এ রাজ্যে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে মামলায় প্রথম রায় ঘোষণার কথা ছিল মঙ্গলবার। সেই রায়দান পিছিয়ে গেল।
মঙ্গলবার ধৃত মাওবাদী মুখপাত্র গৌর চক্রবর্তীর রায়দান ছিল। এ দিনের পরিবর্তে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি নগর দায়রা আদালতে এই রায় ঘোষণা করা হবে। মঙ্গলবার নগর দায়রা আদালতে অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারক সঞ্চিতা সরকারের এজলাসে গৌরবাবুর রায় ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু রায় তৈরি না হওয়ায় এ দিন বিচারক রায় দেননি।
এ দিন সরকারি আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায় ও দেবাশিস মল্লিক চৌধুরী বলেন, ‘‘এ দিন গৌরবাবুর আদালতে রায়দান ছিল। কিন্তু জাজমেন্ট তৈরি না হওয়ায় এই রায় পিছিয়ে গিয়েছে। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি এই রায় দেওয়া হবে।’’
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পুলিশের কালো ভ্যানে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে নগর দায়রা আদালতে এই মাওবাদী মুখপাত্রকে নিয়ে আসা হয়। তাঁর পরনে ছিল ঘি রংয়ের ফুলহাতা শার্ট। কালো প্যান্ট। তাঁকে রাখা হয় কোর্ট লকআপে। সেখান থেকে প্রায় ১২টা নাগাদ তাঁকে আনা হয় বিচারকের এজলাসে। বিচারক এ দিন কোনও রায় দেবেন না জানার পরে ফের তাঁকে বাইরে এনে তোলা হয় পুলিশের গাড়িতে। সে সময় তিনি বাইরে উপস্থিত তাঁর আত্মীয়স্বজন এবং সংবাদপত্রের কয়েক জন প্রতিনিধির দিকে হাত নাড়েন। তিনি বলেন, ‘‘আমি ভাল আছি।’’
আদালত সূত্রে খবর, গৌরবাবুর বাড়ি নদিয়ার মদনপুরে। ২০০৯-এর জুন মাসে কলকাতায় একটি বেসরকারি সংবাদ চ্যানেলের অফিসের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। তিনি ওই সংবাদ চ্যানেলে তাঁর বক্তব্য পেশ করছিলেন। বক্তব্য শেষ করে বাইরে বেরনোর সময়েই তাঁকে পুলিশ বেআইনি কার্যকলাপ নিরোধক আইনের (ইউপিএ) ২০ নম্বর ধারায় তাঁকে গ্রেফতার করে। দেবাশিসবাবু জানান, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে গৌরবাবুর যোগাযোগ থাকার অভিযোগে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানায়, যে দিন সন্ধ্যায় গৌরবাবু টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন, তার আগের দিন (২২ জুন) বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে (ইউপিএ) সিপিআই(মাওবাদী)-কে ‘নিষিদ্ধ’ তালিকাভুক্ত করে কেন্দ্রীয় সরকার। নিষিদ্ধ সংগঠনের মুখপাত্র হিসেবে সাক্ষাৎকার দিতে দেখে গৌরবাবুকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে গ্রেফতার করে শেক্সপিয়র থানার পুলিশ। পরে গৌরবাবুর বাড়ি মদনপুর থেকে মাওবাদী প্রচারপত্র ও পুস্তিকা বাজেয়াপ্ত করা হয় বলেও পুলিশ জানিয়েছে।
ইউপিএ-র মতো কঠোর আইন প্রয়োগে বিধিভঙ্গের অভিযোগেই সব চেয়ে বেশি সরগরম হয়েছে সওয়াল পর্ব। ইউএপিএ-তে মামলা রুজু করতে গেলে নির্দিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষের আগাম অনুমতি বাধ্যতামূলক। সেই মামলায় তদানীন্তন স্বরাষ্ট্রসচিব অর্ধেন্দু সেন একটি অনুমতি আদালতে পেশ করেন। তবে এই ব্যাপারে তাঁর আদৌ এক্তিয়ার ছিল কি না সে ব্যাপারে তিনি কিছু জানাতে পারেননি। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে রাজ্য সরকারকে জানাতে হবে এই এক্তিয়ার কাকে দেওয়া হয়েছে। প্রথমে এই মামলা ব্যাঙ্কশাল কোর্টের প্রথম অতিরিক্ত নগর দায়রা আদালতে ছিল। পরে তা স্থানান্তরিত করা হয় দ্বিতীয় অতিরিক্ত নগর দায়রা আদালতে।
এর পর, পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে। তাঁর মামলা প্রথমে ব্যঙ্কশাল কোর্টের প্রথম অতিরিক্ত জেলা জজের এজলাসে ছিল। পরে সেখান থেকে এই মামলা দ্বিতীয় জেলা জজের এজলাসে স্থানান্তরিত করা হয়। গৌরবাবুর আইনজীবী শুভাশিস রায় বলেন, ‘‘গৌরবাবুর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ এখনও পর্ষন্ত প্রমাণ করা যায়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy