রাজ্যের আবাসন পরিকাঠামো উন্নয়ন পর্ষদ (হিডকো)-এর নতুন চেয়ারম্যান করা হল অর্থ ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ সফরে রওনা হওয়ার আগেই মঙ্গলবার সকালে এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করে নবান্ন। দু’এক দিনের মধ্যে চন্দ্রিমা আনুষ্ঠানিক ভাবে হিডকো ভবনে গিয়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বলে খবর। নতুন দায়িত্ব পেয়ে চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘আমায় এর জন্য উপযুক্ত মনে করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সে জন্য আমি কৃতজ্ঞ। জান-প্রাণ দিয়ে এই দায়িত্ব পালন করব।’’
প্রসঙ্গত, পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম ২০২১ সাল থেকেই হিডকোর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। কিন্তু গত ডিসেম্বরে রাজ্য মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফিরহাদকে সরানো হয়েছিল। তার পর থেকে হিডকোর কাজ সামলাচ্ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। মঙ্গলবার চন্দ্রিমাকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হল।
আরও পড়ুন:
ফিরহাদকে সরানোর পর্বে শাসকদল তৃণমূল এবং প্রশাসনিক মহলেও নানাবিধ জল্পনা তৈরি হয়েছিল। সেই পর্বে ফিরহাদ বলেছিলেন, ‘‘এটা মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত। আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এখন উনি দায়িত্বটা আমার কাছ থেকে নিয়ে নিয়েছেন। এর মধ্যে কোনও গুঞ্জন নেই। এটা ক্যাবিনেটের ডিসিশন (মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত)। উনি কোনও কারণে নিশ্চয়ই নিয়েছেন।’’ রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, হিডকোকে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অধীনে আর রাখা হবে না। আনা হবে প্রশাসনিক সংস্কার এবং কর্মিবর্গ দফতরের (পার) অধীনে। যে দফতর রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতার হাতে। বাম আমলে হিডকো ছিল আবাসন দফতরের অধীনে। আবাসনমন্ত্রী হওয়ার সুবাদে সিপিএমের গৌতম দেব দীর্ঘদিন ছিলেন হিডকোর চেয়ারম্যান। মমতার শাসনের গোড়া থেকেই অবশ্য হিডকোকে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অধীনে আনা হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে হিডকোর ‘অভিভাবক’ বদল হয়। সাধারণত যে কোনও বড় প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের নেপথ্যেই রাজনৈতিক ভাবনা থাকে। হিডকোর চেয়ারম্যান পদে চন্দ্রিমাকে নিয়োগ ঠিক কোন লক্ষ্যে তা স্পষ্ট না-হলেও একটি বিষয় পরিষ্কার যে, প্রশাসনের অন্দরে উত্তর দমদমের তৃণমূল বিধায়ক চন্দ্রিমার গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেল। চন্দ্রিমা অর্থ ও স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী। ওই দুই দফতরের মূল কাজ তাঁকে সামলাতে হয়। রাজ্যের বাজেটও পেশ করেন তিনিই। আবার সাংগঠনিক ক্ষেত্রে তিনি মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী। এ বার সেই সঙ্গেই যোগ হল হিডকোর চেয়ারম্যান পদও।