Advertisement
E-Paper

Anubrata Mandal: লাল বাতির ব্যবহারই নিষিদ্ধ, অনুব্রতের গাড়িতে কী ভাবে, প্রশ্ন সিবিআইয়ের

জেলায়ক কখনও জেলাশাসকের অনুমতিক্রমে কোনও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি গাড়ির মাথায় বাতি লাগাতে পারেন ঠিকই, তবে সেই গাড়ি সংশ্লিষ্ট জেলার বাইরে যেতে পারে না। নেহাত যেতে হলে বাতি ঢেকে দিতে হয়। আসানসোলে সম্প্রতি প্রচারে লাল বাতিওয়াসা গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল অনুব্রতের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২২ ০৬:২৭
লাল বাতিওয়ালা সেই গাড়ি।

লাল বাতিওয়ালা সেই গাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।

তিনি মঙ্গলবার বোলপুর থেকে কলকাতায় এলেন রাতে। সাদা গাড়ি। তার মাথায় ঘুরছে লাল বাতি।

তিনি বুধবার সকালে চিনার পার্কের ফ্ল্যাট থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছলেন। কালো গাড়ি। তারও মাথায় জ্বলজ্বলে লাল বাতি।

মন্ত্রী-সান্ত্রিদেরও লাল বাতির গাড়ি ব্যবহার করার কথা নয়। সেখানে রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসের একটি জেলা (বীরভূম) শাখার সম্পাদক অনুব্রত মণ্ডল কী ভাবে লাল বাতিওয়ালা গাড়ি ব্যবহার করেন, প্রশ্ন উঠছে জোরদার। এবং প্রশ্ন তুলছেন সিবিআই অফিসারদের একাংশও।

কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী গাড়িতে লাল বাতির ব্যবহারই নিষিদ্ধ। ব্যক্তিগত গাড়িতে কেউ লাল বাতি ব্যবহার করতে পারবেন না। বাদামি হলুদ বা অ্যাম্বর লাইট ব্যবহারের ছাড়পত্র আছে বিমানবন্দর, বন্দর এবং খনিতে গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহার্য গাড়ির ক্ষেত্রে। অ্যাম্বুল্যান্স, দমকলের মতো জরুরি পরিষেবার গাড়িতে নীল আলো ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীর ক্ষেত্রে ‘মাল্টি কালার্ড লাইট’ বা একত্রে লাল, নীল ও সাদা আলোর ব্যবহারের বিধান আছে। তবে ওই সুবিধা কারা পাবেন, বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তা জানাতে হবে রাজ্য সরকারকে।

মঙ্গলবার রাতে অনুব্রতকে পুলিশি নিরাপত্তার বেষ্টনীতে যে-ইনোভা গাড়িতে কলকাতায় আসতে দেখা গিয়েছে, তার নম্বর ডব্লিউবি ৪৮বি ৪৯৯১। সাদা ইনোভা গাড়িটি বোলপুর এআরটিও-র অধীনে ২০১৭ সালের ২৪ মে রেজিস্টার্ড বা নথিভুক্ত হয়। সাত আসনের গাড়িটির বয়স চার বছর দশ মাস। গাড়িটির মালিক হিসেবে নথিভুক্ত আছে বিদ্যুৎবরণ গায়েনের নাম। তিনিই গাড়ির প্রথম মালিক। ওই গাড়ির কোনও হাতবদল হয়নি বলেই জানা যাচ্ছে। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ওই গাড়ির মাথায় লাল বাতি কী ভাবে এল, উঠছে প্রশ্ন।

বীরভূম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, অনুব্রত কী বাতি নিয়ে গিয়েছেন, তা তাদের জানা নেই। তবে উনি দু’টি কমিশনের চেয়ারম্যান। পদমর্যাদায় সেই দু’টি পদই মন্ত্রীর সমতুল্য। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, অনুব্রত স্টেট রুরাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি এবং পশ্চিমবঙ্গ স্বরোজগার নিগম লিমিটেডের সভাপতি। মন্ত্রীর সমতুল্য ওই পদে থাকলে কি লাল বাতির গাড়ি চড়ে ঘোরা যায়? রাজ্যের মন্ত্রীরাও তো লাল বাতি লাগানো গাড়িতে চড়েন না। এমনকি স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে-গাড়িতে যাতায়াত করেন, তার মাথায় কোনও আলোই থাকে না। ফলে দু’টি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে অনুব্রত কী ভাবে লাল বাতিওয়ালা গাড়ি চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।

রাজ্যের পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, ২০১৭ সালের ১ মে কেন্দ্রীয় সরকারের সর্বশেষ নির্দেশিকা অনুযায়ী যে-তালিকাভুক্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তিরা গাড়ির মাথায় বাতি (লাল নয়) ব্যবহার করতে পারেন, সেই তালিকায় কোনও নিগমের সভাপতির নাম নেই। ফলে অনুব্রতের গাড়ির মাথায় বিশেষ আলো কী ভাবে এল, তার কোনও সদুত্তর দিতে পারছেন না পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরাও।

জেলায়ক কখনও জেলাশাসকের অনুমতিক্রমে কোনও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি গাড়ির মাথায় বাতি লাগাতে পারেন ঠিকই, তবে সেই গাড়ি সংশ্লিষ্ট জেলার বাইরে যেতে পারে না। নেহাত যেতে হলে বাতি ঢেকে দিতে হয়। আসানসোলে সম্প্রতি প্রচারে লাল বাতিওয়াসা গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল অনুব্রতের বিরুদ্ধে।

Anubrata Mandal TMC Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy