Advertisement
E-Paper

ভাতা ‘নিয়েও’ প্রাইভেট প্র্যাকটিস!

স্বাস্থ্য দফতর নতুন করে নির্দেশ দিয়ে জানায়, সরকারি চিকিৎসকদের বাইরে প্র্যাকটিসের জন্য ছাড়পত্র পেতে স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা কিংবা স্বাস্থ্য অধিকর্তার কাছে আবেদন করতে হবে।

— প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৫:৫২
Share
Save

বাইরে চিকিৎসা করেন না বলে সরকারি ভাতা (নন-প্র্যাকটিসিং অ্যালাওয়েন্স) নেন। অথচ, বেসরকারি জায়গায় ‘প্র্যাকটিস’ করছেন এবং ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পে অস্ত্রোপচার করছেন বলে অভিযোগ। এমন ১৯ জন সরকারি চিকিৎসকের নামের তালিকা প্রকাশ করল স্বাস্থ্য দফতর। যদিও অভিযুক্ত চিকিৎসকদের অধিকাংশেরই দাবি, তাঁরা ওই ভাতা নেন না ও তা সরকারকে জানিয়েছেন।

শুক্রবার প্রকাশিত সে তালিকায় দুই মেদিনীপুরের চিকিৎসকের সংখ্যা সর্বাধিক (পূর্ব মেদিনীপুরের ন’জন ও পশ্চিমের তিন জন)। বাকিরা মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া, নদিয়া, হাওড়া, হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার। ১২ ও ২০ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ তদন্ত কমিটির সামনে ওই ১৯ জনকে প্রয়োজনীয় নথি-সহ হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। রাজ্যের এক স্বাস্থ্য কর্তার কথায়, ‘‘নন-প্র্যাকটিসিং ভাতা নিয়ে নার্সিংহোমে স্বাস্থ্যসাথীতে অস্ত্রোপচার বা অন্য চিকিৎসা করছেন ওই চিকিৎসকেরা। স্বাস্থ্যসাথীর নথিতে নাম থাকায় সহজেই তাঁদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে।’’

পূর্ব মেদিনীপুরের তাম্রলিপ্ত মেডিক্যালের অভিযুক্ত ৭ চিকিৎসকই ভাতা নেন না দাবি করে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন। মেডিক্যালের অধ্যক্ষ শর্মিলা মল্লিকও বলেন, “ওঁরা কেউ ভাতা নেন না। সরকারি দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগও নেই।’’ নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদেরও একই বক্তব্য। জঙ্গিপুরের সুপার কাশীনাথ পাঁজাও বলেন, ‘‘যে ডাক্তারের কথা বলা হচ্ছে তিনি নন-প্র‍্যাকটিসিং ভাতা নেন না।’’ তালিকায় নাম থাকা পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটির দুই চিকিৎসকের আবার দাবি, লিখিত ভাবে জানানোর পরেও ভাতা দেওয়া হচ্ছিল। তবে বছর দেড়েক আগে তা বন্ধ হয়েছে। তা হলে কেন তলব? স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘যাঁরা বলছেন ভাতা নেন না, তদন্ত কমিটির সামনে নথিপত্র দিয়ে প্রমাণ করুন।’’

পশ্চিম মেদিনীপুরের যে তিন চিকিৎসকের নাম তালিকায় রয়েছে তাঁরা প্রত্যেকেই হাসপাতালে ‘অনিয়মিত’ বলে অভিযোগ। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গীর বক্তব্য, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখছেন।’’ তালিকায় নাম থাকা পুরুলিয়ার এক চিকিৎসক যদিও সাড়ে তিন বছর আগেই ইস্তফাপত্র দিয়ে ‘আনঅথরাইজ়ড লিভে’ রয়েছেন বলে জানান কর্তৃপক্ষ।

সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রসূতি-মৃত্যুতে ফের সরকারি হাসপাতালে সিনিয়র চিকিৎসকদের ভূমিকায় প্রশ্ন ওঠে। তার পরে স্বাস্থ্য দফতর নতুন করে নির্দেশ দিয়ে জানায়, সরকারি চিকিৎসকদের বাইরে প্র্যাকটিসের জন্য ছাড়পত্র পেতে স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা কিংবা স্বাস্থ্য অধিকর্তার কাছে আবেদন করতে হবে।

অভিযুক্ত ১৯ চিকিৎসক সরকারি হাসপাতালে কাজের সময় অনুপস্থিত থেকে বেসরকারি হাসপাতালে প্র্যাকটিস করেছেন কি না, তা দেখবে কমিটি।‘সার্ভিস ডক্টর’স ফোরাম’-এর সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, ‘‘চাকরিতে যোগ দেওয়া এবং পদোন্নতির সময়ে নন-প্র্যাক্টিসিং ভাতা নেওয়া বা না নেওয়ার বিষয়ে জানাতে হয়। মাঝে জানানোর বিষয় নেই। কারা ভাতা ছাড়তে চাইছেন, কারা নিতে চাইছেন—নতুন ভাবে আবেদনের পরে পদক্ষেপ করা উচিত।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Doctors West Bengal health department Government Allowance

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}