প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) প্রকাশ এবং বেতন ফেরতের বিচার কোথায় হবে? আদালত অবমাননার মামলার শুনানি হাই কোর্টে হবে, না কি সুপ্রিম কোর্টে? বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত বিষয়ের শুনানি শেষ হল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে। রায় ঘোষণা স্থগিত রেখেছে আদালত।
স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় সুপ্রিম কোর্ট যা যা নির্দেশ দিয়েছিল, সেগুলি কেন কার্যকর করা হচ্ছে না, এই প্রশ্ন তুলে হাই কোর্টে মামলা হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে তা জানাতে বলা হয়েছিল। হাই কোর্টে এই মামলায় বিচারপতি বসাক আদালতের নির্দেশ মেনে ‘দাগি’ শিক্ষকদের বেতন ফেরত-সহ ‘দাগি’ এবং ‘অযোগ্য’দের ওএমআর প্রকাশের কথা বলেন। কিন্তু মামলাকারী পক্ষের অভিযোগ, হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও পদক্ষেপ করেনি এসএসসি এবং স্কুল শিক্ষা দফতর।
২০১৬ সালের এসএসসির গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াই বাতিলের যে রায় হাই কোর্ট দিয়েছিল, সেটিই বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের রায়ে বাতিল হয়ে যায় ২০১৬ সালের এসএসসি-র সম্পূর্ণ প্যানেল। যদিও পরে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, যাঁরা ‘দাগি’ নন, তাঁরা স্কুলে যেতে পারবেন। বেতন পাবেন। তবে আগামী ৩১ মে-র মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, তারা চলতি বছরেই নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করবে। যদিও এই নতুন নির্দেশ ওই বছরে নিয়োগ পাওয়া গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের জন্য প্রযোজ্য নয়।
আরও পড়ুন:
গত ৩ এপ্রিলের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, যাঁরা ‘অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত’ বা ‘দাগি’ (টেন্টেড), তাঁদের বেতনও ফেরত দিতে হবে। তবে মামলাকারী পক্ষের অভিযোগ, সেই নির্দেশ কার্যকর করতে রাজ্য সরকারের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। পাশাপাশি এসএসসি-কে উত্তরপত্র প্রকাশ করতেও বলেছিল আদালত। এই অবস্থায়, এসএসসি এবং স্কুল শিক্ষা দফতরের আইনজীবীদের বক্তব্য, হাই কোর্টের নির্দেশ শীর্ষ আদালত বহাল রাখলেও বেশ কিছু জায়গা ‘মডিফাই’ (পরিবর্তন) করেছে। এখন ওই সংক্রান্ত মামলা শোনার এক্তিয়ার শুধু শীর্ষ আদালতেরই রয়েছে বলে মনে করছেন এসএসসি এবং স্কুল শিক্ষা দফতরের আইনজীবীরা। মামলায় সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে এই সংক্রান্ত শুনানি শেষ হয়েছে।