পার্থ চট্টোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে হেফাজতে রাখার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার ইডির উদ্দেশে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের প্রশ্ন, ‘‘পার্থকে কি আর হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে?’’ ইডির কাছে তিনি জানতে চান, ইডির যে মামলায় পার্থকে জেলবন্দি রাখা হয়েছে, তার আর দরকার আছে কি? আর যে মামলায় পার্থের নাম নেই, সেগুলির অবস্থান কী? ইডির দাবি, আরও কিছু সম্পত্তির হদিস মিলেছে। সঠিক পথে তদন্ত এগোচ্ছে। সোমবার পার্থের জামিনের মামলার শুনানি শেষ হয়নি। আগামী ১৬ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
পার্থের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি ঘোষের মন্তব্য, ‘‘নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত এখন আর প্রাথমিক পর্যায়ে নেই। যদি ধরেও নেওয়া যায় যে, ২০২২ সালের শেষে ইডির মামলাগুলি দায়ের হয়েছিল, তা হলেও প্রায় দেড় বছরের বেশি হয়ে গিয়েছে। এখন তদন্তকারী সংস্থার অবস্থান স্পষ্ট হওয়া দরকার।’’
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। জামিন চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন করেন তিনি। আদালতে ইডি জানায়, এক ‘মিডল ম্যান’-এর কাছ থেকে আরও কিছু সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে। যেগুলি এখনও তদন্তের আওতায় আসেনি। সঠিক পথে তদন্ত এগিয়ে চলছে। অন্য দিকে, পার্থের আইনজীবীর সওয়াল, ‘‘অর্পিতা চট্টোপাধ্যায় এখন সমস্ত টাকার দায় আমার মক্কেলের উপর দিয়ে দিয়েছেন। তিনি নিজে সমস্ত অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি পেতে চাইছেন।’’ ওই বক্তব্য শুনে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘অর্পিতা ওই বিপুল সম্পত্তি উপার্জন করতে সক্ষম হলে আপনার পক্ষে দাঁড়াতাম।’’ পার্থের আইনজীবীর যুক্তি, আমার মক্কেলের অপরাধ করার ক্ষমতা রয়েছে বলে অন্য কোনও অভিযুক্তের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া অর্থ পার্থের, এই যুক্তির কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই।
২০২২ সালের ২২ জুলাই পার্থকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। এখন তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি। নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআইও অভিযোগ আনে। নিম্ন আদালতে ইডি এবং সিবিআইয়ের আনা সেই অভিযোগের শুনানি চলছে। ইতিমধ্যে সেখানে বহু বার জামিনের আবেদনও করেছেন পার্থ। কিন্তু সেই আবেদন মঞ্জুর হয়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে সিবিআইয়ের সেই মামলাগুলি থেকে হাই কোর্টে জামিন চান পার্থ। এর আগে ইডির মামলা থেকেও জামিন চেয়েছিলেন পার্থ। হাই কোর্টে সেই আবেদন জানিয়েছিলেন গ্রেফতার হওয়ার ১৩ মাস পর। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে সেই শুনানি হয়। জামিনের বিরোধিতা করে পাল্টা আবেদন করে ইডি। ২০২৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এই মামলার প্রথম শুনানি ছিল। ইডি শুনানির তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিল। সেই আবেদন মেনে শুনানির দিন মাসখানেক পিছিয়েও দিয়েছিলেন বিচারপতি। তার পর আরও কয়েক বার শুনানি পিছিয়েছে নানা কারণে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy