প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের কারা এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহকে বিচারক জামিন দেবেন, না কি ইডির আবেদন মেনে হেফাজত মঞ্জুর করবেন, তা নিয়ে কৌতূহল ছিল। মঙ্গলবারই বিচার ভবনে এই মামলার রায় দেওয়ার কথা ছিল বিচারকের। কিন্তু মঙ্গলবার কোর্টে পৌঁছোতেই পারলেন না তিনি। ফলে মঙ্গলবার রায়দান হল না। বুধবার রায় দেবেন বিচারক।
সোমবার রাতভর বৃষ্টি হয় কলকাতা এবং শহরতলিতে। টানা কয়েক ঘণ্টার বর্ষণে শহরের অবস্থা তথৈবচ। কলকাতার বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন। সকাল থেকে বৃষ্টি কমলেও দুপুর পর্যন্ত অনেক জায়গায় জল জমে রয়েছে। অনেককেই রাস্তায় বেরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছোতে হিমশিম খেতে হয়েছে। আবার অনেকে পৌঁছোতেই পারেননি গন্তব্যে। মাঝপথ থেকেই ফিরতে হয় বাড়িতে। কলকাতার বিভিন্ন আদালতে বিক্ষিপ্ত ভাবে জল জমেছে। অনেক আইনজীবী, বিচারক আসতে পারেননি আদালতে। ফলে অনেক মামলার শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে।
গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলেন চন্দ্রনাথ। ইডি তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু আদালত চন্দ্রনাথের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে। তবে কিছু শর্ত চাপিয়েছিল আদালত। জানিয়েছিল, জামিন পেলেও আপাতত নিজের বিধানসভা কেন্দ্র এবং কলকাতার বাইরে আর কোথাও যেতে পারবেন না মন্ত্রী। তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে তাঁকে। যত দিন এই সংক্রান্ত শুনানি শেষ না-হচ্ছে, তত দিন এই নিয়ম মানতে হবে।
গত শনিবার এই মামলার শুনানি ছিল। দু’পক্ষই সওয়াল-জবাব করে। শুধু তা-ই নয়, তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। ইডি রাজ্যের মন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় নথি না-দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল। পাশাপাশি তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ ছিল চন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে। সেই সব যুক্তি দেখিয়ে কারামন্ত্রীকে সাত দিনের জন্য হেফাজতে চেয়ে আবেদন করেছিল ইডি। তবে চন্দ্রনাথের আইনজীবীরা আদালতে জানান, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তের সময় চন্দ্রনাথকে হেফাজতে নেওয়া হয়নি। তার মধ্যেই চার্জশিট জমা পড়েছে। রাজ্যের কারামন্ত্রীর তরফে আদালতে জানানো হয়েছে যে, জুলাই মাসে চন্দ্রনাথকে তলব করেছিল ইডি। সেই সময় তাঁর আইনজীবীরা গিয়েছিলেন। ৪ অগস্ট চন্দ্রনাথকে ফের ডাকা হলে তাঁর আইনজীবী তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে জানাতে চেয়েছিলেন যে, ৭ অগস্ট সব নথি জমা করা হবে। কিন্তু সেই সময় তদন্তকারী আধিকারিক ছিলেন না বলে দাবি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ইডির আইনজীবী পাল্টা দাবি করেছিলেন, “তল্লাশি এবং বয়ান নথিবদ্ধ করার মাঝে পঞ্চম চার্জশিট জমা পড়েছে। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিল। আধিকারিকেরা সেই দিকে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু এর মাঝেও তদন্ত এগিয়েছে।” দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক। মঙ্গলবার রায়দানের কথা ছিল। কিন্তু বিচারক না-আসায় পিছিয়ে গেল মঙ্গলবারের শুনানি।