Advertisement
E-Paper

ছিঁড়েছে জাল, বাঘ আটকাতে চলছে মেরামতি

ঝড়ের পর থেকে টানা কাজ করে সেই নাইলনের বেড়া মেরামতির চেষ্টা করছেন বনকর্মীরা।

প্রসেনজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২০ ০২:৪৯
জোরকদমে: ছেঁড়া নাইলনের জাল সারানোর কাজ চলছে সুন্দরবনে। শনিবার। ছবি বন দফতরের সৌজন্যে

জোরকদমে: ছেঁড়া নাইলনের জাল সারানোর কাজ চলছে সুন্দরবনে। শনিবার। ছবি বন দফতরের সৌজন্যে

আমপানের দাপটে সুন্দরবনে বহু জায়গায় ছিঁড়েছে নাইলনের জাল। ওই জাল দিয়ে ঘেরা থাকে জঙ্গল। বাঘের আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখতেই এই ব্যবস্থা। কিন্তু ঝড়ে ক্ষতি হয়েছে সেই সুরক্ষা-বেড়ার।

এই পরিস্থিতিতে কার্যত ঘুম ছুটেছে বন দফতরের আধিকারিকদের। ঝড়ের পর থেকে টানা কাজ করে সেই নাইলনের বেড়া মেরামতির চেষ্টা করছেন বনকর্মীরা। এক বুক জল, কাদায় দাঁড়িয়ে কাজ করতে হচ্ছে বনকর্মীদের। নাইলন ফেন্সিংয়ের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সজনেখালি, সুধন্যখালি, খাটোয়াঝুড়ি-সহ বিভিন্ন এলাকায় থাকা বন দফতরের বেশ কিছু ক্যাম্প অফিস, বিট অফিস ও রেঞ্জ অফিসেরও। বড় বড় গাছ উপড়ে পড়েছে রেঞ্জ অফিসগুলিতে। অফিসের ছাউনি থেকে শুরু করে দরজা, জানলা সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে প্রাথমিক ভাবে তৎপরতার সঙ্গে জঙ্গলের চারদিকে দেওয়া নাইলনের বেড়া মেরামতির কাজ চালাচ্ছেন বনকর্মীরা।

আগে মাঝেমধ্যেই জঙ্গল থেকে লোকালয়ে বাঘ চলে আসার ঘটনা ঘটত। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সুন্দরবনের জঙ্গলগুলিকে নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়ায় সেই প্রবণতা অনেকটাই কমেছে বলে বন দফতরের দাবি। প্রথমে ছ’ফুট উচ্চতার নাইলন ফেন্সিং থাকলেও পড়ে তার উচ্চতা বাড়িয়ে দশ ফুট করা হয়। আর এতেই লোকালয়ে বাঘের আনাগোনা কমেছে।

আরও পড়ুন: বিধি মেনেই দরজা খুলতে চায় অধিকাংশ ধর্মস্থান

কিন্তু মাস ছ’য়েক আগে বুলবুল ঘূর্ণিঝড় এই নাইলনের বেড়ার ক্ষতি করেছিল। সেই বেড়া পরে মেরামত করা সম্ভব হলেও আমপানে ফের বহু এলাকার নাইলনের বেড়াকে কার্যত ধ্বংস করে দেয়। ঝড়ের দাপটে বহু মানুষ এই সময়ে এমনিতেই ঘর ছাড়া।

এখন জঙ্গল থেকে বাঘ বেরিয়ে লোকালয়ে চলে এলে বিপদ আরও বাড়তে পারে। সে কারণেই প্রতিদিন সূর্যের আলো ফোটা থেকে শুরু করে সন্ধ্যা নামার আগে পর্যন্ত নাইলনের বেড়া মেরামতির কাজ করছেন বনকর্মীরা। বোটে করে দিনরাত জঙ্গলের চারপাশে নজরদারিও চালাচ্ছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: লকডাউন যৌক্তিক, কিন্তু ধাপে ধাপে তোলার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

বন দফতর সূত্রের খবর, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের আওতাধীন প্রায় ১০৭ কিলোমিটার এলাকায় নাইলন ফেন্সিং রয়েছে। এর মধ্যে ৪০ শতাংশের বেশি এলাকার নাইলনের বেড়া ঝড়ের দাপটে ছিঁড়ে গিয়েছে। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প-সহ ক্ষেত্র অধিকর্তা অনিন্দ্য গুহঠাকুরতা বলেন, “আমাদের কর্মীরা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও খুবই তৎপরতার সঙ্গে জঙ্গলের ক্ষতিগ্রস্ত নাইলন নেট সারাইয়ের কাজ করছেন।’’

ইতিমধ্যেই আড়াইশোর বেশি বনকর্মী ও যৌথ বন পরিচালন কমিটির সদস্যদের এ কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধিকর্তা সুধীরচন্দ্র দাস বলেন, “কয়েক দিনের মধ্যেই নাইলনের বেড়া মেরামতের কাজ শেষ হয়ে যাবে। তবে ক্যাম্প বা বিট অফিসগুলিকে সারাই করে আগের অবস্থায় আনতে কিছু দিন সময় লাগবে।’’

নাইলনের বেড়ার কাজ করার সময়ে বেশ কয়েক জায়গায় জঙ্গলের মধ্যে বাঘ, হরিণ, বুনো শুয়োর-সহ বন্যপ্রাণীদের দেখা পেয়েছেন বনকর্মীরা। যা দেখে কার্যত আশ্বস্ত তাঁরা। প্রবল ঝড়ের মধ্যেও বন্যপ্রাণীরা সুরক্ষিত রয়েছে বলেই দাবি তাঁদের। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর দীপক এম বলেন, “নাইলনের নেট ও ক্যাম্পাসের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ঠিকই, তবে এখনও পর্যন্ত বন্যপ্রাণীদের ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর মেলেনি।’’

Cyclone Amphan Cyclone Sundarbans
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy