Advertisement
E-Paper

ডিএ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিঁধলেন বামেদেরই

বৃহস্পতিবার এ ভাবেই দুই দলকে একই সঙ্গে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:০২
ইলামবাজারের সভামঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

ইলামবাজারের সভামঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

সিপিএম রাজ্যে ৩৪ বছরে কিছুই করেনি। আর বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসে রাজ্যে যা ছিল, তা-ও কেড়ে নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার এ ভাবেই দুই দলকে একই সঙ্গে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা চলতি মাসেই দেওয়া হবে বলে বীরভূমের ইলামবাজারের কামারপাড়ায় বাউল এবং লোক উৎসবের সূচনালগ্নে প্রকাশ্য সভায় ফের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের আর্থিক সঙ্কটের কথা টেনে এনে তিনি বলেন, “টাকা নেই, তা সত্ত্বেও বাদবাকি ডিএ জানুয়ারি মাসের মধ্যে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে সরকারি কর্মচারীদের।’’ বামেরা বেতন কমিশন চালু করার জন্য আন্দোলন করছে। সরাসরি সে কথা না বলেও মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, “কেউ কেউ চিৎকার করবে ‘দাও দাও’। ৩৪ বছরে তুমি তো ছিলে। তুমি কী করেছ?’’ একই সঙ্গে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব মমতা বলেন, ‘‘বিজেপি তুমি তো কেন্দ্রে আগে ছিলে, এখনও আছো। সব কেড়ে নিচ্ছ, দিচ্ছ না কিছু।’’

গত বছর জুন মাসে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ১ জানুয়ারি (চলতি বছরের) থেকে ১৮% মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হবে। ১০% অন্তবর্তী সুবিধাকে (ইন্টারিম রিলিফ) ৭% মহার্ঘ ভাতা হিসেবেও দেওয়া হবে তার সঙ্গে। অর্থাৎ, সরকারি হিসেব অনুযায়ী, মোট ২৫% মহার্ঘ ভাতা যুক্ত হবে কর্মচারীদের জানুয়ারি মাসের বেতনের সঙ্গে। এত দিন পর্যন্ত রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার পরিমাণ ছিল ১০০%। চলতি মাস থেকে তা হল ১২৫%। এ দিনের সভায় সে কথাই স্মরণ করিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

প্রবল আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে কী ভাবে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হবে? মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাবা বলতেন, যে খায় চিনি, তারে জোগায় চিন্তামণি। আমাকেও সেই ভেবে কাজ করতে হচ্ছে। এই অবস্থার মধ্যেও ১ লক্ষ ৩০ হাজার সিভিক ভলান্টিয়ারের নিয়োগ হয়েছে। সাড়ে তিন হাজার থেকে বেড়ে তাঁদের বেতন হয়েছে আট হাজার টাকা। প্যারা-টিচার, স্কুল টিচার, আইসিডিএস, আশা কর্মী সবার জন্যই করা হয়েছে।’’

তৃণমূল প্রভাবিত কর্মী সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বায়ক সৌম্য বিশ্বাস বলেন, ‘‘অর্থনৈতিক এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তিনি নিজের ঘোষণা মতো মহার্ঘ ভাতা ১২৫ শতাংশে পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁকে ধন্যবাদ।’’

তবে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘সরকার যদি এই ভাতা দিতে রাজিই থাকে, তা হলে ওই দাবি নিয়ে নবান্নে যে কর্মীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন, তাঁদের গ্রেফতার ও বদলি করা হল কেন?’’ কো-অর্ডিনেশন কমিটির রাজ্য সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহ বলেন, ‘‘ঘোষণায় কিছু নেই। ইন্টারিম রিলিফকে মহার্ঘ ভাতায় পরিণত করার নজির গোটা দেশে নেই। এতে কম-বেশি অনেকেরই বেতন কমবে।’’

কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত বছর জুন মাসে জামাইষষ্ঠীর দিন এই ঘোষণাই করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নির্দেশিকা প্রকাশ করে মহার্ঘ ভাতা মামলায় তা পেশও করেছিল সরকার। সব কর্মীই তখন তা জেনে গিয়েছিলেন। আজকের ঘোষণায় নতুনত্ব কিছু নেই।’’ একই বক্তব্য বিজেপির সরকারি কর্মচারী পরিষদেরও। সংগঠনগুলির দাবি, ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা ছিল ৭৫%। সে জায়গায় কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ছিল ১২৫%। তার ভিত্তিতে সপ্তম বেতন কমিশন পেয়ে যান কেন্দ্রীয় কর্মীরা। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি এ রাজ্যে কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা পৌঁছেছে ১২৫ শতাংশে। যা হওয়ার কথা ছিল দু’বছর আগেই।

DA State Government Employees Chief Minister Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy