রাজ্য জুড়ে যাবতীয় বিতর্ক এখন ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনকে (এসআইআর) ঘিরে। এই শোরগোলের মধ্যে জনজীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য প্রশ্ন যাতে হারিয়ে না যায়, সে দিকে নজর রেখে এসআইআর চলাকালীনই ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’য় নামছে সিপিএম। যাত্রা শেষে কলকাতা সংলগ্ন উত্তর ২৪ পরগনায় সমাবেশেরও পরিকল্পনা নিয়েছে তারা। দলের তরফে আজ, বৃহস্পতিবার এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করার কথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের।
সিপিএম সূত্রের খবর, নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে সপ্তাহতিনেক ধরে ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’ চলবে। বিভিন্ন জেলা ঘুরে ওই যাত্রা এগোবে। সময় ও অন্যান্য সমস্যার কারণে যেখানে মূল যাত্রা নিয়ে যাওয়া হবে না, সেখানে উপযাত্রা হবে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের বেহাল দশা, কর্মসংস্থানের অভাব, নানা ক্ষেত্রে দুর্নীতি-সহ রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে সামনে রেখে যাত্রা এগোবে। তারই পাশাপাশি, যে অঞ্চল দিয়ে যাত্রা যাবেস সেখানকার স্থানীয় প্রশ্নকেও তুলে আনা হবে যাত্রায়। ওই কর্মসূচির জন্য জেলাভিত্তিক দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে সংগঠনে। সিপিএমের স্থানীয় নেতৃত্ব নানা জায়গায় যাত্রার সঙ্গে জুড়ে থাকবেন। এসআইআর চলাকালীনই এই যাত্রা চালিয়ে বিধানসভা ভোটের আগে সংগঠকে সচল রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে সিপিএম।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে অক্টোবরের শেষে সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকেই ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছিল। তার পরে আরও বিশদে পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। তবে এসআইআর-এর সময়ে বুথভিত্তিক দায়িত্ব থেকে নেতা-কর্মীদের নজর যাতে সরে না যায়, সে দিকেও খেয়াল রাখতে বলা হচ্ছে দলের জেলা নেতৃত্বকে। সিপিএম সূত্রের খবর, ভোটার তালিকা সংশোধনে বুথ লেভল এজেন্ট (বিএলএ) হওয়ার জন্য দলের কাছে নাম জমা দেওয়ার আগ্রহ বাড়ছে। দফায় দফায় সেই তালিকা পাঠানো হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের কাছে। কিন্তু একই সঙ্গে এসআইআর-এর বুথভিত্তিক কাজ এবং ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’র আয়োজন কি সংগঠনের পক্ষে সম্ভব? সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘ভোটার তালিকার জন্য বুথের নির্দিষ্ট দায়িত্ব সাংগঠনিক ভাবে পালন করতেই হবে। তারই পাশাপাশি রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি মানুষের সামনে তুলে ধরা প্রয়োজন। হাতে সময়ও বেশি নেই। তাই তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির হাত থেকে রাজ্যকে রক্ষা করার ডাক দিয়ে ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’র আয়োজন।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)