Advertisement
E-Paper

গরম রুখে দেবে মেঘ ও বাষ্প, আশায় দক্ষিণবঙ্গ

একটু একটু করে নরম হচ্ছে প্রকৃতির মেজাজ! দিনের বেলা গরম থাকলেও নাকাল করা ভাবটা নেই। সন্ধ্যা থেকে রাতের দিকে একটা ঠান্ডা হাওয়া বইছে। সেটাই বুঝিয়ে দিচ্ছে, ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে কোথাও কোথাও। কলকাতায় না-হোক, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বৃষ্টি হচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৬ ০৩:০২
স্বস্তির স্নান। ধর্মতলায় প্রদীপ আদকের তোলা ছবি।

স্বস্তির স্নান। ধর্মতলায় প্রদীপ আদকের তোলা ছবি।

একটু একটু করে নরম হচ্ছে প্রকৃতির মেজাজ!

দিনের বেলা গরম থাকলেও নাকাল করা ভাবটা নেই। সন্ধ্যা থেকে রাতের দিকে একটা ঠান্ডা হাওয়া বইছে। সেটাই বুঝিয়ে দিচ্ছে, ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে কোথাও কোথাও। কলকাতায় না-হোক, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বৃষ্টি হচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যেমন আকাশ কালো করে, ঘনঘন বিদ্যুৎ চমকের সঙ্গে বৃষ্টি নামে পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায়। শেষ পর্যন্ত খুব বেশি বর্ষণ না-হলেও তাপমাত্রা অনেকটা কমে যায় রাতে। শুক্রবারেও সন্ধ্যায় আকাশের পশ্চিম কোণে জমেছিল মেঘ। কোথাও কোথাও বয়েছে ঝোড়ো বাতাস। আগামী কয়েক দিন দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বজ্রগর্ভ মেঘ এবং সেই সূত্রে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। উত্তরবঙ্গে ভরা বৈশাখেও কমবেশি বৃষ্টি হয়েই চলেছে। আগামী কয়েক দিন সেখানে কিছু এলাকায় ভারী বৃষ্টিরও পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।

আলিপুর হাওয়া অফিস বলছে, সপ্তমে চড়ে যাওয়া মেজাজের রাশ টেনে প্রকৃতি যে এ ভাবে সুর নরম করছে, তার পিছনে আছে নিম্নচাপ অক্ষরেখা ও ঘূর্ণাবর্তের হাতযশ। কয়েক দিন আগে নিম্নচাপ অক্ষরেখা ও ঘূর্ণাবর্তের হাত ধরেই দক্ষিণবঙ্গের শুকনো গরম কেটেছিল। বঙ্গোপসাগর থেকে জোলো হাওয়া ঢুকেই ক্ষান্ত হয়নি, সেই জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ডেকে এনেছিল বৈশাখী ঝড়বৃষ্টি। শহর কলকাতাও সেই শান্তিবারির ভাগ পেয়েছে কমবেশি।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া মন্ত্রকের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গোকুলচন্দ্র দেবনাথ শুক্রবার জানান, ঘূর্ণাবর্তটি উত্তরবঙ্গের দিকে সরে গিয়েছে। ফলে উত্তরের পথ ধরেছে নিম্নচাপ অক্ষরেখাটিও। ‘‘উত্তরবঙ্গে আগামী কয়েক দিন জোরালো বৃষ্টি হতে পারে। দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে,’’ পূর্বাভাস গোকুলবাবুর।

দক্ষিণবঙ্গে জোরালো ভাবে ঝড়বৃষ্টির আশ্বাস দিতে না-পারলেও আবহবিদেরা বলছেন, জলীয় বাষ্পের সুবাদে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তাপমাত্রা অনেকটাই প়ড়তির দিকে। এ দিন আকাশে ঝকঝকে রোদ থাকলেও কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি উঠতে পারেনি। যা কিনা এই সময়ের স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি বেশি। আবহবিদেরা বলছেন, গরমকালে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ২-৩ ডিগ্রি বেশি থাকাটাই দস্তুর। এপ্রিল জুড়ে ‘লু’ বা গরম হাওয়া বয়েছে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে, এমনকী কলকাতাতেও। মহানগরে তাপপ্রবাহ বয়েছে দফায় দফায়। তবে বাঁকুড়ায় প্রায় রোজই তাপপ্রবাহ চলছিল। গত কয়েক দিনে সেখানেও স্বস্তির হাওয়া বয়েছে। এ দিন সেখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯.১ ডিগ্রি, চলতি সময়ে এটা স্বাভাবিকই। ৪০ ডিগ্রির কোঠা পেরোতে পারেনি শ্রীনিকেতন, আসানসোল, বর্ধমানের তাপমাত্রাও।

রে়ডার-চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, বাড়তি জলীয় বাষ্পের ফলে এ দিনও গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় খণ্ড খণ্ড মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়েছে। কোনও কোনও এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বয়েছে, বৃষ্টিও হয়েছে। নিম্নচাপ অক্ষরেখা আর ঘূর্ণাবর্ত উত্তরে সরে গেলেও জলীয় বাষ্প আর মেঘপুঞ্জের দাক্ষিণ্যই দক্ষিণবঙ্গে ফের গরমের দাপাদাপি রুখে দিতে পারবে বলে আশা করছেন আবহবিদেরা। তাঁরা বলছেন, বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি পরিমাণে থাকলে এমনিতেই তাপমাত্রা বাড়তে পারে না। তার উপরে বিকেলের দিকে নিয়মিত স্থানীয় ভাবে ঝড়বৃষ্টি হতে থাকায় কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলবে।

‘‘এপ্রিল জুড়ে পারদের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির দরুন যে-অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা আপাতত নেই,’’ আশ্বাস দিচ্ছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এক শীর্ষ কর্তা।

south bengal summer heat rain
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy