বিহারের ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশে আশ্বস্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেসের দায়ের করা মামলার আগে তিনি চাপ বজায় রাখলেন নির্বাচন কমিশনের উপরে। নাম না-করে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘কান খুলে শুনে রাখুন, অনেক লড়াই করেছি! অধিকারের এই লড়াইও আমরা করব।’’ পাশাপাশি তাঁর পাল্টা আশ্বাস, ‘‘নিশ্চিন্তে থাকুন। আমি আছি পাহারাদার হিসেবে!’’
প্রাক্-স্বাধীনতা দিবসে, বৃহস্পতিবার একাধিক অনুষ্ঠানে এসআইআর এবং বাংলা-বাঙালি বিতর্কেই সরব ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এসআইআর-এর নামে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে সন্ধ্যায় বেহালার অনুষ্ঠানে মমতা বলেন, ‘‘আজ সকলের মধ্যে ভয়। সেটা স্বাভাবিকও। বিহার একটু স্বস্তি (ভোটার তালিকা সংশোধনে নথি হিসেবে আধার কার্ডের মান্যতা) পেয়েছে। একটি রাজ্যের জন্য যা হয়েছে, আশা করি, অন্য রাজ্যও তা পাবে।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট আধার কার্ডকে নথি হিসেবে মান্যতা দিয়েছে। এই রায়ে আমি একটু আশ্বস্ত।’’ সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের আদেশের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘হঠাৎ শুনলাম, এসআইআর হবে। বুঝতে পারলাম না, তার মানে কী! নজর রাখতে হবে।’’
‘কন্যাশ্রী দিবসে’র অনুষ্ঠানেও বাংলা নিয়ে এ দিন সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে ‘কন্যাশ্রী’র দ্বাদশ বর্ষ উদযাপনে এসে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশভাগের সময়ে উদ্বাস্তু হয়ে এক কাপড়ে চলে এসেছিল যারা, তাদের তো দেশের নাগরিক বলে গণ্য করা উচিত। যারা দেশের নাগরিক নয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবশ্যই পদক্ষেপ করা উচিত ভারত সরকারের। যদিও এটা আমাদের হাতে নেই। কিন্তু অযথা কেন করা হবে এ সব?’’ বাংলা ও বাঙালি নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে এ দিনও সরাসরি বিজেপিকে নিশানা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। স্বাধীনতা আন্দোলনে বাঙালির ভূমিকা মনে করিয়ে মমতা বলেন, ‘‘এখন বাংলা ভাষা শুনলেই নাকি খারাপ লাগছে! মুম্বইয়ে বাঙালি শ্রমিকের কান কেটে নেওয়া হয়েছে!’’ বাঙালি পরিচয় জেনে সন্তান-সহ এক জনকে নয়ডার একটি হোটেল থাকতে দিতে অস্বীকার করার যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপরে অত্যাচারের অভিযোগও তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘মগের মুলুক পেয়েছে? আমরা যদি অন্য রাজ্য থেকে আসা লোকেদের আশ্রয় দিতে পারি, তা হলে আমাদের শ্রমিকদের উপরে অত্যাচার কেন?’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)