বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন প্রকল্পের (এফএমবিএপি) জন্য কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রক ১২৯০ কোটি টাকা দিয়েছে রাজ্যকে। এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত প্রকল্পে আর্থিক সহায়তার কোনও প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে বকেয়া নেই বলে টুইটে দাবি করল কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রক। টুইটে মন্ত্রক স্পষ্ট করে দিয়েছে, ভারত এবং ভুটানের প্রতিনিধিদের নিয়ে তিনটি দল সীমান্ত এলাকার নদীগুলির সমস্যা নিয়ে কাজ করছে। যে দলে রাজ্যের প্রতিনিধিরাও রয়েছেন।
গত রবিবার উত্তরবঙ্গে বিপর্যয় প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বারংবার বলা সত্ত্বেও ভারত-ভুটান নদী কমিশন তৈরি হয়নি। যার জেরে ভুগতে হচ্ছে উত্তরবঙ্গকে। তাঁর আরও অভিযোগ, কেন্দ্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে টাকা দেয়নি এবং গঙ্গা অ্যাকশন প্রকল্পের টাকাও আটকে রেখেছে। মঙ্গলবার রাতে জলশক্তি মন্ত্রকের টুইটে ভারত-ভুটান নদী কমিশন তৈরি নিয়ে মন্তব্য করা হয়নি। তবে জানানো হয়েছে, দু’দেশের প্রতিনিধি, বিশেষজ্ঞ এবং প্রযুক্তিবিদদের নিয়ে তৈরি তিনটি দল এই সমস্যার সমাধানে সক্রিয়।
সাম্প্রতিক বিপর্যয়ের পরে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ভুটান থেকে ৭২টি নদী উত্তরবঙ্গের দিকে নামছে। ভুটানের বৃষ্টিপাত মাপার জন্য সেখানে ৫৬টি রেনগেজ স্টেশন বসানোর প্রস্তাব কেন্দ্রকে পাঠানো হয়েছে। ওই সব নদীর জল ডলোমাইট-সহ নানান আবর্জনা নিয়ে উত্তরবঙ্গের নদীগুলোয় এসে মেশায় নাব্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পলি সংস্কার-সহ বহুবিধ বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজে কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না বলেও একাধিক বার অভিযোগ করেছেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।
মন্ত্রকের টুইট-বক্তব্য, ভুটানের পারোয় দুই দেশের বিশেষজ্ঞদের সাম্প্রতিক বৈঠকে হাসিমারাঝোরা, রোকিয়া, বাসরা-সহ ভুটান থেকে পশ্চিমবঙ্গে আসা নতুন আটটি নদীর ক্ষয় ও পলির সমস্যা খতিয়ে দেখা হয়েছে। মন্ত্রকের দাবি, চলতি বছরে দু’ দেশের কারিগরি বিশেষজ্ঞদের (জয়েন্ট টেকনিক্যাল টিম) পরবর্তী বৈঠকে ওই সব নদীর সমস্যা নিয়ে যাতে রিপোর্ট দেওয়া হয়, সে ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দু’দেশের বন্যার পূর্বাভাস পাওয়ার বিষয়েও কেন্দ্র কাজ করছে বলে টুইটে দাবি। তাদের দাবি, গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান ও নমামি গঙ্গে প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের জন্য ৬২টি প্রকল্পে পাঁচ হাজার ছ’শো আটচল্লিশ কোটি টাকার বেশি ধার্য করা হয়েছে।
এই টুইট সম্পর্কে মানস বলেন, ‘‘২০২৫-’২৬ সালে গোটা দেশের জন্য ৪৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কেন্দ্র কোন খাতে আমাদের এত টাকা দিল, বলে দিক। পারোর বৈঠকে আমাদের প্রতিনিধি ছিলেন ঠিকই, কিন্তু কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী নিজেই বলে দিয়েছেন কমিশন তাঁরা তৈরি করবেন না। তা হলে আর কী মত দেব। পলি উত্তোলন, নদীর ক্ষয় বা বন্যা নিয়ন্ত্রণে কোনও টাকা দেওয়া হয়নি।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)