পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক উন্নতি, শিল্পের হাল-সহ নানা ক্ষেত্রে শ্রীবৃদ্ধির দাবি করা হয়েছে এ বারের রাজ্য বাজেটে। মূলত তাকেই নিশানা করে ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না’ নামে নথি তৈরি করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যাচারে’র অভিযোগে সরব হল সিপিএম। যদিও বাম আমলের বাজেটকে ‘ঠাকুরমার ঝুলি’ বলে পাল্টা নিশানা করেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
রাজ্যের আর্থিক বৃদ্ধি, ঋণ, কৃষি-শিল্পে বিনিয়োগ, অসংগঠিত ক্ষেত্র, দারিদ্র — মূলত এই বিষয়গুলির ‘আসল ছবি’ সামনে রেখে সিপিএম সরব হয়েছে। তথ্য দিয়ে তাদের দাবি, কেন্দ্রের মতো রাজ্যও আর্থিক বৃদ্ধির হার নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। সিপিএমের দাবি, গত রাজ্য-বাজেটে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে রাজ্যের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৭.৬% হবে বলা হলেও এ বারের বাজেট-তথ্য অনুযায়ীই বাস্তবে তা হয়েছে ৬.১%। ঘরোয়া উৎপাদনে সরকারি ঋণের অনুপাতে এই মুহূর্তে পঞ্জাবের পরেই দেশে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭ লক্ষ ৬ হাজার কোটি টাকা।
রাজ্যে শিল্পক্ষেত্রে প্রকৃত বিনিয়োগ কত, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম। ‘বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে’র মাধ্যমে গত সাত বছরে ১৩ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগের কথা বলেছে রাজ্য। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের তথ্যকে হাতিয়ার করে সিপিএমের বক্তব্য, ২০১৭-র জুলাই থেকে ২০২৪ পর্যন্ত রাজ্যে মাত্র ৩১ হাজার কোটি টাকার বেসরকারি বিনিয়োগ রূপায়িত হয়েছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রের একটি সমীক্ষার নিরিখে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে মাথা পিছু মাস-খরচের হিসাবে দেশের ১৮টি বড় রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে ১৩তম স্থানে। ধান, খাদ্যশস্য এবং মৎস্য উৎপাদনে রাজ্যের হাল নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে সিপিএমের নথিতে।
এই সূত্র ধরেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য, “বাম আমলের শেষ দিকে রাজ্যের যে আর্থিক উন্নতি ঘটেছিল, এখন তার উল্টো পরিস্থিতি। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণের দাবি করলেও বাস্তবে আর্থিক অবক্ষয় ঘটেছে।” যদিও তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, “এই সবই মিথ্যাচার। ওঁদের বাজেটগুলো ছিল ঠাকুরমার ঝুলি! অল্প লোকের গল্প-কথা। ওঁরা রাজ্যটাকে ডুবিয়েছেন। তাই আজ শূন্য।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)