আসানসোলের সিবিআইয়ের আদালতে শুক্রবার সকালে আত্মসমর্পণ করে এনামুল। ফাইল ছবি।
গরুপাচার কাণ্ডে মূল চক্রী এনামুল আত্মসমর্পণ করল শুক্রবার। আসানসোলের সিবিআইয়ের আদালতে শুক্রবার সকালে আত্মসমর্পণ করে এনামুল। কলকাতা থেকে সিবিআইয়ের একটি টিম আসানসোলের পথে রওনা হয়েছে। সম্প্রতি বিএসএফ জওয়ান সতীশ কুমারকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সেখান থেকে এনামুল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পায়। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি এ বার এনামুল-সতীশকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হবে? এই মামলার আইনজীবী ১৪ দিনের সিবিআই হেফাজত চেয়েছেন। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শুনানি চলছে। পাশাপাশি বিএসএফ জওয়ান সতীশ কুমারকেও আসানসোল জেল থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। এই শুনানির পর সতীশ কুমারের শুনানি শুরু হবে। সিবিআই সূত্রে খবর, সতীশ-এনামুল দু'জনকেই ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইছে।এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এনামুলের আইনজীবীরা তার জামিনের জন্য জোর সওয়াল করছেন। তাঁদের বক্তব্য, এনামুল দিল্লি থেকে অগ্রিম নিয়ে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি ছিল। তাই তাকে গ্রেফতার করা যাবে না। অন্য দিকে, সিবিআই আইনজীবী এনামুলের সিবিআই হেফাজত ও ও সতীশ কুমারের জেল হাজত চেয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, আদালত এই রায় দিলে তারা প্রমাণ লোপাট করতে পারে।চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
সম্প্রতি গরুপাচার কাণ্ডে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয় মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী এনামুল হককে। এর আগেও সিবিআই এনামুলকে গ্রেফতার করেছিল সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর কামান্ডান্টকে ঘুষ দেওয়ার মামলায়। গ্রেফতারের পর জামিনে ছিল এনামুল। করোনা হয়েছে বলে বারবার হাজিরা এড়াচ্ছিল। শেষে করোনা রিপোর্টও নেগেটিভ আসে। তা সত্ত্বেও হাজিরা দিচ্ছিল না। এর পর শুক্রবার সকালে আত্মসমর্পণ করে। সূত্রের খবর, সতীশ এবং এনামুলকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে।
গরু পাচার চক্রে পরের পর তল্লাশিতে উঠে আসা তথ্য দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারেরাই। তাঁদের দাবি, গরু পাচারের টাকায় এক দিকে যেমন সতীশ কুমারের মতো বিএসএফ-কর্তা বিপুল সম্পত্তি করেছে, তেমনই এনামুলের মতো পাচারকারীরা অজস্র বেনামি সংস্থা খুলে কয়েকশো কোটি টাকার লেনদেন চালিয়েছে। তল্লাশির পরে গরু-সোনা-মাদক পাচারের লতায়-পাতায় জড়িয়ে থাকা সম্পর্কের হদিস মিলেছে বলে তদন্তকারী সংস্থার দাবি। সেই সূত্রে একে একে এই চক্রের সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তারা।
আরও পড়ুন: ডাকলে চোখ খোলার চেষ্টা করছেন, সঙ্কটজনক হলেও স্থিতিশীল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য
এনামুলের কলকাতার কয়েকটি ঠিকানা, আস্তানা এবং মুর্শিদাবাদের কয়েকটি স্থানে তল্লাশি চালানো হয়। সিবিআইয়ের দাবি, এনামুল গরু পাচারের পাশাপাশি চাল কল, বাংলাদেশে চাল-পেঁয়াজ রফতানি, আবাসন ও নির্মাণ শিল্প, পাথর খাদান, বালির কারবারে যুক্ত। তার একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৩০ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। অন্য একটি অ্যাকাউন্টে ১০ লক্ষ ডলার রাখা ছিল। এ ছাড়া নামে-বেনামে বহু সম্পত্তির হদিস মিলেছে। সিবিআই কর্তারা জানাচ্ছেন, দু’একটি অ্যাকাউন্টে এই পরিমাণ টাকা থাকলে এনামুল বাহিনীর হাতে কী পরিমাণ নগদ রয়েছে, তা সহজেই অনুমেয়।
শেষ পর্যন্ত শুক্রবার এনামুল আত্মসমর্পণ করায় আদালত কী নির্দেশ দেয়, সে দিকেই সব পক্ষের নজর।
আরও পড়ুন: জরুরি ব্যবহারে ফাইজার টিকাকে ছাড়পত্র এ বার আমেরিকাতেও
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy