উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে ছয় বছর আগের তিনটি খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। ২০১৯ সালে ওই তিন বিজেপি কর্মীকে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল বর্তমানে তৃণমূল থেকে নিলম্বিত শাহজাহান শেখেরও। ওই তিন খুনের মামলায় এ বার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। সিবিআইকে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠনেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালের ৮ জুন সন্দেশখালির বাসিন্দা প্রদীপ মণ্ডল, দেবদাস মণ্ডল এবং সুকান্ত মণ্ডলকে খুনের অভিযোগ ওঠে। নিহতেরা তিন জনই বিজেপি কর্মী ছিলেন। ওই খুনের মামলার প্রাথমিক চার্জশিটে নাম ছিল শাহজাহানের। কিন্তু পরে সিআইডির হাতে তদন্তভার গেলে চার্জশিট থেকে তাঁর নাম বাদ যায় বলে দাবি পরিবারের। শুধু তা-ই নয়, ২০২২ সালে অপর একটি খুনের মামলাতেও চার্জশিটে শাহজাহানের নাম উঠে এসেছিল। কিন্তু পরে ওই মামলায় তিনি জামিন পেয়ে যান।
সন্দেশখালির ভাঙ্গিপাড়া এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ মণ্ডলের বাড়িতে ২০১৯ সালের জুনে একদল সশস্ত্র দুষ্কৃতী হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। প্রদীপ ছিলেন পরিবারের মেজ ছেলে। তাঁকে তাড়া করে নিয়ে গিয়ে গুলি করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। প্রদীপের তুতো ভাই সুকান্তের বাড়িতেও দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছিল। একই কায়দায় তাঁকেও গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সন্দেশখালিরই অপর এক বাসিন্দা দেবদাস মণ্ডলকেও ওই সময় খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন:
২০২৪ সালের গোড়ায় রেশন দুর্নীতির তদন্তে শাহজাহানের বাড়িতে এসে ‘আক্রান্ত’ হন ইডি আধিকারিক ও আধাসেনা জওয়ানেরা। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। অন্য দিকে, ইডির উপর হামলার অভিযোগ ওঠার কয়েক দিন পর থেকেই সন্দেশখালিতে শাহজাহান এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন স্থানীয়দের বড় অংশ। এলাকার অনেকের কৃষিজমি জবরদখল, সেই অধিকৃত জমিতে মাছের ভেড়ি বানানো, ভেড়ির লিজ়ের টাকা না দেওয়ার মতো নানা অভিযোগ ওঠে শাহজাহান ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে স্থানীয় মহিলাদের উপরে নির্যাতনের অভিযোগও প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই প্রতিবাদে রাস্তায় নামে বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলি। সেই আবহে শাহজাহানকে দল থেকেও নিলম্বিত করে তৃণমূল।