Advertisement
E-Paper

মূল দুই মামলাকারী পাশ না-করলে তাঁদের মামলা করার অধিকার থাকে? টেট নিয়ে প্রশ্ন তুলল ডিভিশন বেঞ্চ

টেট মামলার ওই দুই মামলাকারীর নাম রমেশ মালিক এবং সৌমেন নন্দী। তাঁদের করা মামলার ভিত্তিতেই একের পর এক মামলা হয়েছে টেটের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:৪০
টেট  সংক্রান্ত বহু মামলায় নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ এবং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও।

টেট সংক্রান্ত বহু মামলায় নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ এবং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

টেট মামলা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের একটি প্রশ্ন গোটা মামলাটিকেই ফেলে দিল প্রশ্নের মুখে। বুধবার টেট মামলার শুনানিতে কলকাতা হাই কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানতে চেয়েছে, যাঁরা এই মামলার মূল মামলাকারী, তাঁরা কি আদৌ মামলাটি করার যোগ্য? তাঁরা নিজেরা কি টেট পাশ করেছিলেন?

বিচারপতিদ্বয় শুধু এই প্রশ্ন করেই থামেননি। তার পাশাপাশি টেট মামলার তদন্তকারী কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআইয়ের কাছেও এ ব্যাপারে রিপোর্ট চেয়েছেন। আগামী ৩ জানুয়ারি সেই রিপোর্ট সিবিআইকে জমা দিতে বলেছেন তাঁরা। জানাতে বলেছেন, ওই দুই মূল মামলাকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা কী? তাঁরা টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন কি না। ৩ জানুয়ারি ওই রিপোর্ট জমা পড়লে টেট নিয়োগ মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৪ জানুয়ারি। সেখানেই এ বিষয়ে পরবর্তী মতামত জানাবে হাই কোর্ট। তবে ডিভিশন বেঞ্চের এই মন্তব্য শুনে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রশ্নের জবাবে ওলট পালট হয়ে যেতে পারে টেট মামলাটাই!

টেট মামলার ওই দুই মামলাকারীর নাম রমেশ মালিক এবং সৌমেন নন্দী। তাঁদের করা মামলার ভিত্তিতেই একের পর এক মামলা হয়েছে টেটের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একের পর এক নির্দেশের ভিত্তিতে শুরু হয়েছে টেট মামলার কেন্দ্রীয় তদন্তও। প্রকাশ্যে এসেছে নিয়োগ দুর্নীতির নতুন নতুন অভিযোগ। গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজ্যের বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। পরে তৃণমূলের দুই বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল ঘোষ এবং শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের জেরা করে আবার গ্রেফতার করা হয়েছে নিয়োগ মামলার অন্যতম রহস্যময় চরিত্র ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে। আতশকাচের নীচে এসেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্থা লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের নামও। দায়ের হয়েছে আরও অজস্র মামলা।

বুধবার তেমনই একটি মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয়কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে। এই মামলায় ২০১৬ সালের টেটের প্যানেল প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। যাকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল পর্ষদ। বুধবার সেই মামলারই শুনানি ছিল ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানি চলাকালীনই বিচারপতিরা জানতে চান, ‘‘টেট মামলার মূল মামলাকারী কারা? তাঁরা কি আদৌ টেট উত্তীর্ণ? পর্যেবক্ষেণ আদালত জানতে চেয়েছে, তারা যদি টেট উত্তীর্ণ না হন, তবে কি তাঁরা মামলা করার বৈধতা হারাবেন’’

আদালতের এই প্রশ্নেই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে টেট মামলা নিয়ে। প্রশ্ন উঠেছে, যদি এই মামলাকারীদের মামলা করার বৈধতা না থাকে, তবে এতদিন পর্যন্ত টেট নিয়ে দায়ের হওয়া সমস্ত মামলা এবং তদন্ত কি মিথ্যে হয়ে যাবে?

প্রায় দু’বছর ধরে চলছে টেট মামলা। চলছে ইডি-সিবিআইয়ের তদন্তও। তবে কি এই সমস্ত তদন্তের যে অগ্রগতি হয়েছে তা আবার পিছিয়ে শূন্যে এসে দাঁড়াবে। আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশ অবশ্য বলছেন, এখনই এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি। কারণ যদি বা এই মামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তবে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারবেন মামলাকারীরা। তবে এই প্রশ্ন যে টেট মামলা এবং টেট পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎকে আবার বড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই কারও।

Justice Amrita Sinha Justice Abhijit Gangopadhyay Calcutta High Court TET Recruitment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy