Advertisement
E-Paper

ক্যানসারের সঙ্গে করোনা, ছেলের সঙ্গে বাসে বৃদ্ধা

তবে তার আগে তাঁদের হয়রানির অভিজ্ঞতাই বলে দিচ্ছে করোনা সংক্রমিতদের অবস্থা ঠিক কতটা সঙ্গিন।

কিংশুক গুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৩৮
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ক্যানসার আক্রান্ত বৃদ্ধা। সঙ্গে কোভিড পজ়িটিভ। অভিযোগ, কলকাতার হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা জোটেনি। তাই ছেলের সঙ্গে বাসে চেপেই ঝাড়গ্রামে ফিরেছেন তিনি। ছেলেও করোনা সংক্রমিত।

মা-ছেলে দু’জনই বৃহস্পতিবার ভর্তি হয়েছেন ঝাড়গ্রাম করোনা হাসপাতালে। তবে তার আগে তাঁদের হয়রানির অভিজ্ঞতাই বলে দিচ্ছে করোনা সংক্রমিতদের অবস্থা ঠিক কতটা সঙ্গিন। সেই সঙ্গে সামনে আসছে স্বাস্থ্য বিধি শিকেয় তোলার ছবি, সেখানে করোনা আক্রান্ত ভরা বাসে সফর করছেন। যে বাসে মা-ছেলে ফিরেছেন, সেটিকে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। চালক ও কনডাক্টরেরও করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা হচ্ছে।

লালগড়ের বছর সত্তরের ওই বৃদ্ধা জরায়ুর ক্যানসারে আক্রান্ত। গত বছর ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি থেকে ‘রেফার’ হয়ে চিত্তরঞ্জন ন্যাশন্যাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটে তাঁর চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসা
করিয়ে বাড়ি চলে আসেন, আবার যান। ক’দিন আগে বড় ছেলের সঙ্গে কলকাতায় যান বৃদ্ধা। তাঁর ছেলের দাবি, হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে আউটডোরের বাইরে কার্যত ফুটপাথে অন্য রোগীদের সঙ্গে গাদাগাদি করে থাকতেন তাঁরা। বৃদ্ধাকে ‘রেডিয়েশন’ দেওয়া হচ্ছিল। আর কয়েক সপ্তাহ অন্তর কেমোথেরাপি। পঞ্চম কেমোথেরাপির দিন ছিল বৃহস্পতিবার। তার আগে নিয়মমাফিক মঙ্গলবার বৃদ্ধার ও তাঁর ছেলের করোনা পরীক্ষা করানো হয়। রিপোর্ট মেলে একদিন পরে। ইতিমধ্যে বুধবার বৃদ্ধাকে ‘রেডিয়েশন’ দিতে নিয়ে যাওয়া হয়। তখনই জানা যায়, তিনি করোনা পজ়িটিভ। ছেলের অভিযোগ, ‘‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ‘রেফার’ সার্টিফিকেট ধরিয়ে দায় সারেন। মাকে নিয়ে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে গেলে বলে, স্বাস্থ্যভবনের চিঠি না থাকলে ভর্তি নেওয়া যাবে না। অগত্যা ঝাড়গ্রামে ফেরার সিদ্ধান্ত নিই।’’ বেশি টাকা ছিল না। তাই বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমে ট্যাক্সিতে মাকে নিয়ে গড়িয়া পৌঁছন ছেলে। তারপর দু’জনে ঝাড়গ্রামগামী সরকারি বাসে ওঠেন। সকাল সাড়ে দশটায় ঝাড়গ্রামে নেমেই তাঁরা যান করোনা হাসপাতালে। সারি ওয়ার্ডে নিয়ে গিয়ে তাঁদের কলকাতার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট অনলাইনে মিলিয়ে দেখে ফের করোনা পরীক্ষা করানো হয়। দু’জনেরই রিপোর্ট পজ়িটিভ হওয়ায় করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ঝাড়গ্রামের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, ‘‘আমাদের সাধ্যমতো সবটাই করা হয়েছে। দু’জনেরই চিকিৎসা চলছে।’’

বৃদ্ধার বড় ছেলে বলছেন, ‘‘খেটে খাওয়া গরিব পরিবার আমাদের। কলকাতার ফুটপাথে থেকে মায়ের ক্যানসারের চিকিৎসা করাচ্ছিলাম। বাসে না ফিরলে ফুটপাথেই মরতে হত।’’ বৃদ্ধার ছোট ছেলে বলছেন, ‘‘মাকে নিয়ে দাদা সরকারি বাসে ফিরেছেন। তবে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে গিয়ে দাদা সব জানিয়েছে।’’

দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাসটি রাধানগর ডিপোয় গিয়েছিল। আক্রান্ত মা-ছেলের সফরের কথা জেনে পুলিশ এসবিএসটিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। বাসটিকে জীবাণুমুক্ত করা হয়। তবে বাসের বাকি যাত্রীদের খবর মেলেনি।

Coronavirus in West Bengal Jhargram COVID hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy