে থানায় আত্মসমর্পণ করেন চালক। শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহ জেলায় মানিকচকে। অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার তাকে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে চালককেও।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম আফজল শেখ(৪৫)। তিনি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী থানার বাসিন্দা। ধৃত যুবক শম্ভু কুমার ঠাকুরের বাড়ি বিহারের সিমলির দ্বারভাঙা গ্রামে। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অন্য জেলায় খুন করে দেহ এখানে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। মৃতের নাম পরিচয় জানারও চেষ্টা চলছে।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মানিকচক থানার নুরপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল রহিমের একটি ম্যাজিক গাড়ি ভাড়া করেন রতুয়ার বাহারালের এক ব্যক্তি। হাজার খানেক টাকার বিনিময়ে মালদহ থেকে দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারি যাওয়ার কথা ছিল। মানিকচকের নুরপুর থেকে গাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় রতুয়ার বাহারালে। সেখানে চার যুবক গাড়িতে ওঠে। এর পর গাড়ি রওনা দেয় বংশীহারির উদ্দেশ্যে। পুলিশ জানায়, বংশীহারির দৌলতপুরের কাছে আরও তিন যুবক গাড়িতে ওঠে। ওই সময় সাইকেল নিয়ে দৌলতপুরের দিকে আসা মাঝ বয়সি এক ব্যক্তিকে জোর করে গাড়িতে তুলে নেয় তারা। চলন্ত গাড়ির মধ্যেই শুরু হয়ে যায় মারধর। ওই ব্যক্তিকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। পরে চালককে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে মালদহের দিকে গাড়ি নিয়ে যেতে বলে ওই দুষ্কৃতীরা।

রতুয়ার পুকুরিয়ার কাছে চালককে ভয় দেখিয়ে গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে যায় চার জন যুবক। চালকের দাবি, বাকিরা তাঁকে আড়াইগাঙা হাসপাতালের কাছে নিয়ে যেতে বলে। হাসপাতালের কাছে যেতেই পেছনের দিকে থাকা দুই যুবক পালিয়ে যায়। এর পরেই পাশে থাকা ওই যুবকটিকে সঙ্গে নিয়ে চালক মানিকচক থানায় আত্মসমর্পণ করে। পুলিশের হাতে তুলে দেয় অভিযুক্ত শম্ভু কুমার ঠাকুরকে। পুলিশ চালক ও শম্ভুকে আটক করে মৃতদেহটি নিয়ে যায় মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে।

পুলিশ জানিয়েছে, চালকের তৎপরতায় ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। চালককে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে রতুয়ার বাহারাল থেকে গাড়িতে ওঠা চার যুবকের মধ্যে দু’জন হিন্দি ভাষায় কথা বলছিল। এ ছাড়া বংশীহারির দৌলতপুরের বাসিন্দা আফজল শেখকে জোর করে তুলে নিয়ে টাকা পয়সা নিয়ে লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বচসা শুরু হয়ে যায়। এর পরেই তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়।

গাড়ির চালক আব্দুল রহিম বলেন, ‘‘দু’জায়গা থেকে সাত জন গাড়িতে উঠেছিল। তার পরে দেখি এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হচ্ছে। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আমি ভয়ে কোনও প্রতিবাদ করিনি। পরে সকলে মালদহে এসে এক-এক করে নামতে শুরু করে। তখন আমি প্রচণ্ড গতিতে গাড়ি চালিয়ে এক জনকে সঙ্গে নিয়ে থানায় হাজির হই। আমি চাই পুলিশ ঘটনার সঠিক তদন্ত করুক।’’

গাড়ির মালিক মানিকচকের নুরপুরের বাসিন্দা শের আলি খান বলেন, ‘‘আমি পুরো ঘটনাটি শুনেছি। পুলিশ সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।’’ মানিকচক থানার পুলিশ জানিয়েছে, ভাড়াটে খুনিদের ব্যবহার করে ওই ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে। বংশীহারি থানার পুলিশকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে।

businessman malda killed abduction car
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy