ঘোজাডাঙা সীমান্তে অপেক্ষারত ট্রাক।—ছবি সংগৃহীত।
পশ্চিমবঙ্গের ঘোজাডাঙা স্থলবন্দরের অভিবাসন ও সুরক্ষার দায়িত্ব নিজেদের হাতে নিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। একই ব্যবস্থা করে হয়েছে ত্রিপুরার আগরতলা স্থলবন্দরেও। এত দিন রাজ্য পুলিশই ওই দুই বন্দর দিয়ে যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করত। গত ৩ মার্চ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়ে দিয়েছে, এখন থেকে বুরো অব ইমিগ্রেশন (বিওআই) ঘোজাডাঙা ও আগরতলা সীমান্তের যাবতীয় দায়িত্ব বহন করবে। রাজ্য প্রশাসনকে এ কথা জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র।
ঘোজাডাঙা সীমান্তে চোরাচালান, মানুষ পারাপার ও অনুপ্রবেশের ভূরি ভূরি অভিযোগ উঠছিল। এ রাজ্যে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের বেশির ভাগটাই ঘোজাডাঙা দিয়ে হয় বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী দিল্লিকে জানিয়েছিল। রাজ্যের সঙ্গে বৈঠকেও ঘোজাডাঙা নিয়ে সরব হয়েছিল কেন্দ্রের বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থা। বাংলাদেশের সঙ্গে স্থল-বাণিজ্যেও নানা অনিয়মের খবর কেন্দ্রের কাছে পৌঁছচ্ছিল। আগরতলা স্থলবন্দরেও নিরাপত্তার শৈথিল্যের অভিযোগ গিয়েছে কেন্দ্রের কাছে। সেই জন্যই
এই দু’টি স্থলবন্দরের অভিবাসন সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ বুরো অব ইমিগ্রেশনকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এক দশক আগেও স্থলবন্দরগুলির নিরাপত্তা ও অভিবাসনের ভার ছিল রাজ্যগুলির হাতে। ধীরে ধীরে কেন্দ্র সেগুলির দায়িত্ব নিজেদের হাতে নিতে থাকে। ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া নামে একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা গড়ে সরকার সীমান্ত-বাণিজ্য এবং তার পরিকাঠামো তৈরিতে জোর দেয়। বেশ কয়েকটি স্থলবন্দরের পরিকাঠামো নির্মাণের কাজও সম্প্রতি শেষ হয়েছে। বৈদ্যুতিন পদ্ধতিতে সেই সব বন্দরের বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কিন্তু এখনও বেশ কিছু বন্দরের নিরাপত্তা ও অভিবাসন রয়েছে রাজ্য পুলিশের হাতে।
নবান্নের খবর, রাজ্যের দু’টি বিমানবন্দর কলকাতা ও বাগডোগরা, দু’টি নদী-বন্দর কলকাতা ও হলদিয়া এবং একটি রেলওয়ে চেকপোস্ট চিৎপুরের দায়িত্ব রয়েছে কেন্দ্রীয় অভিবাসন বিভাগের হাতে। গেদে, জয়গাঁও, হরিদাসপুর ও পেট্রাপোলের অভিবাসন আর নিরাপত্তাও সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
আটটি চেকপোস্ট ছিল রাজ্য পুলিশের হাতে। চ্যাংড়াবান্ধা, ফুলবাড়ি, পানিটাঙ্কি, রাধিকাপুর, হিলি, মহদিপুর, লালগোলা ও ঘোজাডাঙায় অভিবাসনের দায়িত্ব পালন করে পুলিশ। সীমান্ত সংক্রান্ত সব চেয়ে বেশি অভিযোগ এই সব চেকপোস্ট থেকেই আসে বলে দাবি মন্ত্রক-কর্তাদের। সেই জন্য আপাতত ঘোজাডাঙা নিজেদের হাতে নিল কেন্দ্র। ভবিষ্যতে পানিটাঙ্কি, হিলি সীমান্তের দায়িত্বও কেন্দ্র নিজেদের হাতে নিতে চাইছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy