কুকথার স্রোত নেই। থাকল ঠান্ডা জল আর ওআরএস।
মনোনয়ন কেমন চলছে দেখতে মঙ্গলবার শালবনি ব্লক অফিস চত্বরে এসেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তাঁকে দেখে এগিয়ে গেলেন জনা কয়েক তৃণমূল কর্মী। ঠান্ডা জলের বোতল আর ওআরএসের প্যাকেট দিলেন। এমন সৌজন্য দেখে দিলীপও বললেন, ‘‘বাহ্, ধন্যবাদ আপনাদের।’’ পরক্ষণেই দিলীপের পরামর্শ, ‘‘আপনারা মনোনয়ন করুন, করছেন নিশ্চয়ই।’’ তৃণমূল কর্মীরা তাঁকে আশ্বস্ত করেন, ‘‘আমাদের মনোনয়ন সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে। আপনি চিন্তা করবেন না!’’
মঙ্গলবার দুপুর। শালবনিতে পারদ তখন ৪০ ডিগ্রির উপরে। ব্লক অফিসের অদূরে তৃণমূলের ব্লক কার্যালয়ে ছিলেন দলের ব্লক সভাপতি নেপাল সিংহ। তাঁর দাবি, ‘‘এটাই আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি।’’
এ দিন প্রথমে কেশিয়াড়িতে যান দিলীপ। তারপর খড়্গপুর ১, কেশপুর, মেদিনীপুর সদর ও শালবনি। দিলীপের নালিশ, ‘‘বিডিও অফিসের কাছে ১৪৪ ধারা জারি করেছে কমিশন। আমরা তো মানছি। তৃণমূল কোথায় মানছে?’’ সঙ্গে জুড়েছেন, ‘‘অনেক বিডিও খুব ভাল ব্যবস্থা করেছেন। পুলিশের সহযোগিতা রয়েছে। আমরা চাই ১৫-১৬ তারিখ অবধি এ রকম ব্যবস্থা থাকুক।’’ শালবনি থেকে দিলীপ আসেন মেদিনীপুর (সদর) বিডিও অফিসে। সেখানে ছিলেন মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক জুন মালিয়া, দলের জেলা চেয়ারম্যান দীনেন রায়ও। জুন শুনিয়েছেন, ‘‘আমাদের বেশিরভাগ মনোনয়ন হয়ে গিয়েছে।’’ কেশিয়াড়িতে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে এসে সটান মনোনয়ন কেন্দ্রে ঢুকে পড়েন দিলীপ। নিরাপত্তারক্ষী ছাড়াও সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন বিজেপি নেতা। বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। সকাল ১০টা ৩৯ নাগাদ দিলীপ যখন যান তখন কেউ মনোনয়ন দিতে আসেননি।
কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী মনোনয়ন কেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে প্রার্থী, প্রস্তাবক, প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট ছাড়া কেউ ঢুকতে পারবেন না। কেশিয়াড়ির তৃণমূল নেতা ফটিকরঞ্জন পাহাড়ি বলেন, ‘‘আমরা কমিশনকে জানিয়েছি।’’ পশ্চিম মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতিও বলেন, "১০০ মিটারের মধ্যে ঢোকা যায় না।’’ সোমবার নারায়ণগড় ব্লক অফিসের ১০০ মিটারের মধ্যে তৃণমূলের ক্যাম্প দেখে কমিশনে বিধিভঙ্গের অভিযোগ করেছিলেন দিলীপ নিজেই। এ দিন তিনি বলেন, "আমি এখানকার সাংসদ। অফিস খোলেইনি তখন। এগারোটার আগে গিয়েছিলাম।"
মেদিনীপুরে সদর বিডিও চত্বরে মুখোমুখি হন জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান দীনেন রায় এবং জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি অরূপ দাস। কী কথা হল? দীনেনের জবাব, ‘‘বললাম মনোনয়নে সমস্যা হলে যেন জানায়।’’ অরূপের বক্তব্য, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। সেটাই বললাম।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)