Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

পেজ বন্ধের নির্দেশ খারিজ

হাইকোর্টের প্রশ্ন, রাজ্য সরকারের অভিযোগ গুরুতর। কিন্তু পুলিশ সে-ক্ষেত্রে এফআইআর না-করে শুধু জেনারেল ডায়েরি করে আদালতের দ্বারস্থ হল কেন?

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:১৪
Share: Save:

পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের সময়ে একটি বিতর্কিত ফেসবুক ‘পেজ’ নিয়ে আপত্তি তুলেছিল রাজ্য। ওই ‘পেজ’ বন্ধ করার নির্দেশ চেয়ে কলকাতার মুখ্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের দ্বারস্থ হয় কলকাতা পুলিশের সাইবার থানা। তার ভিত্তিতে ফেসবুক পেজটি বন্ধ করার নির্দেশ দেয় নিম্ন আদালত। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় বুধবার সেই নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছেন।

হাইকোর্টের প্রশ্ন, রাজ্য সরকারের অভিযোগ গুরুতর। কিন্তু পুলিশ সে-ক্ষেত্রে এফআইআর না-করে শুধু জেনারেল ডায়েরি করে আদালতের দ্বারস্থ হল কেন? ভবিষ্যতে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও অপরাধ হলে নিয়ম মেনেই যাতে পদক্ষেপ করা হয়, সেই নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।

পেজ বন্ধের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানান ফেসবুক-কর্তৃপক্ষ। তাঁদের আইনজীবী শৌভিক মিত্র বলেন, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশে আমরা খুশি। রাজ্য যে নিয়ম না-মেনেই ওই পেজ বন্ধ করতে বলেছিল, সেটা প্রমাণিত হয়ে গেল।’’ নির্দেশ খারিজ হয়ে যাওয়ায় ওই পেজ চালু রাখতে আর বাধা থাকছে না।

বিতর্কের শুরুতে সাইবার-বিশেষজ্ঞ আইনজীবীদের একাংশ বলেছিলেন, এই মামলায় রাজ্যের আবেদনে পদ্ধতিগত খামতি আছে। এই ধরনের অভিযোগ উঠলে সংশ্লিষ্ট পেজ বন্ধ করার জন্য রাজ্যের নোডাল অফিসারের তরফে কেন্দ্রকে নির্দেশ জারি করতে আর্জি জানানোর কথা। সেই আর্জি বিবেচনা করে কেন্দ্র পদক্ষেপ করবে এবং তা ফেসবুক-কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেবে। এটাই নিয়ম। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সেই পদ্ধতি মানা হয়নি। কারণ, তখন রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি দফতরে কোনও নোডাল অফিসারই ছিলেন না। তাই মেট্রোপলিটন আদালতের পেজ বন্ধ করার নির্দেশ কেন্দ্রকে সরাসরি জানিয়ে দিয়েছিল সাইবার পুলিশ।

সরকারি কৌঁসুলি শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায় এ দিন আদালতে জানান, ইতিমধ্যে নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনেই নির্দেশিকা পাঠানো হবে। পুলিশি সূত্রের খবর, দার্জিলিঙে আন্দোলন চলাকালে ওই ফেসবুক পেজ থেকে আপত্তিকর খবর ছড়ানো হচ্ছিল। তার জেরে গোলমাল ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল। এই ধরনের কাজ রাষ্ট্রদ্রোহের সমতুল। এফআইআর করা হয়নি কেন? পুলিশ নিরুত্তর।

ফেসবুকের বক্তব্য, তারা সরকার বা আন্দোলনকারী— কোনও পক্ষেই ছিল না। প্ররোচনামূলক খবর বা ছবি ছ়ড়ানো বন্ধ করতে তাদের নিজস্ব নিয়ম রয়েছে। অশান্তি ছড়াতে পারে, এমন অভিযোগে আগেও অনেক ‘পোস্ট’ মুছে দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের সমস্যায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাজ্য প্রশাসন তা-ও করেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE