পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যগুলিতে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর-এর প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু রদবদল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলার প্রস্তুতি শুরু করে দিল কংগ্রেস। দিল্লিতে আজ কংগ্রেসের আইন বিভাগের প্রধান অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের বৈঠক হয়েছে। কংগ্রেস মনে করছে, পশ্চিমবঙ্গের মতো ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে যে ভাবে কমসময়ের মধ্যে এসআইআর প্রক্রিয়া সেরে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে, তাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। আরও বেশি সময় দেওয়া প্রয়োজন। পশ্চিমবঙ্গে ২০০২-এর ভোটার তালিকার ভিত্তিতে যে এসআইআর করা হচ্ছে, তাতেও কিছু বদল দরকার। ২০০২-এর পরে ২০০৮-এ বিধানসভার আসন পুনর্বিন্যাস হয়েছিল। তার ফলে অনেকেরই বিধানসভা কেন্দ্র বদল হয়েছে। ফলে মানুষের ওই ভোটার তালিকায় নাম খুঁজতে অসুবিধা হচ্ছে। ভোটার কার্ড বা এপিক নম্বর দিয়ে ভোটার তালিকায় নাম খোঁজা বা ‘সার্চ’ করা যাচ্ছে না। যাঁদের নাম নেই, নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে তাঁদের নথি দিতে হবে। জন্মের প্রমাণ দিতে হবে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন খাতায়-কলমে যে এক ডজন নথির কথা বলছে, তার অনেক নথিতেই বাবা বা মায়ের নাম থাকে না।
গত কয়েক দিনে পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে জাতীয় কংগ্রেসের আইন বিভাগের নেতাদের আলোচনা চলছিল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার দিল্লির নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছিলেন। শুক্রবার দিল্লিতে কংগ্রেসের আইন বিভাগের প্রধান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির সঙ্গে বৈঠক করেন এআইসিসি-তে পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত নেতা গুলাম আহমেদ মীর ও প্রদেশ কংগ্রেসের এসআইআর কমিটির প্রধান প্রসেনজিৎ বসু। তার পরেই মামলা দায়েরের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে।
বিহারে এসআইআর-এর বিরোধিতা করে আগেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। সেখানে এসআইআর-এর আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এর পরে নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, তামিলনাড়ুর মতো ভোটমুখী রাজ্য-সহ ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর ঘোষণা করেছে। তার বিরুদ্ধে তামিলনাড়ুর শাসক দল ডিএমকে মামলা করেছে। অভিযোগ, এসআইআর-এর নামে কার্যত এনআরসি করা হচ্ছে। কেরল সরকারও মামলা করবে। আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আগে যে মামলা দায়ের হয়েছিল, তার ১১ নভেম্বর শুনানি হবে। নির্বাচন কমিশন আধার গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ জানিয়ে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়েছিলেন। ডিএমকে-র দায়ের করা মামলারও ১১ নভেম্বর শুনানি হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)