Advertisement
২২ মার্চ ২০২৩

অপরাধ চক্রের পাণ্ডা দম্পতি ধৃত

মাদক চোরাকারবার থেকে শুরু করে দেহ ব্যবসা চালানো পর্যন্ত নানা অভিযোগে শিলিগুড়িতে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে হাকিমপাড়ার খেলাঘর মোড়ের কাছে এক অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তাদের গ্রেফতার করার সময় পুলিশ এক নাবালিকারও সন্ধান পায়।

ধৃত বাদল ওঁরাও।  ছবি: সন্দীপ পাল।

ধৃত বাদল ওঁরাও। ছবি: সন্দীপ পাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৫ ০৩:২০
Share: Save:

মাদক চোরাকারবার থেকে শুরু করে দেহ ব্যবসা চালানো পর্যন্ত নানা অভিযোগে শিলিগুড়িতে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে হাকিমপাড়ার খেলাঘর মোড়ের কাছে এক অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তাদের গ্রেফতার করার সময় পুলিশ এক নাবালিকারও সন্ধান পায়। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ২২ কেজি গাঁজা, প্রচুর জন্মনিরোধক এবং চারটি মোবাইল। ওই দম্পতির ৯ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত বাদল ওঁরাও ওরফে বুধুর বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে। তবে তিনি ও তাঁর স্ত্রী সম্প্রতি শিলিগুড়িতেই ঘাঁটি গেড়ে এই চক্র চালাত।

Advertisement

শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি থেকে উত্তর পূর্ব ভারতের কয়েকটি রাজ্য পর্যন্ত এই অপরাধ চক্রের জাল ছড়ানো রয়েছে।’’ তিনি জানান, এই দম্পতির বিরুদ্ধে বাইক-গাড়ি চুরি, গাঁজা পাচার, দেহ ব্যবসা চালানোর প্রমাণ মিলেছে। সোনা পাচারের অভিযোগও শোনা যাচ্ছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশের দাবি, ধৃতদের কাছ থেকে পাওয়া মোবাইলে অনেক মেয়ের নাম-ছবি রয়েছে। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, ধৃতরা জেরায় কবুল করেছে, শহরের বেশ কয়েকজন ব্যক্তি নিয়মিত ওই ফ্ল্যাটে যাতায়াত করতেন। শহর ও লাগোয়া এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে ওই মোবাইলগুলি থেকে নিয়মিত কথোপকথনের তথ্যও পেয়েছে পুলিশ। ওই নাবালিকাকে আটক করে জেরা করা হচ্ছে।

বাদলের খোঁজ পুলিশ পায় দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমণ্ডিতে একটি মোটরবাইক দুর্ঘটনার সূত্র ধরে। প্রায় দেড় মাস আগে ওই দুর্ঘটনার পরে প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানান, চার যুবক জখম হয়েছেন। পুলিশ গিয়ে কিন্তু এক জনকেই জখম অবস্থায় পায়। তাঁকে পুলিশই হাসপাতালে ভর্তি করায় ।

Advertisement

বাইকের নম্বরটি শিলিগুড়ির হওয়ায় সব তথ্য শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটকেও জানানো হয়। শিলিগুড়ি থানার আইসি অচিন্ত্য গুপ্ত তদন্তে জানতে পারেন, বাইকটি চোরাই। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (পূর্ব) পিনাকী মজুমদার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে স্পেশাল টিম তৈরি করান। জখম যুবকের উপরে নজরদারিও রাখা হচ্ছিল। এর পরেই পুলিশের হাতে আসে দলের পাণ্ডা বাদলের নাম-ঠিকানা। পুলিশ দলের ছোটখাট কয়েকজনকে গ্রেফতারও করে। কিন্তু বাদলের হদিস পাচ্ছিল না। মঙ্গলবার পুলিশ খবর পায়, বাদল ওই রাতে ওই ফ্ল্যাটে যাবেন। সেই মতো সন্ধ্যায় সাদা পোশাকে অচিন্ত্যবাবু-সহ শিলিগুড়ি থানার কিছু অফিসার এলাকায় ওঁৎ পাতেন। ৩ ঘণ্টা অপেক্ষার পরে বাদল ঢুকতেই পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার করা হয় বাদলের স্ত্রীকেও। পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে এই এলাকা। পাড়ার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, মাঝে মধ্যে ওই ফ্ল্যাটে নতুন তরুণী ও কিশোরীকে দেখা যেত। বাদলের স্ত্রীর দাবি, সকলেই তাঁদের আত্মীয়।

এলাকার কাউন্সিলর কংগ্রেসের সুজয় ঘটক বলেন, ‘‘শান্তিপ্রিয় এলাকা বলেই অপরাধ চক্রের পাণ্ডারা এই জায়গা বাছছেন।’’ তবে এ বার ফ্ল্যাট কিনলে বা ভাড়া নিলে মালিককে সব খতিয়ে দেখতে বলবেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.