প্রতীকী ছবি।
লৌহকপাটের বাইরে যত, অন্দরে করোনা-আতঙ্ক তার থেকে কিছু কম নয়। কারণ, রাজ্যের কয়েকটি জেলে ধারণক্ষমতার থেকে বন্দি আছেন অনেক বেশি। ফলে ওই ভাইরাস ঠেকানোর অন্যতম পন্থা যে ভিড় এড়ানো, তা মেনে চলার উপায় নেই। এই অবস্থায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলের তিন হাজারের বেশি বন্দিকে আপাতত মুক্তি দেওয়ার উদ্যোগ চলছে। চলতি সপ্তাহেই সেই কাজ শুরু হতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি শরদ বোবদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ জামিনে ও প্যারোলে কিছু বন্দিকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশ রূপায়ণে প্রতিটি রাজ্যে ‘স্টেট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটি’ (সালসা)-র চেয়ারম্যান, সচিব (স্বরাষ্ট্র বা কারা) এবং ডিজি (কারা)-কে নিয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি তৈরি করতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত।
গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তথা সালসা-র এগ্জ়িকিউটিভ চেয়ারম্যান দীপঙ্করের দত্তের নেতৃত্বে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি বৈঠকে বসে। বৈঠকে ছিলেন যুগ্মসচিব (কারা) অদীপকুমার রায়, এডিজি এবং আইজি (কারা) পীযূষ পাণ্ডে, হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল রাই চট্টোপাধ্যায় এবং সালসা-র সদস্য-সচিব দুর্গা খৈতান। এই কমিটি ১০১৭ জন দণ্ডিত বন্দি এবং ২০৫৯ জন বিচারাধীন বন্দিকে যথাক্রমে প্যারোলে এবং অন্তর্বর্তী জামিনে মুক্তি দেওয়ার সুপারিশ করেছে বলে কারা সূত্রের খবর। তিন মাসের জন্য মুক্তি পেতে পারেন ই বন্দিরা। তবে কোনও বন্দি যদি আগে এ ভাবে মুক্তি পেয়ে থাকেন, এই ক্ষেত্রে তাঁর নাম বিবেচিত হবেন না।
পকসো, মহিলাদের যৌন হেনস্থা, রাজ্যের বিরুদ্ধে দাঙ্গাহাঙ্গামা, জাল নোট, শিশু অপহরণ, দুর্নীতি, মাদক পাচার (এ ক্ষেত্রে মাদকের পরিমাণ বিচার্য)— এই ধরনের অভিযোগে বা বাণিজ্যিক ও আর্থিক অভিযোগ এবং ‘গ্যাংস্টার’ আইনে অভিযোগে যাঁরা বন্দি রয়েছেন, তাঁরা অবশ্য মুক্তি পাবেন না। যে-সব বিচারাধীন বন্দি রাজ্যের বাইরের বাসিন্দা এবং যাঁদের বিরুদ্ধে বিদেশি আইনে অভিযোগ রয়েছে, তাঁরাও এই মুক্তির তালিকায় থাকবেন না। এমনই সুপারিশ করেছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি।
প্যারোল ও অন্তর্বর্তী জামিনের ক্ষেত্রে জেল-কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করবেন ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথিরিটি (ডালসা)। তবে বিচারাধীন বন্দিদের অন্তর্বর্তী জামিনের ক্ষেত্রে একাধিক শর্ত থাকবে বলে কারা দফতর সূত্রের খবর। সাত বছর বা তার থেকে কম সময়ের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি এবং ওই একই সাজা হতে পারে, এমন মামলায় বিচারাধীন বন্দি, যে-সব বন্দি তাঁদের অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা পাননি, তাঁদেরও এই সুযোগ দেওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। ২১ মার্চ দমদম সেন্ট্রাল জেলে বন্দিদের তাণ্ডবের কারণ হিসেবে জামিন না-পাওয়ার জটিলতাকেও দায়ী করেছিলেন অনেকে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy