Advertisement
E-Paper

অধীরের নেতৃত্বে জমায়েতে ‘শক্তি’ দেখাল মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস, দফতরে রইলেন না জেলা পরিষদের সভাধিপতি

আরজি কর, শাসকদল তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে যখন বঙ্গ রাজনীতি আবর্তিত হচ্ছে, তখন ‘অক্ষ’ বদলের লক্ষ্যে ‘মানুষের দাবি’ নিয়ে রাস্তায় নামতে চেয়েছিল অধীরের জেলার কংগ্রেস। সাংগঠনিক ভাবে সেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল প্রায় দেড় মাস আগে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৫২
Adhir Chowdhury

কংগ্রেসের জমায়েতে বলছেন অধীর চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।

বন্ধ থাকা ১০০ দিনের কাজ চালু করা, ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, লক্ষ্মীর ভান্ডারে টাকা বৃদ্ধির মতো ‘মানুষের দাবি’ নিয়ে বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদ অভিযান ডেকেছিল মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস। অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে সেই কর্মসূচির জমায়েতে শক্তি প্রদর্শন করল কংগ্রেস। কিন্তু স্মারকলিপি গ্রহণ করার জন্য জেলা পরিষদ দফতরে রইলেন না সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা।

এ নিয়ে কটাক্ষ করে অধীর বলছেন, ‘‘জেলাপরিষদের সভাধিপতির কাছ থেকে আগাম সময় নেওয়ার পরেও উনি পালিয়ে গেলেন। এই হল বাংলার গণতন্ত্রের নমুনা।’’ পাল্টা রুবিয়া বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচির জন্য তো সরকারি কর্মসূচি থেমে থাকবে না। দুয়ারে সরকার শিবির চলছে। আমায় একাধিক জায়গায় পরিদর্শনে যেতে হয়েছিল। তা ছাড়া আরও কিছু প্রশাসনিক কর্মসূচিও ছিল।’’

অধীরের দাবি, গত ১২ ডিসেম্বর জেলা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কর্মসূচির দিনক্ষণ জানানো হয়েছিল জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে। তার পর তিনিই জানিয়েছিলেন, জেলা পরিষদে যাঁরা কংগ্রেসের সদস্য রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে তিনি বসে কথা বলতে চান। কারণ, দাবিদাওয়ার প্রসঙ্গে তাঁর প্রস্তুতির প্রয়োজন। ২৭ ডিসেম্বর সেই বৈঠকও হয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার তিনি ছিলেন না।

আরজি কর, শাসকদল তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে যখন বঙ্গ রাজনীতি আবর্তিত হচ্ছে, তখন ‘অক্ষ’ বদলের লক্ষ্যে ‘মানুষের দাবি’ নিয়ে রাস্তায় নামতে চেয়েছিল অধীরের জেলার কংগ্রেস। সাংগঠনিক ভাবে সেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল প্রায় দেড় মাস আগে। বহরমপুরে জেলা পরিষদ দফতরের সামনে কংগ্রেসের জমায়েতে সেই প্রস্তুতির ছাপ লক্ষ্য করা গিয়েছে। যদিও অধীরদের দাবি, কোনও শিষ্টাচার না মেনেই জেলা পরিষদের সভাধিপতি ছিলেন না। অধীরের কথায়, ‘‘কয়েক জন পুলিশ মিলে এক জন কর্মচারীকে ডেকে এনে বলছেন, তাঁর হাতে স্মারকলিপি দিতে। এটা কোনও পদ্ধতি?’’

১০০ দিনের কাজে কেন্দ্রের ‘বঞ্চনা’ নিয়ে রাজ্য সরকার কেন আদালতে যাচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অধীর। তাঁর বক্তব্য, ‘‘১০০ দিনের কাজ একটা অধিকার। বাংলার মানুষের সেই অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। রাজ্য বলছে, কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। কেন্দ্র বলছে, রাজ্য হিসাব দিচ্ছে না। বাস্তবে বাংলার মানুষ কাজ পাচ্ছেন না।’’ লক্ষ্মীর ভান্ডারের অর্থ বৃদ্ধি করে আড়াই হাজার টাকা করার দাবি তুলেছে কংগ্রেস। তাদের প্রশ্ন, পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ড যদি অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়েও আড়াই হাজার টাকা দিতে পারে, তা হলে বাংলা নয় কেন? পাশাপাশিই কংগ্রেসের বক্তব্য, মুসলিমদের তৃণমূল ‘ভোট ব্যাঙ্ক’ হিসাবে ব্যবহার করতে চাইছে। ইমাম এবং মোয়াজ্জেমদের যে ভাতা রাজ্য সরকার দেয়, সেই টাকার অঙ্কও বৃদ্ধি করার দাবি করছে কংগ্রেস। কিছু দিনের মধ্যেই দিল্লিতে বিধানসভা ভোট। সেই ভোটের আগে আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল পুরোহিতদের জন্য মাসিক ১৮ হাজার টাকার ভাতা ঘোষণা করেছেন। কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গেও পুরোহিতদের জন্য ভাতা চালুর দাবি জানিয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও তুলেছে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, ভাঙন নিয়ে বাজেট বরাদ্দ হলেও জেলা পরিষদ নানা ভাবে টেন্ডার (দরপত্র) ডেকেও বাতিল করে দিচ্ছে। কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। জেলা পরিষদকে দুর্নীতির ঘুঘুর বাসা বলে আক্রমণ শানিয়েছেন অধীর। বাংলায় নতুন করে বেকার ভাতাও চালু করার দাবি তুলেছে কংগ্রেস।

কংগ্রেসের দাবি, রাজ্যে ইমামদের মাসিক ১০ হাজার টাকা, মোয়াজ্জেমদের মাসিক সাড়ে ৭ হাজার টাকা করে দিতে হবে। শুধু তা-ই নয়, আবাস যোজনায় ৪ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার দাবিও তুলেছে কংগ্রেস। উল্লেখ্য, এখন রাজ্য সরকার আবাস যোজনায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেয়। অধীরের বক্তব্য, ‘‘কর্নাটক সরকার ৪ লক্ষ টাকা দিতে পারলে বাংলার সরকার দেবে না কেন?’’

Adhir Chowdhury Congress Murshidabad
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy