— ফাইল চিত্র।
রেমাল ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ছ’জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। কারও মাথায় গাছ পড়ে, তো কারও মাথায় বাড়ির কার্নিস ভেঙে, কেউ আবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও প্রচুর। রেমালের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকার কথা জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, রাজ্য প্রশাসনের তরফে আর্থিক সহায়তা মৃতদের পরিবারের কাছে পৌঁছে যাবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
রবিবার রাতে বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আছড়ে পড়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল। সাগরদ্বীপ এবং খেপুপাড়ার মধ্যবর্তী অংশে বাংলাদেশের মোংলার কাছ থেকে ঝড় স্থলভাগে প্রবেশ করেছিল। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলেছিল ‘ল্যান্ডফল’ প্রক্রিয়া। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উপকূলবর্তী এলাকায়। কলকাতা শহরেও বহু অংশে গাছ পড়ে, বিদ্যুতের খুঁটি উপরে বিপত্তি ঘটেছে। কলকাতার পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলাতেও ঝড়ের তাণ্ডব চলে। ঘূর্ণিঝড় চলে গেলেও তার প্রভাবে সোমবার সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। কোথাও ভারী বৃষ্টি, তো কোথাও আবার মাঝারি। একইসঙ্গে বইছে ঝোড়ো হাওয়া।
রেমালের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সমবেদনা জানিয়েছেন মমতা। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ নদীমাতৃক রাজ্য, বঙ্গোপসাগরের উপকূলে। প্রতি বছরই তাই আমাদের নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয়। এ বারও সাইক্লোন ‘রেমালে’র প্রভাবে আমাদের রাজ্যে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হল এবং হচ্ছে। কিন্তু সবার উপরে মানুষের জীবন। সৌভাগ্যক্রমে এবং অবশ্যই রাজ্য প্রশাসনের তৎপরতায় এবার জীবনহানি তুলনামূলক ভাবে অনেক কম।’’
তার পরেই মমতা লেখেন, ‘‘নিহতদের পরিবারবর্গকে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই, তাঁদের নিকটজনের হাতে অবিলম্বে আর্থিক সহায়তা পৌঁছবে। ফসলের ও বাড়িঘরের যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণের বণ্টনও আইন-মোতাবেক প্রশাসন এখনই দেখে নেবে।’’ তিনি এ-ও জানান, নির্বাচনী আচরণবিধি উঠে গেলে সরকার এই সব বিষয়ে আরও গুরুত্ব দিয়ে পুরোটা বিবেচনা করবে।
বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রশাসনের ভূমিকায় খুশি মমতা। তিনি জানান, নির্বাচনী বন্দোবস্তের ব্যস্ততা সত্ত্বেও সর্ব স্তরে আমাদের প্রশাসন দুর্যোগ মোকাবিলায় সকলে সংহত ভাবে সব সময় মানুষের পাশে থেকেছে। ভবিষ্যতেও থাকবে। দু’লক্ষ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় ১৪০০ শিবিরে সরানোর কৃতিত্ব পুরসভা এবং পঞ্চায়েতগুলিকে দিয়েছেন তিনি।
সোমবার রাজ্যের দুই জেলায় লাল সতর্কতাও জারি রয়েছে। মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ঝড়ের গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার। সাময়িক ভাবে দমকা হাওয়ার বেগ পৌঁছে যেতে পারে ৮০ কিলোমিটার পর্যন্তও। এই দুই জেলায় সোমবার ৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার কলকাতা ছাড়াও হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূমে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই জেলাগুলিতে ঝড়ের গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy