কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল আগেই। সেই নির্দেশ মেনে ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের পরে হিংসায় তিন বিজেপি নেতার খুনের মামলার তদন্তভার হাতে নিল সিবিআই। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে তারা। শনিবার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এই কথা জানিয়েছেন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। শাহজাহান এখন তৃণমূল থেকে নিলম্বিত (সাসপেন্ডেড)।
গত ৩০ জুন উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তিন বিজেপি কর্মীর খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। ২০১৯ সালে ওই তিন বিজেপি কর্মীকে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল বর্তমানে তৃণমূল থেকে নিলম্বিত শাহজাহানেরও। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত সিবিআইকে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠনেরও নির্দেশ দেন। এর পরেই ৪ জুলাই এফআইআর দায়ের করে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে জানা গিয়েছে, এফআইআরে শাহজাহান-সহ ২৫ জন সন্দেহভাজনের নাম রয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ৩২৫, ৩৬৪, ৪৪৮ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। সিবিআইয়ের স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ তদন্ত করবে। তদন্তকারী অফিসার হলে ডিএসপি (ডেপুটি সুপার) পদের।
২০১৯ সালের ৮ জুন সন্দেশখালির বাসিন্দা প্রদীপ মণ্ডল, দেবদাস মণ্ডল এবং সুকান্ত মণ্ডলকে খুনের অভিযোগ ওঠে। নিহতেরা তিন জনই বিজেপি কর্মী ছিলেন। ওই খুনের মামলার প্রাথমিক চার্জশিটে নাম ছিল শাহজাহানের। কিন্তু পরে সিআইডির হাতে তদন্তভার গেলে চার্জশিট থেকে তাঁর নাম বাদ যায় বলে দাবি নিহতদের পরিবারের। ২০২২ সালে অপর একটি খুনের মামলাতেও চার্জশিটে শাহজাহানের নাম উঠে এসেছিল। কিন্তু পরে ওই মামলায় তিনি জামিন পেয়ে যান।
২০২৪ সালের গোড়ায় রেশন দুর্নীতির তদন্তে শাহজাহানের বাড়িতে এসে ‘আক্রান্ত’ হন ইডি আধিকারিক ও আধাসেনা জওয়ানেরা। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। অন্য দিকে, এই ঘটনার কয়েক দিন পর থেকেই সন্দেশখালিতে শাহজাহান এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন স্থানীয়দের বড় অংশ। এলাকার অনেকের কৃষিজমি জবরদখল, সেই অধিকৃত জমিতে মাছের ভেড়ি তৈরি, ভেড়ির লিজ়ের টাকা না দেওয়ার মতো অভিযোগ ওঠে শাহজাহান ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় মহিলাদের উপরে নির্যাতনের অভিযোগও ওঠে। প্রতিবাদে রাস্তায় নামে বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলি। সেই আবহে শাহজাহানকে দল থেকেও নিলম্বিত করে তৃণমূল।