Advertisement
E-Paper

বল বিলি হয়নি? উত্তরে ‘না’ শুনে ক্ষিপ্ত মুখ্যমন্ত্রী

গোড়া থেকে বেশ খোশমেজাজেই ছিলেন তিনি। গীতাপাঠের চেয়ে ফুটবল খেলা কতটা জরুরি, স্বামীজির কথা টেনে দিব্যি বুঝিয়েও দিচ্ছিলেন। কিন্তু তাল কাটল বলের কথা উঠতেই। বৃহস্পতিবার নামখানার ইন্দিরা ময়দানে সুন্দরবন গোল্ড কাপের পুরস্কার বিতরণী সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে তখন সুন্দরবনের নানা প্রান্ত থেকে আসা কয়েকশো ফুটবলার বসে।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৫ ০৩:৩৯
কেন বল বিলি হয়নি? জেলাশাসক শান্তনু বসুকে (নীল শার্ট) ধমক মুখ্যমন্ত্রীর। নামখানার ইন্দিরা ময়দানে দেবাশিস রায়ের তোলা ছবি।

কেন বল বিলি হয়নি? জেলাশাসক শান্তনু বসুকে (নীল শার্ট) ধমক মুখ্যমন্ত্রীর। নামখানার ইন্দিরা ময়দানে দেবাশিস রায়ের তোলা ছবি।

গোড়া থেকে বেশ খোশমেজাজেই ছিলেন তিনি।

গীতাপাঠের চেয়ে ফুটবল খেলা কতটা জরুরি, স্বামীজির কথা টেনে দিব্যি বুঝিয়েও দিচ্ছিলেন। কিন্তু তাল কাটল বলের কথা উঠতেই।

বৃহস্পতিবার নামখানার ইন্দিরা ময়দানে সুন্দরবন গোল্ড কাপের পুরস্কার বিতরণী সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে তখন সুন্দরবনের নানা প্রান্ত থেকে আসা কয়েকশো ফুটবলার বসে।

‘‘তোমরা বল পাওনি?’’— গলা তুলে জানতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

সমস্বরে উত্তর— ‘‘না-আ-আ।’’

সোজা প্রশাসনের কর্তাদের দিকে ঘুরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের বলের প্রোগ্রাম হয়নি?’’

কর্তারা মুখ চাওয়া-চাওয়ি করতে থাকেন। দেখে নিমেষে চোখ-মুখের ভাষা বদলে যায় মমতার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক শান্তনু বসু এবং পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী মঞ্চেই ছিলেন। তাঁদের ডেকে মমতা জানতে চান, বল দেওয়া হয়েছে কি না। উত্তর শুনেই মাইক থেকে সরে যান তিনি। হাত-পা নেড়ে রীতিমতো উষ্মা প্রকাশ করতে থাকেন। বিপদ বুঝে চট করে মঞ্চে উঠে আসেন ডিজি জিএমপি রেড্ডি। সকলে বুঝিয়ে-সুজিয়ে মমতাকে ঠান্ডা করেন।

জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, ক’দিন আগেই নবান্ন থেকে ক্লাবগুলিকে বল দেওয়ার নির্দেশ চলে এসেছিল। সময়াভাবে তা আর হয়ে ওঠেনি। এ দিন অনুষ্ঠান শুরুর আগে শুধু মঞ্চ থেকে খেলোয়াড়দের দিকে কয়েকটি বল ছুড়ে দেওয়া হয়েছিল। তাতে চিঁড়ে ভেজেনি, বলাই বাহুল্য।

মমতা পরে ঘোষণা করেন, প্রতিটি ক্লাবকে ৯-১০টি করে ফুটবল
দেওয়া হবে। জার্সি ও খেলাধুলোর সরঞ্জামও সরবরাহ করা হবে। খেলাধুলোর সঙ্গে যুক্ত যে সব ছেলেমেয়ের জন্য রাজ্য সরকার সাইকেলের ব্যবস্থা করছে। এ জন্য ৪০ লক্ষ সাইকেল তৈরি করা হবে। যা শুনে সরকারি কর্তাদের অনেককেই মুখ চাওয়া-চাওয়ি করতে দেখা গিয়েছে। কোথায় কী ভাবে এত সাইকেল তৈরি হবে, মুখ্যমন্ত্রীও তা বলেননি। তবে যুব দফতর, পুলিশ ও ক্রীড়া বিভাগকে এই দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন।

তৃণমূলেরই কিছু জেলা নেতার মতে, আগামী বিধানসভা ভোটে বড় জয় ধরে রাখতে গেলে তরুণ প্রজন্মের মন পেতে হবে, মমতা তা ভালই জানেন। তাই ক্লাব বা খেলাধুলোর ক্ষেত্রে টাকা দিতে তিনি কোনও রকম কার্পণ্য করছেন না। মমতার অবশ্য বলেন, ‘‘আমিও মাঝে-মাঝে টুকটাক খেলি। দিনে পনেরো কিলোমিটার হাঁটি। খেলাধুলোর কোনও বয়স নেই। ওতে মনমেজাজ ভাল থাকে।’’ তবে তাঁদের সরকার ক্ষমতায় এসেই যে রাজ্যের ৭ হাজার ক্লাবকে প্রথম দফায় দু’লক্ষ ও পরের দফায় এক লক্ষ করে টাকা দিয়েছে, তা তিনি মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি।

প্রয়াত সাঁতারু মাসাদুর রহমানের স্ত্রী ও ময়দানে চোট পেয়ে মৃত তরুণ ক্রিকেটার অঙ্কিত তিওয়ারির মাকে রাজ্য সরকার চাকরি দেবে বলেও মমতা এ দিন ঘোষণা করেন। যা শুনে প্রাক্তন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী, সিপিএমের কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘মাসাদুর সুভাষ সরোবরে রাজ্য ক্রীড়া দফতরের অধীনস্থ কোচ ছিলেন। সরকারি চাকরি করতেন। ফলে ওঁর স্ত্রী তো সরকারি নিয়মেই চাকরি পাবেন। মুখ্যমন্ত্রীর কৃতিত্ব কোথায়, তা তো বুঝলাম না!’’

shubhashis ghatak cm scolds district administration mamata at namkhana football distribution programme sundarban gold cup
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy