Advertisement
E-Paper

আদালত মাথায় বন্দুক ঠেকাতে চায় না, অবস্থান স্পষ্ট করে নতুন হলফনামা দিক এসএসসি: হাই কোর্ট

হাই কোর্টের বক্তব্য, এই দুর্নীতির মামলায় এসএসসি-র ভূমিকা কখনই ঠিক ছিল না। তারা যখন জানতে পারে দুর্নীতি হয়েছে তখন চুপ করে ছিল কেন? কোর্টের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা না করে সুপারিশ বাতিল করা উচিত ছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:১২
Calcutta High Court said that the position of SSC not clear in school recruitment corruption case.

—ফাইল চিত্র।

চাকরির সুপারিশপত্র বাতিল নিয়ে দু’টি অবস্থান নয়। এক এবং একটি নির্দিষ্ট অবস্থান জানতে চায় আদালত। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর উদ্দেশে মন্তব্য কলকাতা হাই কোর্টের। হাই কোর্ট জানায়, মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে কাজ করানো হয়েছে আদালতের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ যেন আর না ওঠে। এই মামলায় সবার আগে এসএসসি-র অবস্থান স্পষ্ট করতে চায় আদালত। বুধবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চের বক্তব্য, কেন চাকরি বাতিল করা হয়েছিল। এখন চাকরি বাতিল নিয়ে তাদের কী অবস্থান এসএসসি-কে নতুন করে হলফনামা দিয়ে তা জানাতে হবে। হাই কোর্ট জানায়, ১৫ তারিখ সকল সদস্যকে নিয়ে বৈঠক করতে হবে এসএসসি-কে। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে চূড়ান্ত অবস্থান নিতে হবে তাদের। তার পরে আগামী ১৮ তারিখের মধ্যে তারা হলফনামা দাখিল করবে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের এসএসসি-র গ্ৰুপ-সি, গ্ৰুপ-ডি, নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সব মামলার শুনানি চলছে হাই কোর্টের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে। এর আগে এই মামলায় কয়েক হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর চাকরি বাতিল হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তা স্থগিত হয়ে গেলেও কিসের ভিত্তিতে এসএসসি চাকরির সুপারিশপত্র বাতিল করেছিল তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তা নিয়ে তাদের হলফনামা চায় আদালত। বুধবার ওই হলফনামা কোর্টে জমা পড়েছে। বিচারপতি বসাকের পর্যবেক্ষণ, এর আগে আদালতের নির্দেশে না কি, স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে এসএসসি সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করেছিল ওই হলফনামায় তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। বিচারপতির হুঁশিয়ারি, নতুন করে বৈঠক করে আবার সিদ্ধান্ত নিতে হবে এসএসসি-কে। তা না হলে আগামীতে আদালত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে। বিচারপতি বসাকের মন্তব্য, অন্যের ঘাড়ে চেপে ঘুরে না বেরিয়ে দ্রুত নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করুক এসএসসি।

বুধবার এসএসসি জানায়, হাই কোর্টের নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে কমিশন সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করেছিল। ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সদস্যদের নিয়ে কোনও বোর্ড মিটিং করা হয়নি। অথচ এর আগে তারা হাই কোর্টে জানিয়েছিল, নিজেদের আইন প্রয়োগ করে অযোগ্যদের চাকরি বাতিল করেছিল। আর সুপ্রিম কোর্টে কমিশন জানায়, হাই কোর্টের নির্দেশকে মান্যতা দিতেই সুপারিশপত্র বাতিল করতে বাধ্য হয়। এখন এসএসসি-র ব্যাখ্যা, সিবিআই তদন্ত করে বেশ কিছু নথি এবং তথ্য দেয়। তা খতিয়ে দেখে আদালতকে জানানো হয়েছিল। কিছু অনিয়ম খুঁজে পাওয়া যায়। তার পরে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক সুপারিশপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশেষ বেঞ্চ জানায়, আপাতত এসএসসি-র আগের সিদ্ধান্ত সরিয়ে রাখছে আদালত। এখন তাদের স্বাধীন ভাবে অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। আগামীতে তারা যেন বলতে না পারে আদালত মাথায় বন্দুক রেখে কাজ করিয়ে নিয়েছে।

হাই কোর্টের বক্তব্য, এই দুর্নীতির মামলায় এসএসসি-র ভূমিকা কখনই ঠিক ছিল না। তারা যখন জানতে পারে দুর্নীতি হয়েছে তখন চুপ করে ছিল কেন? বিচারপতি বসাকের পর্যবেক্ষণ, ওই সব নিয়োগের মেধাতালিকা বা ওয়েটিং লিস্টে নাম না থাকা ব্যক্তিরা চাকরি পান বলে অভিযোগ। তখনই নিজেদের আইন প্রয়োগ করে সুপারিশপত্র বাতিল করতে পারত এসএসসি। কেন তারা আদালতের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করছিল? এই সব প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি এসএসসি।

Court Calcutta High Court Recruitment SSC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy