Advertisement
E-Paper

‘প্রতিশোধস্পৃহা যেন মাতৃভূমিকে রক্তাক্ত না করে’, হিংসা থামাতে যৌথ বিবৃতি বিদ্বজ্জনদের

বাড়তে থাকা সেই হিংসা আর রোষের অবসানে এ বার আসরে নামলেন বিদ্বজ্জনদের একাংশ। ইস্তাহার নামের এক বিবৃতিতে তাঁরা জানিয়েছেন…

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২০:২৩
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

পুলওয়ামার জঙ্গি নাশকতায় ৪০ জওয়ানের মৃত্যুর ঘটনা এখনও টাটকা জনমানসে। সেই ক্ষোভ বিভিন্ন জায়গায় আছড়ে পড়ছে জনরোষ হিসেবে। সেই রোষ অনেক সময়ই কোনও বাঁধ বা বাধা মানছে না। রোষ থেকে তা অনেক সময়ই হিংসায় পরিণত হয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক দিনে সেই চিত্র সামনে এসেছে বার বার।

বাড়তে থাকা সেই হিংসা আর রোষের অবসানে এ বার আসরে নামলেন বিদ্বজ্জনদের একাংশ। ‘ইস্তাহার’ নামের এক বিবৃতিতে তাঁরা বলেছেন…

‘‘১৪ ফেব্রুয়ারি আমাদের ইতিহাসে এক অত্যন্ত দুঃখজনক দিন। সে দিন নৃশংস জঙ্গীদের হাতে আমাদের সেনাবাহিনীর একচল্লিশ জন সেনা নিহত হন। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করি। নিহত জওয়ানদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাই।

সেই সঙ্গে এও আমাদের বিশ্বাস জঙ্গীদের কোনো দেশ হয় না, কোনো ধর্ম হয় না, কোনো রাষ্ট্র বা ভাষা হয় না। সন্ত্রাসবাদীরা প্রকৃতপক্ষে মানবতার শত্রু। আজ এই সন্ত্রাসবাদীরা ছড়িয়ে আছে সারা দেশময়। আমাদের পাড়ায় পাড়ায় পর্যন্ত এই ভাবনা সংক্রামিত হচ্ছে। এরা সাধারণ মানুষকে হিংসাত্মক কার্যকলাপে প্রবৃত্ত করে। আমরা দেখছি অনেক সময়ে ঘৃণ্য কাজে প্রবৃত্ত হতে বাধ্যও করে। হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধতা আমাদের যেন নরসংহার যজ্ঞের দিকে কোনোমতেই ঠেলে না দেয়।

কোনো বিশেষ ধর্মাবলম্বী বা কোনো বিশেষ রাজ্যে বসবাসকারী আমারই সহনাগরিকের দিকে আঙুল তুলে আমরা যে নিজেদের মানবিক বোধকে হীনতার দিকে টেনে না নিয়ে যাই। এ আমাদের অঙ্গীকার।

আরও পড়ুন: মতান্তরকে আমরা সমাজে পীড়ন করিতেছি... ১১০ বছর আগে লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ, ঠিক যেন আজকেরই কথা

বিভিন্ন রাজ্যে মানুষে মানুষে যে ভেদাভেদের রাজনীতি শুরু হয়েছে আমরা তার অবসান চাই। প্রতিবাদের মুখকে স্তব্ধ করে দেওয়ার অপচেষ্টাকে যেন মাথা উঁচু করে নিন্দা করতে আমরা ভীত না হই।

নিহত বাবলু সাঁতরার স্ত্রী এবং ভ্রাতার উক্তিকে সমর্থন করে আমরা বলতে চাই ‘আমরা সাধারণ নাগরিকেরা যুদ্ধের বিপক্ষে। যুদ্ধ কোনো সমাধান হতে পারে কিনা সেকথা ভাববার সময় এসেছে। প্রতিশোধস্পৃহা আমাদের মাতৃভূমিকে যেন রক্তাক্ত না করে।’’

আরও পড়ুন: প্রতিরোধ শুরু হতেই পিছু হটছে অপপ্রচার

বিদ্বজ্জনদের পক্ষে এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন শঙ্খ ঘোষ, জয় গোস্বামী, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, শাঁওলী মিত্র, জয়া মিত্র, গৌতম ঘোষ, হোসেনুর রহমান, মনোজ মিত্র, দেবেশ চট্টোপাধ্যায় সহ আরও অনেকে।

আরও পড়ুন: লড়াই ঘৃণার বিরুদ্ধেই, অভূতপূর্ব ঐক্যে মিলে গিয়েছে সব দল

সাধারণ মানুষের একাংশের তরফে প্রতিহিংসার ছবি শুধু পুলওয়ামায় নিহত জওয়ান বাবলু সাঁতরার স্ত্রীকে লক্ষ্য করেই ছিল, এমনটা নয়। গত কয়েক দিন ধরেই এই জনরোষ দেখা গিয়েছে কোচবিহার থেকে কৃষ্ণনগর, বারাসত থেকে বিরাটি, কৃষ্ণনগর থেকে তমলুক… সর্বত্রই। কখনও অন্ধ দেশপ্রেম, কখনও ছেলেধরা গুজব, কখনও নিছক সন্দেহ, সুযোগ পেলেই বেরিয়ে এসেছে জনরোষ। পুলিশ ও প্রশাসনের কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়ে গিয়েছে গণপিটুনি, প্রহার, গালিগালাজ। সোশ্যাল মিডিয়ার পরিসর ছাড়িয়ে তা কখনও নেমে এসেছে প্রকাশ্য রাস্তায়, পৌঁছে গিয়েছে সরাসরি কোনও বাড়ির প্রবেশপথে, অন্দরমহলেও। সেই হিংসায় লাগাম টানতে গত কয়েক দিন ধরেই পাল্টা প্রচার চালাচ্ছিলেন সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ। এ বার সেই প্রতিবাদে সামিল হলেন বিদ্বজ্জনদের একাংশও।

আরও পড়ুন: ছেলেধরার গুজবে গণপ্রহার ঠেকিয়ে হেনস্থা শিক্ষকের

Fake News Pulwama Attack Shankha Ghosh Rumour
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy