Advertisement
E-Paper

লাইনে ফাটল! শৌচকর্ম ফেলে লাল শার্ট দেখিয়ে থামালেন ট্রেন

সাতসকালে রেললাইনের ধারে শৌচকর্ম করতে গিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনের গড়গড়িয়া গ্রামের অনন্ত জানা। তখনই লাইনের মাঝে বড়সড় ফাটলটি তাঁর নজরে আসে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ট্রেনের শব্দ পান অনন্তবাবু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৭ ০৪:৩২
লাইনে ফাটল। —নিজস্ব চিত্র

লাইনে ফাটল। —নিজস্ব চিত্র

সাতসকালে রেললাইনের ধারে শৌচকর্ম করতে গিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনের গড়গড়িয়া গ্রামের অনন্ত জানা। তখনই লাইনের মাঝে বড়সড় ফাটলটি তাঁর নজরে আসে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ট্রেনের শব্দ পান অনন্তবাবু। তাঁর পরনে ছিল লাল টি-শার্ট। তাই আর কিছু না ভেবে ওই টি-শার্ট খুলে ট্রেনের দিকে ছুটে যান তিনি।

মাঝবয়সী ওই ব্যক্তির তৎপরতাই মঙ্গলবার বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচাল ডাউন পারাদ্বীপ-সাঁতরাগাছি সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসকে। এ দিন ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে অনন্তবাবুকে লাইন দিয়ে লাল টি-শার্ট হাতে ছুটে আসতে দেখে খড়্গপুর ডিভিশনের ওড়িশার লক্ষ্মণনাথ রোড ও দাঁতনের আঙ্গুয়া স্টেশনের মাঝে গড়গড়িয়ার কাছে ট্রেনটি থামিয়ে দেন চালক। চাষবাস করে দিন গুজরান করা অনন্তবাবু বলছিলেন, “এতগুলো মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পেরে ভাল লাগছে। ট্রেনের যাত্রীরা অনেকে মোবাইল ক্যামেরায় আমার ছবিও তুলেছেন।”

অনন্তবাবু যে দুর্ঘটনা রুখেছেন, তা অবশ্য রেল কর্তৃপক্ষ জানেন না। রেল সূত্রে খবর, স্থানীয় বাসিন্দা তথা ওড়িশার জলেশ্বরে লাইন মেরামতির কাজে নিযুক্ত গাংম্যান সুপারভাইজার পরশুরাম বেহেরা এ দিন ওই ফাটল পরীক্ষা করে দাঁতনে রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আধিকারিক পাহেলবান সহায় মিনাকে খবর দেন। দাঁতন থেকে ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল এসে লাইন মেরামত করে। তারপর ৬টা ২৫মিনিটে ট্রেনটি ছাড়ে। পাহেলবানের কথায়, “পরশুরামই ট্রেন দাঁড় করিয়েছিল বলে শুনেছি। তারপরে আমরা ২০ মিনিটের মধ্যে লাইনের ফাটল পাত দিয়ে বেঁধে মেরামত করে দিই।” পরশুরামেরও দাবি, “লাইনের পাশ দিয়ে হেঁটে লক্ষ্মণনাথ রোড স্টেশনে যাওয়ার সময় ফাটল দেখে রেলের ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের দাঁতনের আধিকারিককে জানিয়েছিলাম।” তবে খড়্গপুরের ডিআরএম রাজকুমার মঙ্গলার বক্তব্য, “কে ট্রেন দাঁড় করিয়েছিল আমার জানা নেই।”

ট্রেন যাত্রীরা অবশ্য অনন্তবাবুকেই কুর্নিশ করছেন। ওই ট্রেনে কটক থেকে খড়্গপুরে আসা জয়দীপ নন্দী বলেন, “ওই ব্যক্তি নিজের লাল টি-শার্ট দেখিয়ে ট্রেন দাঁড় না করালে বড় বিপদ হয়ে যেত।” একের পর এক দুর্ঘটনার পরেও লাইনের রক্ষণাবেক্ষণে রেল কেন উদাসীন, যাত্রীরা সেই প্রশ্নও তুলেছেন। গত ৯ এপ্রিল খড়্গপুর-জকপুরের মাঝে বেলাইন হয়েছিল মালগাড়ি। তখনও লাইন রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ার ছবিই সামনে এসেছিল।

সূত্রে খবর, এ দিন যে অংশে ফাটল ধরা পড়েছে, সেখানে ওয়েল্ডিং করা ছিল। তার উপর লাইনের সঙ্কোচন-প্রসারণ আর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই ফাটল দেখা গিয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। খড়্গপুরের ডিআরএম রাজকুমার মঙ্গলা বলেন, “ঠিক কী কারণে ফাটল হয়েছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

Railway Tracks Stool
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy