Advertisement
E-Paper

অস্বস্তিতে শুভেন্দু, অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ তুলে নিল কলকাতা হাই কোর্ট, চারটি মামলায় যৌথ সিট গঠন করে তদন্তের নির্দেশ

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করে নিল কলকাতা হাই কোর্ট। চারটি মামলায় রাজ্য সরকার এবং সিবিআইকে সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করতে বলা হয়েছে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:০০
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে অস্বস্তিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে অস্বস্তিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করে নিল কলকাতা হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা চারটি মামলায় রাজ্য সরকার এবং সিবিআইকে যৌথ ভাবে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্ত শুরু করতে বলা হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছেন।

২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর শুভেন্দুকে অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ দিয়েছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। তাতে বলা হয়েছিল, হাই কোর্টের অনুমতি ছাড়া শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করতে পারবে না রাজ্য। কোনও এফআইআর দায়ের করা যাবে না। এর ফলে একাধিক অভিযোগ উঠলেও বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে এত দিন পুলিশ এফআইআর রুজু করতে পারেনি। তাঁর বিরুদ্ধে চাইলেও পদক্ষেপ করা যায়নি। শুক্রবার বিচারপতি সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, কোনও অন্তর্বর্তিকালীন নির্দেশ দীর্ঘ দিন ধরে চলতে পারে না। তাই এই রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া, তাঁর বিরুদ্ধে যে ১৫টি মামলা ছিল, তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি এ-ও জানিয়েছেন, শুক্রবারের নির্দেশের প্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতা বা তাঁর আইনজীবীদের কিছু বলার থাকলে আগামী সোমবারের মধ্যে আদালতে লিখিত ভাবে তা জানাতে হবে।

আদালতের নির্দেশের ফলে এত দিন শুভেন্দুর বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার যে সমস্ত পদক্ষেপ করতে পারেনি, তাতে এখন আর বাধা রইল না বলে মনে করা হচ্ছে। একাধিক মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা যেতে পারে। তার ভিত্তিতে পদক্ষেপও করতে পারে পুলিশ। আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তিন-চার বছর ধরে যে বাধাটা ছিল, সেটা আর থাকছে না। উনি বেশি মস্তানি করে বেড়াতেন, সেটা এ বার বন্ধ হবে। ওঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি ছিল, তার ভিত্তিতে যদি পুলিশ এখন এফআইআর রুজু করে এগোতে চায়, এগোবে।’’

বিরোধী দলনেতার অভিযোগ ছিল, তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক এফআইআর করছে পুলিশ। ছোটবড় যে কোনও ঘটনার সঙ্গে তাঁর নাম জড়ানো হচ্ছে। এফআইআরগুলিকে ভুয়ো বলে উল্লেখ করে ২০২১ এবং ২০২২ সালে দু’বার হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু। সেই সময়ে বিচারপতি মান্থা এফআইআরগুলিতে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেন এবং জানান, আদালতের অনুমতি ছাড়া নতুন করে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর আর করা যাবে না। রাজ্য সরকার সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল। তবে শীর্ষ আদালত এ বিষয়ে হাই কোর্টের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করেনি।

শুভেন্দুর আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘বিচারপতি সেনগুপ্ত অধিকাংশ এফআইআর বাতিল করে দিয়েছেন। চার-পাঁচটি এফআইআর শুধু বাতিল করা হয়নি। আদালত জানিয়েছে, সিবিআই এবং রাজ্য পুলিশের সিনিয়র অফিসারদের নিয়ে সিট গঠন করতে হবে। তাঁরা ওই মামলাগুলির তদন্ত করবেন। আগের মামলাগুলির নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়েছে। তাই একে ঠিক রক্ষাকবচ প্রত্যাহার বলা চলে না।’’ ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। তার আগে রাজ্য সরকার নানা ভাবে বিরোধী দলনেতার গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবে বলে আশঙ্কা শুভেন্দুর আইনজীবীর। রাজ্য পুলিশের কাজে আস্থা নেই বলেই সিবিআইকে সিটে শামিল করা হয়েছে, দাবি তাঁর। এ প্রসঙ্গে কল্যাণের কটাক্ষ, ‘‘শুভেন্দু যদি হাজারটা অপরাধ করেন, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে হাজারটা এফআইআর হবে। মুড়িমুড়কির মতো এফআইআর হবে। উনি তো বিশেষ কোনও ব্যক্তি নন। পুলিশ যা করার করবে।’’

Suvendu Adhikari BJP Calcutta High Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy