নোট বাতিলের ধাক্কায় কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তাল ঠোকাঠুকির সেই মোক্ষম সময়েই গুরুত্বপূর্ণ একটি কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের পূর্বাঞ্চলীয় অফিস পশ্চিমবঙ্গে গড়ার প্রস্তাব পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের অধীন ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি) তাদের পূর্বাঞ্চলীয় অফিস তৈরি করতে চাইছে এই রাজ্যে। কলকাতা বা কলকাতার আশেপাশে প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে পূর্বাঞ্চলীয় দফতর গড়ে তুলতে
চাইছে তারা। ওই সংস্থার কাজকর্মের মধ্যে আছে স্কুলপড়ুয়াদের জন্য পাঠ্যবই প্রকাশ, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া, বুনিয়াদি শিক্ষা বিকাশের প্রকল্প চালানো ইত্যাদি। সেই সঙ্গে ‘ই-পাঠশালা’ কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা অনলাইনে পাঠ্যবই, অডিও এবং ভিডিও রেকর্ডিং বিতরণ করে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের জন্য।
এনসিইআরটি-র মূল দফতর দিল্লিতে। তাদের পূর্বাঞ্চলীয় দফতর এখন রয়েছে ভুবনেশ্বরে। স্কুলশিক্ষা দফতরের খবর, ওই দফতরের উপরে চাপ এত বেড়ে গিয়েছে যে, আয়তন বাড়ানোর প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। কেন্দ্র চাইছে, বর্ধিত কলেবরের সেই দফতর পশ্চিমবঙ্গে গড়ে তোলা হোক। পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য এবং আন্দামান-নিকোবরও এই শাখা অফিসের আওতায় থাকবে।
রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, গত মাসেই এই বিষয়ে প্রস্তাব এসে পৌঁছয়। ‘‘হ্যাঁ, এমন প্রস্তাব দফতরে এসেছে,’’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। স্কুলশিক্ষা দফতরের ওই সূত্রে জানা গিয়েছে, এনসিইআরটি-র পূর্বাঞ্চলীয় দফতরের জন্য বাংলাকে বেছে নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে কেন্দ্রীয় প্রস্তাবে। তাতে বলা হয়েছে, পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অনেক রাজ্য ওই দফতরের অধীনে থাকবে। তাই দফতরের অবস্থান এমন কোনও জায়গায় হওয়া প্রয়োজন, যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব ভাল। যেখানে সড়কপথে ও রেলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল। কলকাতা সে-দিক থেকে আদর্শ বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হলেই চলবে না। ওই দফতর গড়ে তোলার জন্য এক লপ্তে জমি চাই ৫০ বিঘে। কলকাতা বা তার আশেপাশে এই ধরনের জমি কোথায় আছে, তা খুঁজে বার করার জন্য রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে ইতিমধ্যে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।