Advertisement
E-Paper

অভিযান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে পুলিশ মহলেও

শুক্রবার ভোরে বিমল গুরুঙ্গকে ধরতে গিয়ে এক অভিযানে মারা যান অমিতাভ। রবিবার তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। এ দিন, সোমবার রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ দার্জিলিং সফরে গিয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, গুরুঙ্গকে ধরতে এ পর্যন্ত যে ক’টি অভিযান হয়েছে, সেগুলি সম্পর্কে খোঁজখবর করেন তিনি।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৫৯

অমিতাভ মালিকের মৃত্যুর পরে তিন দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু অভিযান নিয়ে প্রশ্ন থামছে না। পুলিশের একটি মহল, বিশেষ করে অমিতাভের সহকর্মী ও প্রশিক্ষণ-পর্বের সহযোগীদের একাংশ বলছেন, অল্প বয়সী, কম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই এসআই-কে হাতে একটি নাইন এমএম পিস্তল নিয়ে অভিযানের সামনে কেন যেতে দিয়েছিলেন পুলিশের কর্তারা? তিনি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরেছিলেন কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। যা শুনে পুলিশকর্তাদের কেউ কেউ বলছেন, ওঁর এই ধরনের অভিযানের অভিজ্ঞতা ছিল বলেই বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: কবে শেষ হবে বিচার, উঠছে প্রশ্ন

শুক্রবার ভোরে বিমল গুরুঙ্গকে ধরতে গিয়ে এক অভিযানে মারা যান অমিতাভ। রবিবার তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। এ দিন, সোমবার রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ দার্জিলিং সফরে গিয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, গুরুঙ্গকে ধরতে এ পর্যন্ত যে ক’টি অভিযান হয়েছে, সেগুলি সম্পর্কে খোঁজখবর করেন তিনি। আগামী কোনও অভিযানের আগে সমস্ত ধরনের আটঘাঁট বেঁধে নামার কথাও বলেন। রাজ্য পুলিশের বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত বাহিনী কত রয়েছে, তা-ও বিস্তারিত ভাবে জেনে নেন।

ডিজি যে দিন এই তথ্য নিচ্ছেন দার্জিলিঙে পোস্টেড পুলিশকর্তাদের কাছ থেকে, সেই সময়েই অমিতাভর প্রশিক্ষণ-পর্বের সহযোগীদের একাংশ নানা প্রশ্ন তুলেছেন। বলছেন একাধিক ধোঁয়াশার কথাও। ২০১৪ সালের ৮ জুন থেকে ২০১৫ সালের ১৮ মে পর্যন্ত ন’মাস প্রশিক্ষণে ছিলেন অমিতাভ। তাঁর সেই সময়কার সহযোগীদের কথায়, শারীরিক কসরৎ আর আইন বিষয়ক ক্লাস ছাড়া ওই পর্বে অস্ত্র চালানোর বিশেষ সুযোগ তাঁরা পাননি। একে ৪৭, নাইন এমএম পিস্তল, ইনসাস রাইফেল নিয়ে খুব বেশি হলে ১০০ রাউন্ড গুলি চালিয়েছেন তিনি, দাবি এক সহযোগীর। তাঁর আরও দাবি, ন’মাসের প্রশিক্ষণের মধ্যে দু’মাস অমিতাভকে থানায় কাজ করতে হয়েছে। অর্থাৎ, কার্যত মূল প্রশিক্ষণ হয়েছে মাত্র ছ’মাস।

প্রশিক্ষণ শেষ করে দার্জিলিঙে আসেন অমিতাভ। প্রশ্ন উঠেছে, শুক্রবারের অভিযানে যাওয়ার মতো কোনও প্রশিক্ষণ কি তিনি এর পরে নিয়েছেন? পাহাড়ের এক পুলিশকর্তার দাবি, দার্জিলিঙে পোস্টেড হওয়ার পরে অমিতাভকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যদিও তাঁর পুরনো সহযোগীদের দাবি, তেমন কিছু হলে তাঁরা জানতে পারতেন।

একই ভাবে ধোঁয়াশা রয়েছে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরা ও অভিযানে যাওয়া দলগুলির মধ্যে সমন্বয় নিয়েও। অমিতাভের সহযোগীদের অনেকেই বলছেন, বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ভারী হলেও এই ধরনের অভিযানে তা পরাই কর্তব্য। অমিতাভকে সেই ব্যাপারে তাঁর ঊর্ধ্বতনেরা কেন জোর করেননি? প্রশিক্ষিত অস্ত্রধারীরা যেখানে গুরুঙ্গকে ঘিরে আছে বলে সরকারের কাছে রিপোর্ট রয়েছে, সেখানে এই ধরনের কাজ বড় গাফিলতি নয় কি, প্রশ্ন তাঁদের। অমিতাভের পিছনে আরও তিনটি দল ছিল। প্রশ্ন উঠেছে, তারা কি অমিতাভদের দলকে ‘কভার ফায়ার’ দিয়ে সাহায্য করেছে? পাহাড়ের এক পুলিশকর্তা অমিতাভের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে জানান, প্রশিক্ষণ ছিল বলেই তাঁকে দলে রাখা হয়েছিল। সমন্বয়ের অভাব ছিল না বলেই তাঁর দাবি। এক প্রাক্তন পুলিশকর্তার পাল্টা দাবি, সমন্বয় থাকলে অমিতাভের জিপ পুড়িয়ে দেওয়ার সময় পরবর্তী টিম কাছাকাছি পৌঁছে যেত।

Amitava Malik Bimal Gurung Morcha Darjeeling অমিতাভ মালিক
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy