শারদ-মরসুমের পরেই রাজ্যে বিধানসভা ভোটের বাদ্য সপ্তমে বেজে উঠবে। এই আবহে সাম্প্রতিক সময়ে আর জি কর-কাণ্ড, চাকরি-‘বিক্রি’র মতো যে বিষয়গুলি রাজ্য রাজনীতি তথা সমাজ-জীবনকে তোলপাড় করেছে, সেই সংক্রান্ত বিভিন্ন বইয়ের সম্ভার নিয়ে উৎসবের সময় মানুষের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছতে চাইছে সিপিএম। তাদের দলীয় প্রকাশনী-সহ বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার বই নিয়ে প্রতি বারের মতো এ বারেও কলকাতা-সহ রাজ্য জুড়ে এক হাজারেরও বেশি ‘মার্ক্সীয় সাহিত্য ও প্রগতিশীল পুস্তক বিক্রয় কেন্দ্র’ করেছে সিপিএম।
এ বারে বিপণগুলিতে কী কী বইয়ের সম্ভার রয়েছে, তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, “এটাকে বইয়ের উৎসব বলা যায়। শিশুসাহিত্য, মার্ক্সীয় দর্শনের বই রয়েছে। এর সঙ্গে, আর জি কর-কাণ্ড, নিয়োগ-দুর্নীতি, বেহাল শিক্ষা ব্যবস্থা-সহ নানা বিষয়ে নতুন ১২টি বই প্রকাশিত হয়েছে। আমরা চাই, মানুষ ভাল বই পড়ুন। বই উপহার দিন।” এই ১২টি বইয়ের মধ্যে রয়েছে পার্থপ্রতিম বিশ্বাসের ‘শিক্ষায় সর্বনাশ— প্রজন্মের সংকট’, অম্বিকেশ মহাপাত্রের ‘দড়ি ধরে মারো টান...’ প্রভৃতি। সিপিএম সূত্রের খবর, গত এক বছরে এনবিএ-সহ দলের প্রকাশনা সংস্থা পুজোর মরসুমে ওই ১২টি-সহ মোট ২৬টি নতুন বই প্রকাশ এবং ৫২টি বইয়ের পুনর্মুদ্রণ করেছে। পাশাপাশি, ফিদেল কাস্ত্রো ও কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে তাঁদের বইয়ের সম্ভারও রয়েছে বিপণিতে।
সিপিএম নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনীতির যে বিপদ, তার বিরুদ্ধে বিকল্প সংস্কৃতি ও রাজনীতির বার্তা দিতেই উৎসবের মরসুমে বইকে হাতিয়ার করা হচ্ছে। এই সূত্র ধরেই একটি বই-বিপণির উদ্বোধনে গিয়ে বইয়ের গুরুত্বের কথা বিশেষ ভাবে তুলে ধরেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুও। তিনি বলেছেন, “শিশু-মনের বিকাশের লক্ষ্যে বই পড়ার চর্চা বাড়াতেই হবে। উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা মস্তিষ্কের দখল নিতে চাইছে। এই রাজনীতিকে রুখে দিতে হলে একমাত্র হাতিয়ার হতে পারে বই।”
পাশাপাশি, শহরে সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ার যে বিপুল ক্ষতি হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে সরকারের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত হকার, দোকানদারদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে বই-বিপণিগুলি থেকে ফের সরব হয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)