Advertisement
E-Paper

বহু ভেজাল ওষুধ ঢুকে পড়েছে ভিন‌্‌রাজ্য থেকে! উত্তরবঙ্গের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বেগ প্রকাশ, ব্যবস্থার নির্দেশ

কোন কোন সংস্থার, কোন কোন ওষুধ ভেজালের তালিকায়, সে ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করতে ওষুধের দোকানের সামনে তালিকা টাঙানোর নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৫ ১৫:৫৭
Counterfeit Medicines from Gujarat and UP have entered theWest Bengal market, CM Mamata Banerjee warns the administration

হাসপাতালে নজরদারির নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বিভিন্ন সংস্থার নামে ৫০-৫৫টি ভেজাল ওষুধ ঢুকে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গে। সেই ওষুধ যাতে সরকারি হাসপাতালে ব্যবহার বা ওষুধের দোকানে বিক্রি না-হয়, সে বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনকে সতর্ক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় উত্তরবঙ্গের ৮টি জেলার প্রশাসনকে নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই ভেজাল ওষুধের বিষয়ে সতর্ক করেন প্রশাসনকে। বিশেষত জেলা ও ব্লক স্তরের স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নজরদারি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘গুজরাত এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে ভেজাল ওষুধ এসেছে। সেগুলি যাতে ব্যবহার না-হয়, তা দেখতে হবে। আমরা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তিন-চার দিন আগে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম। সিএমওএইচ, বিএমওএইচদের বলব, হাসপাতালগুলির স্টোরে সেই সব ওষুধ রয়েছে কি না, তা দেখতে হবে। দরকারে হঠাৎ হানা দিতে হবে।’’ কোন কোন সংস্থার নামে, কোন কোন ওষুধ ভেজালের তালিকায়, সে ব্যাপারে মানুষকে জানাতে ওষুধের দোকানের সামনেও তালিকা টাঙানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

কয়েক মাস আগে ভেজাল স্যালাইন নিয়ে বিস্তর বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের সেই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতরও কম হয়নি। সেই স্যালাইনে আগেই এক জনের মৃত্যু হয়েছিল। অসুস্থ হয়ে পড়া আরও এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে গত সপ্তাহে। মুখ্যমন্ত্রী বুধবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ভেজাল ওষুধের ব্যাপারে মানুষকে অবহিত করতে স্বাস্থ্য প্রশাসনকেই ভূমিকা নিতে হবে।

এ ছাড়াও: জলস্বপ্নে জোর

প্রতিটি বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছোতে কেন্দ্রীয় সরকারের যে প্রকল্প রয়েছে, তার পোশাকি নাম ‘জলজীবন মিশন’। অতীতে তা বাংলায় কার্যকর হলেও গত কয়েক বছর ধরে রাজ্য পৃথক প্রকল্প চালু করেছে, যার নাম ‘জলস্বপ্ন’। সেই প্রকল্প নিয়েই উত্তরবঙ্গের প্রশাসনকে দ্রুত কাজ শেষ করার বার্তা দিলেন মমতা। জনস্বাস্থ্য কারিগরি (পিএইচই) দফতরের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘৫৯২টি প্রকল্প সময়ে শেষ করা যায়নি। তার অধিকাংশই পিএইচই-র। মাঠে-ময়দানে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে কাজটা করতে হবে। ফেলে রাখা যাবে না।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর কাছে রিপোর্ট রয়েছে, বহু জায়গায় মাটি পরীক্ষা না-করেই পাইপ ফেলে দেওয়া হয়। ফলে কাজ থমকে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, ‘‘পাইপ ফেললে জল পৌঁছোতেই হবে।’’ সেই সঙ্গে মনে করিয়ে দেন, কেন্দ্রীয় সরকার জল পৌঁছোনোর প্রকল্পে ৪০ শতাংশ টাকা দেওয়ার কথা বললেও আসলে রাজ্যই ৯০ শতাংশ টাকা দেয়। মমতার যুক্তি, ‘‘আমরা জমি কিনে দিই, পাইপ আমরা দিই, পরিচর্যার খরচ আমাদের। ফলে ৯০ শতাংশ টাকা রাজ্যের যায়।’’ জলস্বপ্নের বকেয়া কাজ দ্রুত শেষ করার ব্যাপারে মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুরের কথা আলাদা ভাবে উল্লেখ করেছেন তিনি তিনি।

কর নিয়েও কড়া

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, কোনও ভাবেই কোনও পুরসভার কর্তৃপক্ষ নিজেদের মতো করে কর বৃদ্ধি করতে পারবেন না। মমতার কথায়, ‘‘বাণিজ্য বৈঠকে করবৃদ্ধি নিয়ে অনেকে অভিযোগ করেছেন। এটা করা যাবে না। আপনারা স্থানীয় প্রশাসন হতে পারেন। কিন্তু বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড় আর শাড়ির চেয়ে গামছা বড় হবে না। মাথায় রাখবেন।’’ কোনও নির্দিষ্ট পুরসভার নাম করেননি মমতা। তবে পরে যখন কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বৈঠকে বলতে ওঠেন, তখন মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে কর বৃদ্ধির অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করেন। হাতে রাখা ফাইল দেখিয়ে রবি বলেন, ‘‘সব মিথ্যা কথা।’’ তার পর আর কথা বাড়াননি মমতাও। রবিকে বলেন, ‘‘ঠিক আছে, বুঝেছি। তুমি ভাল করে চিতল মাছ খাও।’’ কিন্তু রবি জানান, তিনি ইদানীং মাছ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন, নিরামিষ খাবারই খান।’’

Mamata Banerjee Fake Medicines Government hospitals
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy