Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Darjeeling

রাশ বিনয়ের হাতেই, আশ্বাস মিলল নবান্নের

এত দিন বিমল গুরুংয়ের সহযোগী ছিল বিজেপি।

বিনয় তামাংদের সঙ্গে আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে। নিজস্ব চিত্র

বিনয় তামাংদের সঙ্গে আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৫৭
Share: Save:

বিমল গুরুংয়ের প্রত্যাবর্তনে যে চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল বিনয় তামাং শিবিরে, মঙ্গলবার নবান্নের বৈঠকে তার অনেকটাই সামাল দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বিনয়দের অনেকগুলি দাবিই মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেন। কিছু বিষয়ে মুখ্যসচিবকে দেখতেও বললেন। পর্যবেক্ষকদের মতে, এর ফলে পাহাড়ের প্রশাসনে বিনয়দের ক্ষমতা অনেকটাই বেড়ে যাবে।

সূত্রের খবর, একই সঙ্গে এ দিনের বৈঠকে বিনয়-অনীতদের জানিয়ে দেওয়া হয়, পাহাড়ে প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা তাঁদের হাতেই থাকবে। বলা হয়, বিমল গুরুং, রোশন গিরিকে নিয়ে তাঁদের ভাবতে হবে না। আধ ঘণ্টার এই বৈঠকের পরে দৃশ্যতই খুশি বিনয় ও অনীত সাংবাদিকদের জানান, তাঁরা আবেদন করেছেন যাতে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে জিটিএ-র সমন্বয় আরও মসৃণ হয়। উল্টো দিকে, মুখ্যমন্ত্রী জোর দিয়েছেন পাহাড়ের শান্তি বজায় রাখার উপরে।

এ দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এবং বিনয়-অনীত ছাড়াও হাজির ছিলেন দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও ফিরহাদ হাকিম, মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জিটিএ-র প্রধান সচিব সুরেন্দ্র গুপ্ত। গত ২১ অক্টোবর সল্টলেকের যে গোর্খাভবনে গুরুং ঢুকতে পারেননি, এ দিন নবান্নে বৈঠকের পরে সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিনয় প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কে বিমল গুরুং?’’ এ দিন পাহাড়ে গুরুংপন্থীদের সভার প্রসঙ্গ উঠতে তিনি বলেন, ‘‘ওঁদের ওখানে কত জন লোক ছিল? দুশো? দার্জিলিঙে আমাদের কুড়ি হাজারেরও বেশি লোকের মিছিল হয়েছে।’’ বিনয়ের কথায়, ‘‘বিমল তো ফেরার। আমার নামে মামলা থাকতে পারে, আমি কিন্তু আদালতে গিয়ে হাজিরা দিই। উনি দেন না। বিমল গুরুং তাই পাহাড়ে ‘ক্লোজ়ড চ্যাপ্টার’।’’ জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত বলেছেন, ‘‘গোর্খাল্যান্ড আমাদের মা। এত দিন একদল নেতা একে নিলাম করে ভোট করেছে। আমরা তা করব না। উন্নয়ন, কাজকে রেখেই ভোট হবে।’’

আরও পড়ুন: আজ রাজ্যে অমিত শাহ, দরবারে কি উঠবে ৩৫৬​

আরও পড়ুন: বাগডোগরায় ডিএম, সিপি-র সঙ্গে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী​

এত দিন বিমল গুরুংয়ের সহযোগী ছিল বিজেপি। এ দিনের বৈঠক নিয়ে রাজ্যে বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘‘নিজের চেয়ার দখলের রাজনীতি করছেন মমতা। পাহাড়ে দু’পক্ষকে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়িয়ে রাখছেন।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “যাঁদের অত্যাচারে লোক পাহাড়ছাড়া হয়েছে, যাঁরা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় অভিযুক্ত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এত দুর্দশা যে, তাঁদের নেতা বানিয়েছেন। তাঁদের হাত ধরেই পাহাড়ে উঠতে হচ্ছে।’’ কিন্তু এত দিন তো বিজেপির সর্বভারতীয় শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ওঠাবসা ছিল গুরুংয়ের? এই প্রশ্নের জবাবে দিলীপবাবু ব্যাখ্যা দেন, ‘‘আমরা তো বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে ইউএপিএ প্রয়োগ করিনি। আমরা বলেছিলাম, অন্যায় বাবে গুরুংকে মিথ্যে মামলা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যিনি গুরুংকে ইউএপিএ দিয়েছিলেন, তিনিই এখন তাঁর সঙ্গে বৈঠক করছেন।’’ এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তৃণমূল নেতৃত্ব এ দিন কিছু বলতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE