কল ডেটা রেকর্ডস (সিডিআর) চাওয়া হয়েছিল, তা তারা দেয়নি। এটা আদালত অবমাননারই শামিল বলে বুধবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিয়ে অভিযোগ করেছে সিবিআই। তাদের চাহিদামতো সিডিআর যাতে দেওয়া হয়, ওই দুই সংস্থাকে সেই নির্দেশ দেওয়ার জন্যও সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব মলয় দে-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলাতেই হলফনামা পেশ করে সিবিআই জানিয়েছে, শুধু সারদাকাণ্ডের ক্ষেত্রে নয়, আদালত অবমাননার প্রেক্ষিতেও এই অভিযোগ গুরুতর। এ দিন শীর্ষ আদালতে ১০টি মোবাইল নম্বর জমা দিয়ে সিবিআইয়ের যুক্তি, রাজ্য পুলিশের কাছে ওই ১০টি নম্বরের ২০১২ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত সময়ের সবিস্তার সিডিআর চাওয়া হয়েছিল। সারদা তদন্তের ক্ষেত্রে ওই সিডিআর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অল্প কিছু দিনের সিডিআর তাদের দেওয়া হয়েছে।
আদালতে সিবিআই জানিয়েছে, ওই ১০টি নম্বরের কোন সময়ের সিডিআর রাজ্য পুলিশ চেয়েছিল, সেটা তারা ওই দুই বেসরকারি মোবাইল পরিষেবা সংস্থার কাছে জানতে চায়। আর ঠিক কোন সময়ের সিডিআর তারা রাজ্য পুলিশকে দিয়েছিল, সেটাও জানতে চায় সিবিআই। তদন্তকারীদের যুক্তি, এটা জানতে পারলে তাঁরা বুঝতে পারতেন, রাজ্য পুলিশের কাছে কত সময়ের সিডিআর ছিল এবং পুলিশ তাঁদের পুরো সিডিআর দিয়েছিল কি না।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
দিনক্ষণ উল্লেখ করে সিবিআই এ দিন সর্বোচ্চ আদালতে জানিয়েছে, সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে এয়ারটেল দফতরে এবং কলকাতার ইউএন ব্রহ্মচারী স্ট্রিটে ভোডাফোনের দফতরে সিবিআইয়ের প্রথম চিঠি যায় ২০১৮ সালের ১২ জুলাই। ওই দু’টি বিষয় ছাড়াও পুলিশের চিঠির প্রতিলিপি চেয়ে পাঠানো হয়। কোন ই-মেলে সিডিআর পাঠানো হয়েছিল, তারও সবিস্তার তথ্য চাওয়া হয়। অভিযোগ, পরের দিনেই চিঠি দিয়ে ওই দুই সংস্থা জানিয়ে দেয়, তাদের পক্ষে সরাসরি এ ভাবে সিডিআর দেওয়া সম্ভব নয়। সিবিআই-কে টেলিকম দফতর (ডিওটি) মারফত আসতে হবে। ১ অগস্ট ডিওটি-কে চিঠি দেয় সিবিআই। ২৩ অগস্ট ডিওটি বলে, সিবিআই বললে হবে না, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে বলতে হবে। পরের দিনই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে বিষয়টি জানায় সিবিআই।
শীর্ষ আদালতে এ দিন সিবিআই জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে ১২ নভেম্বর আবার দুই বেসরকারি সংস্থাকে কেন্দ্রের তরফে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও জবাব আসেনি। সেই চিঠির উল্লেখ করে ১৫ নভেম্বর সিবিআই আবার চিঠি দেয় এয়ারটেল ও ভোডাফোনকে। তাতেও লাভ হয়নি। ৬ ফেব্রুয়ারি আবার দুই সংস্থাকে চিঠি দিয়ে মনে করিয়ে দেওয়া হয়। ১২ ফেব্রুয়ারি ভোডাফেন থেকে এবং ১৯ ফেব্রুয়ারি এবং ১ মার্চ এয়ারটেল থেকে চিঠি আসে সিবিআইয়ের কাছে। সিবিআইয়ের অভিযোগ, যে-নির্দিষ্ট তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়, ওই দুই সংস্থার কাছ থেকে তার উত্তর পাওয়া যায়নি। হলফনামায় সিবিআইয়ের কৌঁসুলি জানান, দুই সংস্থা আশ্চর্যজনক ভাবে চুপ। অন্য কথা লেখা আছে চিঠিতে। সিবিআইয়ের অভিযোগ, এর আগে বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে সিডিআর পেতে সমস্যা হয়নি। কোনও অজ্ঞাত কারণে এ বার হচ্ছে। অভিযোগ, কেন্দ্র বলার পরেও তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। সিবিআইয়ের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তারা তদন্তে নেমেছে। সে-ক্ষেত্রে দুই বেসরকারি সংস্থার এ-হেন আচরণ আদালত অবমাননারই শামিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy