প্রতীকী ছবি।
পোশাকি নাম ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী)। কিন্তু বাস্তবে সেই দলের মধ্যে একটা দল এখন বিজেপিবাদী! আরও একটা দল তৃণমূলবাদী! আর এই দু’দলের ধাক্কায় মূল দলটার ভোটের বাক্স দিন দিন ফাঁকা হচ্ছে! এই প্রবণতা উল্লেখ করেই দলের নেতা-কর্মীদের মতাদর্শগত সঙ্কট মেনে নিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। দলের অন্দরে আত্মসমালোচনার সুরেই তাঁর আক্ষেপ, মতাদর্শগত শিক্ষা জোরালো না হলে এই ভ্রান্তিবিলাস থেকে বেরোনোর উপায় কী!
রাজ্যে সাম্প্রতিক সব নির্বাচনে শাসক দল তৃণমূলের জয়যাত্রা অব্যাহত। তাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে আসছে বিজেপি। রাম শিবিরের ভোট যত বাড়ছে, বামের পাল্লা ততই হাল্কা হচ্ছে! আলিমুদ্দিনে সিপিএমের রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিশদ পর্যালোচনা করতে গিয়ে সেই প্রবণতাই ফের স্পষ্ট হয়েছে সূর্যবাবুদের কাছে। দলীয় সূত্রের খবর, সেই কারণেই শুক্রবার রাজ্য কমিটিতে জবাবি ভাষণে রাজ্য সম্পাদক বলেছেন, দলের নেতা-কর্মী বা সমর্থকদের একাংশ মনে করছেন, তৃণমূলের হাতে এত মার খাচ্ছি যখন, বিজেপিকে সমর্থন করলে হয়তো পরিত্রাণ পাওয়া যাবে! আবার অন্য একাংশের ধারণা, বিজেপির বাড়বাড়ন্ত রুখতে তৃণমূলের পিছনে দাঁড়ানোই ভাল। কিন্তু তৃণমূলকে দিয়ে বিজেপি বা বিজেপিকে দিয়ে তৃণমূলের মোকাবিলার ভাবনা যে রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত ভাবে ভুলে ভরা, তা এঁদের কারও মাথায় ঢুকছে না!
ভোটে খারাপ ফলের জন্য তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’কেই প্রকাশ্যে দায়ী করেন সিপিএম নেতারা। রাজ্য কমিটির বৈঠকের পরে প্রশ্নের জবাবে এ দিন কিন্তু সূর্যবাবু বলেছেন, ‘‘বেনজির সন্ত্রাস হচ্ছে, এ কথা ঠিক। কিন্তু সন্ত্রাসটাই একমাত্র কারণ নয়। পঞ্চায়েতের পরে মহেশতলা বিধানসভা বা তার আগে অন্য উপনির্বাচনে সর্বত্র তো সন্ত্রাস ছিল না। সেখানে আমাদের ফল খারাপ হয়েছে। সংগঠনের যে কাজ করা উচিত, তা হচ্ছে না।’’
মেরুকরণ এবং ধর্ম নিয়ে রাজনীতির প্রতিযোগিতায় সাধারণ মানুষের রুটি-রুজির সমস্যার কথা হারিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সূর্যবাবুরা। রাজ্য সম্পাদকের কথায়, ‘‘মেরুকরণ, ধর্মীয় উন্মাদনার মোড়ক ছাড়িয়ে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যা বার করে এনে বহুমাত্রিক আন্দোলন করতে হবে আমাদের। সেই লক্ষ্যেই অগস্ট-সেপ্টেম্বর জুড়ে একগুচ্ছ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সিপিএম। যার মধ্যে ধর্না, অবস্থান, বিক্ষোভ, জেল ভরো থেকে জাঠা— সবই আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy