কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীকে বরখাস্ত করেছিলেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল ছবি।
কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীকে কী কারণে অপসারিত করা হয়েছে? রাজভবনের কাছে তা জানতে চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। রবিবার সাধনকে বরখাস্ত করেছিলেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই নির্দেশের বিরোধিতা করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সাধন। আদালতে তাঁর আইনজীবীর দাবি, রাজ্যপালের নির্দেশের জেরে উপাচার্যের সম্মানহানি হয়েছে। মঙ্গলবার ওই মামলায় রাজভবনের পদক্ষেপের কারণ জানতে চেয়েছেন হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ। তবেই এ মামলার শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
হাই কোর্ট সূত্রে খবর, মঙ্গলবার আদালতে সাধনের আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘যে কারণ দেখিয়ে উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। রাজভবন যে নির্দেশ দিয়েছে তাতে উপাচার্যের সম্মানহানি হয়েছে।’’ এর পর রাজভবনের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি কৌশিক চন্দের মন্তব্য, ‘‘কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সরানোর নেপথ্যে কী কারণ রয়েছে, তা জানাতে হবে। এ বিষয়ে বুধবার জেনে আসতে হবে। তার পরেই এই মামলার শুনানি হবে।’’
উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে গত ১৪ মার্চ থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য আন্দোলন শুরু করেছেন আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, আধিকারিক-সহ বহু ছাত্রছাত্রী। তাঁদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়কে দুর্নীতির আখড়া করে রেখেছেন উপাচার্য। ক্যাম্পাসে নির্মাণকাজের জন্য বহু মূল্যবান এবং প্রাচীন গাছ কেটে বিক্রি করা হলেও তার হিসাব নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা অনিয়মিত হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের নিয়মিত বেতন দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে অনেককে কোনও দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখাই যায়নি। সাধনের বিরুদ্ধে প্রায় ২৬ লক্ষ টাকার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ করেছেন তাঁরা। সাধনের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় রেজিস্ট্রার চন্দন কোনারকে বরখাস্ত করা হয়েছিল বলেও দাবি আন্দোলনকারীদের। যদিও পরে হাই কোর্টের নির্দেশে রেজিস্ট্রারকে তাঁর পদে বহাল করা হয়েছিল।
আন্দোলন চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কাটাতে উদ্যোগী হলেও সফল হননি সাধন। আদালতের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজের অফিসে প্রবেশের অনুমতি পান তিনি। অন্য দিকে, আদালতের নির্দেশে ক্যাম্পাসের মূল প্রবেশদ্বার থেকে ৫০ মিটার দূরে ধর্নায় বসার অনুমতি পান আন্দোলনকারীরা। এই আন্দোলনের ৬০ দিনের মাথায় সাধনকে বরখাস্ত করেন রাজ্যপাল বোস। তাঁর নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন সাধন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy